Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্ধ হওয়া পশুরহাট হবে শিশুপার্ক

প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে

নানা প্রতিকূলতার ফাঁদে পড়ে কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভার মেমনগরে অবস্থিত পৌর পশুরহাটটি বন্ধ হয়ে গেছে। অযতেœ অবহেলায় মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে হাটটির স্থাপনাগুলো। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে হাট শেডে দিনরাত চলে মাদক সেবনসহ নানারকম অসামাজিক কার্যকলাপ। তাই অবশেষে বন্ধ হয়ে যাওয়া হাটটি তুলে দিয়ে ওই স্থানে শিশুপার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরকর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, ২০০০সালের দিকে এলাকার মানুষের গৃহপালিত গবাদি পশু-পাখি বেচাকেনার সুবিধার্থে দর্শনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার ঐতিহ্যবাহী মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ দিকের প্রাচীর ঘেঁসে মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে ২একর জমি জুড়ে একটি পশুহাট স্থাপন করে। হাটটিতে পশু-পাখি বেচাকেনার পাশাপাশি কাঁচাবাজার তথা এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বেচাকেনার সুবিধার্থে এর ভৌত অবকাঠামো ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে ২০০১ সালের দিকে এখানে উপজেলা হাট-বাজার উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩টি আধুনিক সেমিপাকা শেড নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালে হাটটির দক্ষিণাংশে বিএমডিএফ-এর অর্থায়নে ১৭ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে আরও একটি শেড নির্মাণ করা হয়। চালু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই হাটটি এলাকায় গো-হাট হিসাবে পরিচিতি লাভ করে এবং এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগে। কিন্তু হাটটির নিকটবর্তী এলাকায় ডুগডুগী ও শিয়ালমারিতে পৃথক দুইটি পুরাতন পশুহাটের অবস্থান ও সেইসাথে ভারত থেকে বিভিন্ন্ সীমান্তপথে গরু আসা বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ নানা প্রতিকূলতার ফাঁদে পড়ে দৃষ্টিনন্দন ভৌত অবকাঠামোসম্পন্ন এ হাটটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে পৌরসভার পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে হাটটি আবারও চালু করা হলে সংশ্লিষ্টদের নানা অনিয়মের কারণে পুনরায় চালু হওয়া হাটটি আবারও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে হাটটির কোন কার্যক্রম না থাকায় অবকাঠামোগুলো এখন মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। সন্ধ্যা হলেই সেখানে বসে নেশাখোরদের আখড়া। সেইসাথে চলে নানা প্রকার অসামাজিক কার্যকলাপ। হাটের একটি শেড বর্তমানে পৌর পশু জবেহখানা হিসাবে ব্যবহার হয়। হাটের উত্তরে অবস্থিত মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান হওয়ায় জবেহখানার রক্ত ও মল-মুত্রের দুর্গন্ধে স্কুলের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দুষিত হচ্ছে। ফলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর। এ ব্যাপারে দর্শনা পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতার কারণে হাটটি বন্ধ হয়ে গেছে। দেখা গেছে, মূলত মেইন রোডের পাশে না হলে পশুহাট চলবে না। সেইসাথে দর্শনা পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি তাদের ছেলেমেয়েদের চিত্তবিনোদনের জন্য একটি শিশুপার্কের। যেহেতু বন্ধ হয়ে যাওয়া পৌরপশু হাটের জায়গাটি নদীর ধারে এবং মনোরম সুন্দর পরিবেশে অবস্থিত। তাই পশুহাট তুলে দিয়ে ওই স্থানে শিশুপার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা হাটটির স্থলে শিশুপার্ক করা হলে এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য বিনোদনের একটি জায়গা তৈরি হবে যা তাদের মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্ধ হওয়া পশুরহাট হবে শিশুপার্ক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ