বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নরসিংদী পৌরসভার মেয়র, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান কামরুলের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আবু কাউসার নামে এক ব্যক্তি খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যুতা ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে শূন্য থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়াসহ মেয়র কামরুলের উপার্জিত অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন দাখিল করেছেন।
ইতোমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলের বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বাদী আবু কাওসার তার অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল একটি ডাকাতি মামলার আত্মস্বীকৃত আসামি। ডাকাতি করে লুণ্ঠিত মালামালের ভাগ হিসেবে মেয়র কামরুল টাকা নিয়েছে বলে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে উল্লেখ করেছে। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হয়ে পেশিশক্তির বলে মাত্র কয়েক বছরে সে হাজার কোটি টাকা মালিক বনে গেছেন। নরসিংদী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌরসভার সকল টেন্ডার সে নিজেই দখল করে নেয়। সরকারি বিধি অনুযায়ী নির্বাচিত মেয়র কখনোই পৌরসভার কোন ঠিকাদারি করতে পারে না। কিন্তু মেয়র কামরুল পৌরসভার কোটি কোটি টাকার টেন্ডার তার বন্ধু শাহ আলম, সোহেল মোল্লা, শ্যামল সাহা, সুদীপ্ত, জামান, স্বপনের ঠিকাদারী লাইসেন্স এবং ঢাকার বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে একাই দখল করে নিয়েছেন।
নিজেই মেয়র, নিজেই ঠিকাদার, নিজেই তদারককারী, নিজেই কাজের বিলদাতা হয়ে খেয়াল-খুশি মতো কাজ করে কোটি কোটি সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিগত পাঁচ বছর ধরে নরসিংদী পৌরসভায়, পৌরসভা নির্বাহী অফিসার (পিএনও) পদটি শূন্য রেখে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগে সে এক ছাত্র আধিপত্য কায়েম করে সেখানে টেন্ডারবাজি করে কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। সে নরসিংদী শহরে বাহিনী গঠন করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সেটা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শহরে ভূমিদস্যুতা এবং মাদক ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। তার অবৈধ উপার্জনের কিছু অর্থ তার স্ত্রী, শ্যালক, শ্বশুর, ভাই ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের নামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা করে রেখেছেন। কিছু টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া ও লন্ডনে বাড়ি-গাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। থাইল্যান্ড, ঢাকার বসুন্ধরা, ঢাকা ও নরসিংদী বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ফ্লাট ক্রয় করেছেন। লন্ডনের ম্যানচেস্টারে সে একটি বিলাসবহুল হোটেল ব্যবসা চালু করেছেন। নরসিংদী জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, পাসপোর্ট অফিস ও পৌর বাস টার্মিনাল এককভাবে চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। বালুমহাল শিল্প প্রতিষ্ঠান ঝুট ব্যবসা ও চাঁদাবাজি তার একক নিয়ন্ত্রণে। নরসিংদী শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বৈধ, অবৈধ যানবাহন থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনকে দিয়ে।
নরসিংদী শহর থেকে মাধবদী পর্যন্ত রয়েছে তার পরিবহন ব্যবসা। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সে চার কোটি টাকা দিয়ে জায়গা ক্রয় করেছেন। মেয়র কামরুলের মাদক ব্যবসার মূল হোতা ছিল দত্তপাড়ার ইমান আলী। বছর দুয়েক পূর্বে ইমান আলী পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। তার ভূমিদস্যুতার প্রধান হাতিয়ার ছিল সন্ত্রাসী শফিকুল ইসলাম। বছরখানেক পূর্বে সন্ত্রাসী শফিকুল ইসলাম র্যাবের সাথে অ্যানকাউন্টারে নিহত হয়েছে। মেয়র কামরুল বাংলাদেশ রেলওয়ের কয়েক শত কোটি টাকার জমি দখল করে নিয়েছেন। রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের ২টি জলাশয় জোরপূর্বক দখলে নিয়ে বালি ভর্তি করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।