পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ওভার ইনভয়েস-আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বছরে পাচার হচ্ছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা পাচার করছেন গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গ। দেশি-বিদেশি গবেষণায় উঠে আসা এ তথ্য ধরেই অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় গতকাল রোববার ‘সন্দেহভাজন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি মালিক’দের তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। সংস্থার উপ-পরিচালক বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের টিম বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। সহকারী পরিচালক আতাউল কবির এবং বজলুর রশিদ টিমের অপর দুই সদস্য।
দুদক সূত্র জানায়, ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) গতবছর ৩ মার্চ অর্থ পাচার সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমেও গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইউ)র আমদানি-রফতানির মাধ্যমে অর্থ পাচারের বিষয়টি শনাক্ত করে। সন্দেহভাজনদের একটি তালিকা দুদকে পাঠায় ব্যবস্থার নেয়ার জন্য। এ প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
জিএফআই’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়। বর্তমান বাজার দরে (৮৫ টাকায় প্রতি ডলার) বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অংক ৬৪ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবেদনে ১৩৫টি উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশের গত ১০ বছরের (২০০৮-২০১৭) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মূল্য ঘোষণার গরমিল দেখিয়ে কীভাবে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়, সেই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে ৩৫টি উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনামূলক চিত্রও উল্লেখ করা হয়েছে। একটি দেশ অন্য দেশের সঙ্গে আমদানি-রফতানি করার সময় প্রকৃত মূল্য না দেখিয়ে কমবেশি (ওভার ইনভয়েস-আন্ডার ইনভয়েস) দেখানো হয়। মূল্য ঘোষণার বাড়তি অংশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দেয়া হয়। এমন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে জিএফআই প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করেছে। বাংলাদেশ বিষয়ে ২০১৪,২০১৬ ও ২০১৭ সালের কোনো তথ্য-উপাত্ত দেয়া হয়নি। মাত্র ৭ বছরের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অর্থ পাচারের হিসাব উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবছরের গড় অর্থ পাচারের হিসাবে ওই ১৩৫টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৩৩তম। এ দেশে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে মূল্য ঘোষণার গরমিল দেখিয়ে টাকা পাচার হয়। প্রাসঙ্গিতকভাবে এমন কিছু ঘটনা উদ্ঘাটনের উদ্ধৃতিও দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য সব দেশের যত আমদানি-রফতানি হয়, তাতে গড়ে ১৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ বা প্রায় ১৮ শতাংশের মূল্য ঘোষণায় গরমিল থাকে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০০৮ সালের পরে বাংলাদেশে এভাবে মূল্য ঘোষণায় গরমিল দেখিয়ে অর্থ পাচারের পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৫১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিদেশে চলে গেছে। ২০০৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ৫২৮ কোটি ডলার। এ ছাড়া ২০০৯ সালে ৪৯০ কোটি ডলার, ২০১০ সালে ৭০৯ কোটি ডলার, ২০১১ সালে ৮০০ কোটি ডলার, ২০১২ সালে ৭১২ কোটি ডলার ও ২০১৩ সালে ৮৮২ কোটি ডলার বিদেশে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরে গড়ে ৩২৯ ডলার ওই সব উন্নত দেশে চলে গেছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫৮ কোটি ডলার। ২০০৮ সালে এভাবে উন্নত দেশে গেছে ২৫৫ কোটি ডলার।
প্রতিবেদন সম্পর্কে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী প্রায় সবার ছেলেমেয়ে বিদেশে থাকে। সন্তানদের নিরাপদ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তরা টাকা সরানোর চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে এ দেশে বিনিয়োগ বা টাকা রাখায় কোনো আস্থা নেই। তিনি বলেন, সুশাসন না থাকলে টাকা পাচার হবেই। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িতরা সমাজের এলিট শ্রেণি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।