পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর পল্লবীতে গত সপ্তাহে তিনদিন উচ্ছেদ অভিযানে পাঁচ শতাধিক দোকানপাট ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এই উচ্ছেদ অভিযানে খুশি ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। যদিও অভিযান পরিচালনা করতে বেগ পেতে হয়েছে ডিএনসিসিকে।
অভিযানের শুরু থেকেই স্থানীয় কিছু সংখ্যক বাসিন্দারা এতে বাধা প্রদান করে। এমনকি রাস্তায় অভিযান পরিচালনাকারী দলকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে অভিযানে ক্ষতিগ্রস্তরা। ফলে পিছু হটে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয় বিহারি ও দখলদারদের বাধা ও হামলার শিকার হয় পুলিশসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মোতায়েন করতে হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। ব্যবহার করতে হয়েছে জলকামানও। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন মেয়র আতিকুল ইসলাম, তার উপস্থিতিতে পরবর্তীতে আবারও বেগবান হয় উচ্ছেদ অভিযান।
এদিকে আপাতত এই অভিযান স্থগিত রেখেছে উত্তর সিটি। এ ব্যাপারে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম সফিউল আযম জানিয়েছেন, আমাদের মূলত যে দুই জায়গায় অবৈধ স্থাপনা সরানোর দরকার ছিল, সেগুলো সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তক্রমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে। তবে দখলদারদের দৌরাত্ম্য যেকোন উপায়ে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি আরও জানিয়েছেন, দখলদারদের জন্য কোন নোটিশ নয়, তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে ডিএনসিসি। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই অভিযানে স্থানীয়দেরও সমর্থন রয়েছে। যত ধরনের বাধাই আসুক না কেন উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে।
এ অভিযানের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পল্লবী ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাউনিয়া বাঁধ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক। এ সড়কটি অবৈধ দখলমুক্ত করে চলাচলের উপযোগী করা হলে ওই এলাকার যোগাযোগে খুবই সুবিধা হবে। এ সড়কের শাখা সড়কগুলো দখলমুক্ত করেছে ডিএনসিসি। এগুলো সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হলে বৃহত্তর মিরপুর এলাকারই সড়ক যোগাযোগের চিত্র বদলে যাবে। নগরবাসী সহজে কালশী হয়ে উত্তরাসহ মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে পারবে।
একটি প্রকল্পের আওতায় পল্লবীর সড়কগুলোর সংস্কার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছিলেন ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম। তিনি বলেন, প্রকল্পটি ইতোমধ্যে অনুমোদন পেয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়ন কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু, পল্লবীর সড়কগুলোর অবৈধ দখলের কারণে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিল না। এখন সড়কগুলো দখলমুক্ত করা হয়েছে।
অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, রাস্তার দু’পাশে ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের মাস্টারপ্ল্যানে ৬৮ ফুট রাস্তার কথা বলা থাকলেও, অবৈধ দখলের কারণে রাস্তার পরিধি কমে যায়। রাস্তা দখলমুক্ত করতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনসহ আশপাশের এলাকা জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) পরিকল্পিত আবাসিক। ওই এলাকার সড়কগুলোর প্রশস্ততা সুনির্দিষ্ট করা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদাররা এসব সড়কের অংশ বিশেষ দখল করে ব্যবসার পসরা গড়ে তুলেছিল। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে ওইসব সড়কে গাড়ি চলা তো দূরের কথা হেঁটে চলাচল করাও ছিল কষ্টসাধ্য।
তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্ছেদ অভিয়ানের একদিন আগে (বুধবার) মৌখিকভাবে দোকান ভাঙার বিষয়টি সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। স্বল্প সময়ে দোকান থেকে মালপত্র তেমন বের করা সম্ভব হয়নি। আবার অনেকে অভিযোগ করেন, সিটি কর্পোরেশন ভাঙা কিংবা উচ্ছেদের বিষয়টি তাদেরকে অবহিত করেনি। এতে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কোনও জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে, উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় ক্ষোভ জানান ব্যবসায়ীরা।
এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে সিটি করপোরেশন থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তারা সে নোটিশ আমলে নেয়নি। বরং উচ্ছেদ অভিযান বাধাগ্রস্ত করছে। জনগণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে উচ্ছেদ পরবর্তী রাস্তা স¤প্রসারণের কাজ করা হবে।
তিনি বলেন, ফুটপাতের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে এখানে সর্বোচ্চ ৭৫ ফুট এবং সর্বনিম্ন ৬০ ফুট চওড়া রাস্তা করা হবে। উচ্ছেদ অভিযানে কেউ বাধা দিলে তা প্রতিহত করা হবে। রাস্তার ওপরে যেসব বৈদ্যুতিক খুঁটি আছে তা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ডেসকোর সাথে কথা হয়েছে। আমরা একটি পরিকল্পিত নগরী তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছি। এ উচ্ছেদ অভিযানকে পল্লবী এলাকার সর্বস্তরের মানুষ স্বাগত জানিয়েছে বলেও জানান উত্তর সিটির মেয়র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।