পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নেত্রকোনার সঙ্গে ময়মনসিংহের গৌরীপুর হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নতুন আঞ্চলিক সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। তবে সড়কের মাঝখানে প্রায় দেড় শতাধিক বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই এই সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণে জন্য একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হলেও খুঁটিগুলো অপসারণের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে সড়ক কর্মকর্তাদের নির্দেশে খুঁটি রেখেই কাজ করছেন বলে জানান ঠিকাদারের প্রতিনিধি। অপরদিকে পিডিবি বলছে, সড়ক বিভাগ সাড়া না দেওয়ায় খুঁটি সরানো সম্ভব হচ্ছে না।
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজের জনসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন সড়ক নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তারপর নেত্রকোনা সদর থেকে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের একাংশ হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয়। সড়কের মাঝে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের দেড়শ’রও বেশি খুঁটি রয়েছে। সরকারের সড়ক বিভাগ এই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে, তারা সেগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সেগুলো সড়ক থেকে সড়ানো বিরত রয়েছে বলে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা এই অভিযোগ করেছেন। যার ফলে যানবাহন চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সড়কের ঠিকাদার হোসেন আহমেদ পান্না জানান, সড়কের মাঝখানের বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণের জন্য নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে একাধিকবার আবেদনের পাশাপাশি মৌখিকভাবে অবগত করা হলেও এখন পর্যন্ত খুঁটিগুলো অপসারণ করা হয়নি। এদিকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সড়কের কাজ সম্পন্ন করতে বাধ্য হয়ে সড়কে খুঁটি রেখেই নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এ নির্মাণাধীন সড়কের মাঝখানে প্রায় দেড় শতাধিক পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি’র বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই কাজ সম্পন্ন করতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রাস্তা ঘেঁষে রয়েছে আরও অনেক খুঁটি। এসব খুঁটি অপসারণ না করে সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করলে প্রতিনিয়িত মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্ভবনা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী আকবর দৈনিক ইনকিলাব বলেন, সড়কে যানবাহন ও লোকজনের চলাচলের জন্য যেমন আমাদের সড়ক প্রয়োজন, তেমনি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সঞ্চালন লাইন ও তার খুঁটি স্থাপনেরও প্রয়োজন হয়। কিন্তু সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করার আগেই খুঁটিগুলো সরিয়ে অন্য কোথায় স্থাপন করা হলে এখন আর কোন সমস্যা হতো না বলে জানান। গাড়ি চালক বশির উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখে সড়কের বেশির ভাগ কার্পেটিংয়ের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করা হয়েছে। কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটি না সরানোয় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। একই অভিযোগ করেন কেফায়েত নামের অপর সিএনজি চালক।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল ইসলাম জানান, এ নির্মাণাধীন সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দ্রুত অপসারণের জন্য নেত্রকোনা পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে কাজের জন্য সার্বিক ব্যয়ের টাকাও পরিশোধ করা হয়। এছাড়াও ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকেও খুঁটি অপসারণ বাবদ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ পিডিবিকে এজন্য এখনো কোনো টাকা পরিশোধ করা হয়নি। তিনি জানান, যাদেরকে খুঁটি অপসারণের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে তারা সেই কাজ এখনো করেনি। এখন তাদের কাছেও জানতে চান কেন তারা খুঁটিগুলো অপসারণ করছে না। এতে সড়ক নির্মাণ কাজে স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩’র জেনারেল ম্যানেজার খন্দকার শামীম আলম জানান, সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে খুঁটি অপসারণের জন্য কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্রুততর সময়ের মধ্যে সড়কের বিদ্যুতের খুঁটিগুলো অপসারণ করা হবে।
উল্লেখ্য, সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা বৈদ্যুতিক পোলসহ সব ধরনের খুঁটি ৬০ দিনের মধ্যে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৯ সালের প্রথমদিকে এই আদেশ দেওয়ার দুই বছর পরও এই আদেশের কার্যকর করেনি বিদু্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষ। অথচ হাইকোটের নির্দেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। আদেশ বাস্তবায়নে বিবাদীদের সহযোগিতা করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কে থাকা বৈদুতিক খুঁটিসহ সব ধরনের বিপজ্জনক খুঁটি চিহ্নিত করে অপসারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিল আদালত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।