বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাত পোহালেই ৩০ জানুয়ারি স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচন। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তাবলয়ে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে বদ্ধ পরিকর রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তারপরও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অধিকাংশ মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের লোকের পক্ষে কাজ করার জন্য পৌরসভায় বেড়েছে বহিরাগতদের আনাগোনা। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে ট্রলার ভরে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বহিরাগতরা আসছে। বহিরাগতরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডেই গিয়ে ভোটারদের কাছে নানান বিভ্রান্তিমুলক কথা বলছে।
মেয়র প্রার্থী সহকারী অধ্যাপক মাহ্মুদুর রহমান খান স্বতন্ত্র (নির্বাচনী মার্কা মোবাইল ফোন) বলেন, শিক্ষকতা জীবনে অনেক মানুষের ভালবাসা পাচ্ছি। জীবনে কারো উপকার ছাড়া কখনো অপকার করিনি। তাই সেই ভালবাসা নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তার যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে বহিরাগতদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা দলে দলে বিভক্ত হয়ে ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য নানান কথা বলছেন। যেসব কথা সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
স্বরূপকাঠি পৌর যুবলীগের সভাপতি (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থী শিশির কর্মকার(নির্বাচনী মার্কা জগ) তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা হলেও পৌরসভায় ক্ষমতাশীল দলের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে পৌরসভা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বহিরাগতরা অবস্থান নিচ্ছেন। যাহা সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে বাধার অন্তরায় বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন, তাহার সমর্থকদেরও বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তাই সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করছেন।
জয়ের ব্যপারে শতভাগ আশাবাদী হয়ে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম কবির বলেন(নির্বাচনী মার্কা নৌকা), তিনি দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। নৌকা প্রতীক মানুষের শান্তির প্রতীক। বিগত পাঁচ বছরে স্বরূপকাঠি পৌরসভার যে উন্নয়ন হয়েছে। সেই উন্নয়নের সুফল থেকেই স্বরূপকাঠি পৌরবাসী আবারো নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ী করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি) থানার অফিসার ইন চার্জ(ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, নির্বাচনী বিধি মোতাবেক পিরোজপুর পুলিশ সুপারের সরাসরি দিক নির্দেশনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে শতভাগ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আশা করে বলেন, ৩০ জানুয়ারি স্বরূপকাঠি পৌরসভায় উৎসব মুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউসুফ হারুন বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে পৌরসভার নয়টি ভোট কেন্দ্রেই থাকবে নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠে থাকবে ষ্ট্রাইকিং ফোর্স,মোবাইল টিম,র্যাব ও দুই প্লাটুন বিজিবি। এছাড়াও প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে ছয়জন করে পুলিশ সদস্য।
এবারের স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র কাউন্সিলর পদ মিলিয়ে মোট ৫৫ প্রার্থী নির্বাচন করছেন। ভোটারদের মন জয়ে প্রার্থীরা দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তারাও মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ভোটারদের দিচ্ছেন উন্নয়নের নানান প্রতিশ্রুতি।
এবারের স্বরূপকাঠি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ,বিএনপি,জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ছয় জন প্রতিদন্ধিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম কবির(নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মো: শফিকুল ইসলাম ফরিদ(ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো: নুরুল ইসলাম(লাঙল), পৌর যুবলীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শিশির কর্মকার(জগ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান খান(মোবাইল ফোন), স্বতন্ত্র প্রার্থী থানা পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ(নারিকেল গাছ)।
বিজয় নিজের অনুকুলে রাখার জন্য আলোচিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঠের অবস্থান চোখে পড়ার মত। নির্বাচনে মোট ছয় মেয়র প্রার্থীদের মধ্য আওয়ামীলীগের গোলাম কবির(নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুর রহমান খান(মোবাইল ফোন),স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ(নারিকেল গাছ),স্বতন্ত্র শিশির কর্মকার(জগ) বিএনপির শফিকুল ইসলাম ফরিদ(ধানের শীষ) এর মাঠের অবস্থান সমান তালে এগিয়ে চলছে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন। তাই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিযোগী এই পাঁচ প্রার্থীর মাঠের অবস্থান দেখে ভোটের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত আগাম হারজিতের সমীকরণ হিসাব করা দুরূহ ব্যপার বলে মনে করছেন সচেতন পৌরবাসীরা।
৪.৯৮ বর্গ কিলোমিটারের আয়তনে স্বরূপকাঠি পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯ শত ২১ জন। এরমধ্য পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৭হাজার ৩ শত ২৫ এছাড়া মহিলা ভোটার রয়েছে ৭হাজার ৫শত ৯৬ জন। ১৯৯৮ সালে ১৭ ডিসেম্বর স্বরূপকাঠি পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয়। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্বরূপকাঠি পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখানকার বর্তমান মেয়র গোলাম কবির।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।