পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তদন্তে ভুল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু ‘আসামি’ হয়েছেন নোয়াখালীর নিরপরাধ তরুণ কামরুল ইসলাম। দুদকের কৃত এই ‘ভুল’ সংগঠিত হয় সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ‘সরল বিশ্বাসে’। হাইকোর্টের জারিকৃত রুলের জবাবে দুদক স্বীকার করেছে, এটি ছিল সরল বিশ্বাসের ভুল (বোনাফাইড মিসটেক)। রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর আজ (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চে এ বিষয়ে আদেশ দেয়া কথা রয়েছে।
কামরুল ইসলামের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। জানান, ১৯৯৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার সনদ জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে বাবা ও ছেলের নামে মিল থাকায় তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো অভিযুক্ত করেছে ২০০৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী নোয়াখালী সদরের পশ্চিম রাজারামপুর গ্রামের কামরুলকে। বিষয়টি সুরাহা করতে উচ্চ আদালতে এলে দেখা যায়, সেই সনদ জালিয়াতির ঘটনায় অভিযোগপত্র দেয়া হয় পশ্চিম রাজারামপুরের পাশের পূর্ব রাজারামপুর গ্রামের কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় হাইকোর্ট তখন রুল জারি করেন। রুলের চ‚ড়ান্ত শুনানিতে গত মঙ্গলবার ‘দুর্নীতি দমন ব্যুরো’ থেকে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন’ এ পরিণত সংস্থার পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। রুলের জবাবে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ‘সরল বিশ্বাসের ভুল (বোনাফাইড মিসটেক)’।
ওই আইনজীবী ঘটনার ধারাবাহিকতা তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৮ সালের এসএসসির সনদ জালিয়াতি করে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছেন এক যুবক। এমন অভিযোগ এনে ২০০৩ সালের মামলা করে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো। ২০০৪ সালে ব্যুরো কমিশনে উন্নীত হয়। ২০১৩ সালে তদন্ত শেষে মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৪ সালে মামলার বিচার শেষে আসামিকে ‘পলাতক’ দেখিয়ে তিনটি ধারায় ৫ বছর করে ১৫ বছরের সাজা দেন বিচারিক আদালত। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়। দন্ডাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াখালী সদরের পূর্ব রাজারামপুর গ্রামের মো. আবুল খায়েরের ছেলে মোহাম্মদ কামরুল ইসলামকে গ্রেফতারে উদ্যোগী হয় পুলিশ। তার বাড়িতে একাধিকবার হানা দেয়া হয়। পুলিশের এ তৎপরতা দেখে রিট করেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। রিটে তিনি বলেন, আমার জন্ম ১৯৯০ সালে। আমি সংশ্লিষ্ট কলেজের কোনো ছাত্র নই। কোনোদিন ভর্তিও হইনি।’ ওই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট গতবছর ৫ নভেম্বর দুদকের প্রতি রুল জারি করেন। এ ঘটনার ব্যাখ্যা চান। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রুলের জবাব দিয়ে দুদক ভুল স্বীকার করে।
পিটিশনের তথ্য মতে, ২০০৩ সালের সালের জানুয়ারিতে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রসিকিউটিং পরিদর্শক মো. শহীদুল আলম একটি এজাহার (এফআইআর) দায়ের করেন। এতে বলা হয়, নোয়াখালী সদর থানার পূর্ব রাজারামপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে কামরুল ইসলাম নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৫৭৬ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি পাসের ভুয়া মার্কশিট ও প্রশংসাপত্র সৃজন বা সংগ্রহ করে ১৯৮৯-৯০ সেশনে মাইজদী পাবলিক কলেজে ভর্তি হন। ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর চার্জশিট জমা দিলে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর রায় দেন আদালত। রায়ে কামরুল ইসলামকে পেনাল কোডের ৪৬৭ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, ৪৬৮ ধারায় ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, ৪৭১ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেন। রায়ে বলা হয়, সকল কারাদন্ড একত্রে চলবে; কিন্তু অর্থদন্ড পৃথক-পৃথকভাবে দিতে হবে। অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। কেন এমনটি ঘটল- এ জবাবে দুদকের অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, গ্রামের নামে ভুলের যে বিষয়টি এসেছে এটি আমাদের ‘বোনাফাইড মিসটেক’। আমরা তার রিটের সাথে একমত। এখানে একটা বিষয় যে, কামরুল কিন্তু একদিনও জেল খাটেনি। আমরা চাই না কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি জেল খাটুক।
প্রসঙ্গত: এর আগে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালমের বিরুদ্ধে ৩০টিরও বেশি মামলায় চার্জশিট দেয় দুদক। চার্জশিটের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তিন বছর কারাভোগ করে হাইকোর্টের হস্থক্ষেপে মুক্তি পান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।