পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। যিনি অবৈধ দখলদারদের আতঙ্ক। যাকে আত্মপ্রত্যয়ী কর্মবীর হিসেবে সহজেই অভিহিত করা যায়। একটি সবুজ, চলমান, পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত শহর গড়তেও দৃঢ়প্রত্যয়ী মেয়র আতিক। ঢাকা উত্তরের অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি নাগরিক জীবনে বিদ্যমান মশানিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সড়ক বাতি, রাস্তা-ঘাট ও নালা-খাল দখলমুক্তকরণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, নারী ও শিশুর সমস্যাসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধানের মধ্য দিয়ে সফলতার পথেই ডিএনসিসিকে নিয়ে যাচ্ছেন নগরবাসীর দোরগোড়ায়। তার সফল এবং সক্রিয় নেতৃত্বেই নাগরিকদের স্বার্থরক্ষায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ডিএনসিসি। তবে ডিএনসিসির সাম্প্রতিক টানা তিন দিনের উচ্ছেদ অভিযানে একদিকে নগরবাসীর মনে বইছে স্বস্তির হাওয়া। অপরদিকে অবৈধ দখলদারদের হৃদয়ে দেখা দিয়েছে কম্পন। উচ্ছেদ কর্মসূচী আপাতত স্থগিত থাকলেও থেমে থাকবে না বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র। এই উচ্ছেদ অভিয়ান চলমান থাকবে বলেও ভাষ্য আতিকুল ইসলামের। এমতাবস্থায় মিরপুর-১৪, ইব্রাহিমপুর, কাফরুল, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়াসহ পুরো উত্তর সিটির অবৈধ দখলদাররা রয়েছেন আতঙ্কে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের ঘোষণা এবং বিভিন্নস্থানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ায় এসব এলাকার অবৈধ দখলদারের মাঝে আতঙ্ক বেড়ে গেছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে এসব এলাকার অবৈধ দখলদার, বাড়ির কিছুঅংশ রাস্তায় নির্মান করা বাড়িওয়ালা ও অনেক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই নিজ থেকে তাদের দোকানের মালামাল ও স্থাপনা সরাতে শুরু করেছে। বিশেষ করে, চলতি মাসে পল্লবীতে টানা তিন দিনের উচ্ছেদ অভিযানে পল্লবী এলাকার প্রায় পাঁচশতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।
এরআগে ওয়াসার দায়িত্বে থাকা ঢাকার ২৬টি খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। দায়িত্ব পেয়েই ঢাকা উত্তর সিটির আওতায় পড়া খালগুলোকে পরিষ্কার করে আগের মতো পানির গতি ফিরিয়ে আনবেন বলে জানান মেয়র আতিক।
এছাড়া খালের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল পুন:খনন করে পানিধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ পাড় বাঁধাই করে সবুজায়ন, ওয়াকওয়ে (হাঁটার পথ) এবং সাইকেল লেন তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি। যেই কথা সেই কাজ, খালের দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার পরই রাজধানীর ইব্রাহিমপুর খাল পরিষ্কার ও খালের পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় ডিএনসিসি। মেয়র আতিক নিজেই অভিযানস্থল পরিদর্শন করেন এবং উচ্ছেদ এলাকা ঘুরে সার্বিক পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণ করেন। সে সময় তিনি বলেন, খালের দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরই খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদে আমরা কাজ শুরু করেছি। যত প্রভাবশালী হোক না কেন খাল দখলদার কেউই ছাড় পাবে না। খাল পাড়ের সব বহুতল ভবনও ভেঙে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর কথার সঙ্গে কাজের বাস্তবতায় উচ্ছ্বসিত নগরবাসীও সাধুবাদ জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলামকে।
এদিকে রিকশা গ্যারেজ, ক্লাব ঘর, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, নার্সারিসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলে ডিএনসিসি এলাকার বনানী পূজা মাঠ, বনানী সি ব্লক পার্ক, মোহাম্মদপুর ত্রিকোণ পার্ক, শিয়া মসজিদ পার্ক এবং মোহাম্মদপুর উদয়াচল পাক দখলে রাখে প্রভাবশালীরা। দীর্ঘদিন ধরে এসব পার্ক ও খেলার মাঠ অবৈধ দখলে থাকায় এগুলোর আধুনিকায়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছিল এবং এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রচারিত হয়।
বনানী পূজা মাঠে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, বনানী সি ব্লক পার্কে অবৈধভাবে ডেসকোর পরিত্যক্ত সাবস্টেশন ও অফিস রুম এবং বনানী সোসাইটির গার্ড শেড স্থাপন, মোহাম্মদপুর ত্রিকোণ পার্কে অবৈধভাবে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, রিকশা গ্যারেজ ও নার্সারি স্থাপন, শিয়া মসজিদ পার্কে অবৈধভাবে একটি ক্লাব ঘর, টং দোকান, রিকশা গ্যারেজ স্থাপন করে প্রভাবশালীরা।
সেখানে প্রভাবশালীদের প্রভাব উপেক্ষা করেই মেয়র আতিক অবৈধভাবে নির্মাণ করা এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। পর্যায়ক্রমে মেয়র আতিকের নেতৃত্বে খালপাড় ও ঢাকা উত্তরের ফুটপাতসহ সব জায়গাতেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ অভিযানের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পল্লবী ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাউনিয়া বাঁধ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক। এ সড়কটি অবৈধ দখলমুক্ত করে চলাচলের উপযোগী করা হলে ওই এলাকার যোগাযোগে খুবই সুবিধা হবে। এ সড়কের শাখা সড়কগুলো দখলমুক্ত করেছে ডিএনসিসি। এগুলো সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হলে বৃহত্তর মিরপুর এলাকারই সড়ক যোগাযোগের চিত্র বদলে যাবে। নগরবাসী সহজে কালশী হয়ে উত্তরাসহ মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে পারবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সুরেই সুর মিলিয়ে ডিএনসিসি মেয়র দাবি করেন, এ অভিযান কিন্তু আমার জন্য না, জনগণের জন্য। এই সড়ক তাদের। যারাই দখল করবে তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযান হবে। এমনকি সড়ক প্রশস্ত করতে জমি অধিগ্রহণ করে হলেও উচ্ছেদ করে সড়ক প্রশস্ত করা হবে।
তবে স্থানীয় কিছু বাসিন্দাদের মধ্যে আছে সংশয়ও। তারা জানিয়েছেন, অতীতেও বিভিন্ন সময় এসব উচ্ছেদ অভিযানে কিছু স্থাপনা ভাঙ্গা হয় আবার কিছু স্থাপনা রাজনৈতিক বিবেচনায় কিংবা অদৃশ্য কারণে রেখে দেয়া হয়। পরবর্তীতে কয়েকদিন পরেই ভেঙ্গে ফেলা স্থাপনাগুলো আবারও নিমার্ণ করে দখলদাররা। তাই উচ্ছেদ অভিযান পরবর্তী নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় জনসাধারণ।
অবশ্য আশা জাগাচ্ছে মেয়রের কর্মকান্ড। উচ্ছেদ অভিযান বাদেও সার্বিক কর্মকান্ডে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যেও স¤প্রতি ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ চালু করেন তিনি। যা নগরবাসীর কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসাও কুড়ায়। তিনি নিজেও জবাবদিহিতার মধ্যে থেকে যেমন কাজ করতে চান তেমনি ডিএনসিসির কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে আনার বিষয়টিও এই অ্যাপের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন তিনি। এছাড়াও এই অ্যাপ নাগরিক ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে বলেও আশাবাদী মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এছাড়া মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের উদ্যোগে রাজধানীর গাবতলী ও মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ইজারা দেওয়ার কাজ বাস্তবায়ন করেছেন। এক বছরের জন্য সম্প্রতি বাস টার্মিনাল দুটি ইজারা দেওয়া হয়েছে মোট ১২ কোটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এর আগে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের আমলে নামমাত্র মূল্যে টার্মিনাল দুটি থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য আদায় সহযোগিতাকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ এক যুগেও ওই আদায়ের জন্য নির্ধারিত টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। যা নিজ উদ্যোগে বাড়িয়েছেন বর্তমান মেয়র।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে ‘স্মার্ট সিটি’ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও কাজ করে যাচ্ছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। জানা গেছে, ডিএনসিসির প্রতিটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাকে ফেস রিকগনিশন সফটওয়্যারের আওতায় আনা হবে। সংরক্ষিত থাকবে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চিহ্নিত দুষ্কৃতকারী, মাদক ব্যবসায়ী ও জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ডেটা।
আর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা সিটি কর্পোরেশনে ক্যামেরার নজরে আসামাত্রই কন্ট্রোলরুমে এলার্ট হবে। পাশাপাশি পুলিশের ডেটা স্টোরেজের সঙ্গেও এটিকে ইন্টিগ্রেট করা হবে। এর মধ্য দিয়েই নগরবাসী পাবে একটি সুরক্ষিত স্মার্ট সিটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।