পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
শেয়ারবাজারে বিদেশি ও প্রবাসীদের বিনিয়োগ বাড়াতে চায় সরকার। এই জন্য বিদেশে রোড শো করবে নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রথম ধাপে আগামী ৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চারদিন ব্যাপী এ রোড শো করা হবে। এবারের প্রোগ্রামের নাম দেয়া হয়েছে ‘রাইজিং অব বেঙ্গল টাইগার পটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’। মঙ্গলবার (২ ফেব্রæয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুর রহমান এবং মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে শেয়ারবাজার শক্তিশালী হয়। কিন্তু তালিকাভুক্তির জন্য কর ছাড় দেয়া উচিত। প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে তাদের রুলস রেগুলেশনের মানতে ২ থেকে ৩ শতাংশ আরও খরচ বেড়ে যাবে। এতে তারা তালিকাভুক্তির আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর টাকার প্রয়োজন হয় না। কারণ তাদের অতিরিক্ত অর্থ রয়েছে। যে কারণে তাদের কিছু প্রণোদনা দিতে হয়। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় কর ছাড়। বর্তমানে শেয়ারবাজারে এবং বাইরে কোম্পানির কর্পোরেট করের ব্যবধান সাড়ে ৭ শতাংশ। এতে বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্তির আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ফলে এই ব্যবধান ১৫ শতাংশ করা হলে তারা তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহী হবে।
দুবাইয়ের অনুষ্ঠানের ব্যাপারে শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, এই আয়োজনকে রোড শো বলা হচ্ছে। কিন্তু এটি সচরাচর ঘটে যাওয়া রোড শো’র মতো নয়। এবারের অনুষ্ঠানে বিদেশী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে কিছু বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ৪ দিনের এই অনুষ্ঠানে থাকছে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন এবং বিশেষ কিছু আকর্ষণ। এরমধ্যে অনিবাসী বাংলাদেশি, সুকুক বা ইসলামিক বন্ডে আগ্রহী, এঞ্জেল ইনভেষ্টর, ভেনচার ক্যাপিটালিস্টসহ বিভিন্ন সেক্টর থেকে আগত অতিথিদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন। এছাড়া লন্ডন, রোম, টরেন্ট, হংকং, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, টোকিও, মালয়শিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত শহরে ভবিষ্যতে এই আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা হয়ে উঠছে না। তবে দুবাইয়ের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। তাই দুবাই দিয়েই এই আয়োজনের সূচনা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুবাই মলের কাছে স্কাই ভিউ হোটেলে এই রোড শো অনুষ্ঠিত হবে। বিএসইসির চেয়ারম্যানে নেতৃত্বে কমিশনার ও নির্বাহী পরিচালক, দুই স্টক এক্সচেঞ্জ, সিএসইসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। রোডশোতে মোট পাঁচটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারগুলোতে বিএসইসির চেয়ারম্যানসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন। ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রবাসীদের নিয়ে ইনভেস্টর সামিট: বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট অনুষ্ঠিত হবে। দুপুরে একই বিষয়ে সেমিনার হবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে। ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে সুকুক: দ্যা নিউ ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটি ইন বাংলাদেশ শিরোনামে একটি সেমিনার হবে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা অংশ নেবে। ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে স্কোপ অব প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যান্ড ভেনচার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ শিরোনামে একটি সেমিনার হবে। এখানেও অংশ নেবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। ১২ ফেব্রæয়ারি দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠক। এখানে বিনিয়োগকারীদের ছোট ছোট গ্রæপ অংশ নেবে।
অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, বাংলাদেশের ইকোনমিক গ্রোথ খুবই ভালো। দেশের ইকোনমিক গ্রোথের সঙ্গে আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট পিছিয়ে আছে। বিভিন্ন দেশের ইকোনমিক গ্রোথের সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপ করে এবং ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে মূলত লংটার্ম ফাইন্যান্সিং হয়ে থাকে।
মাহবুব আলম বলেন, ফাইন্যান্সিংয়ের জন্য দেশি বিনিয়োগ বাড়ছে তবে বিদেশি বিনিয়োগটা কম হচ্ছে। কারণ এখানে আমাদের যারা এনআরবিরা আছেন বিদেশে, আপনারা জানেন আমাদের ইদানিং রেমিট্যান্স বেড়েছে করোনার পরেও। আর করোনা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশে ইকোনমি কিন্তু অনেক ক্রাইসিস আছে। ইনভেস্টমেন্ট বা রিটার্ন ইনভেস্টমেন্ট অনেক দেশে নেগেটিভ হয়ে গেছে। কাজেই ফরেন ইনভেস্টররা বাংলাদেশের প্রতি ইন্টারেস্টেড। বাংলাদেশ কিন্তু করোনার পরে অনেক তাড়াতাড়ি এটাকে রিকভারি করেছে এবং আমরা আবার গ্রোথ স্টেজে চলে গেছি। আমাদের রিটার্ন ইনভেস্টমেন্ট সেটাও কিন্তু ভালো।
বিএসইসির এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের দেশে যে ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্ট হচ্ছে, ব্যাপক কাজ চলছে। এই প্রজেক্ট এবং বিভিন্ন লংটার্ম প্রজেক্ট যেগুলো আছে সেগুলোতে ফাইন্যান্সিংয়ের জন্য আমাদের এখান থেকে এখন, বাংলাদেশে যেটা হয়ে থাকে সেটা মূলত এতদিন ব্যাংকিং সেক্টরের এবং গভর্নমেন্ট সেক্টর কিছু বৈদেশিক সাহায্য নেয়। বেসিক্যালি কিন্তু লোন ওপেন বাজার থেকে এই ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এই যে হিউজ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট এবং জিডিপিতে বরাদ্দ এটা কিন্তু শুধুমাত্র রেভিনিউ বাজেট দিয়ে কিন্তু বেশিদিন চলতে পারে না। পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টর যেভাবে ডেভলপ করছে আমাদের দেশে এই প্রাইভেট সেক্টরে যে ফাইন্যান্সিং সেটা কিন্তু ব্যাংকিং সেক্টর আর সাপ্লাই দিতে পারছে না। ব্যাংকিং সেক্টর সিক হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।
মাহবুব আলম বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটের গ্রোথ গত কয়েক মাসে অনেক ভালো। সুতরাং এখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এবং আমাদের যারা এনআরবিরা আছেন তারা শো করছেন। আমাদের কাজ হচ্ছে তাদের এই আগ্রহটা কাজে লাগানো। তাদের সামনে আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটকে তুলে ধরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।