বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকা সিটির পরই ১৮৬৫ সালে গঠিত হয় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভা। দীর্ঘ এতটা বছর কেটে গেলেও এ পৌরসভায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। এখনো সবখানে পৌঁছায়নি বিদ্যুৎ। এ অবস্থায় তৃতীয় ধাপে আগামী ৩০ জানুয়ারি হতে যাচ্ছে নলছিটি পৌরসভা নির্বাচন। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও আধুনিক পৌরসভা গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছেন মেয়র প্রার্থীরা। শুধু প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, যিনি প্রকৃত উন্নয়ন করবেন তাকেই ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা।
লঞ্চ কিংবা সড়কপথে নলছিটি পৌরসভায় প্রবেশ করলেই দেখা যাবে খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট। এর মধ্যে প্রধান সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পথচারীদের হাটাই দায়। বর্ষায় কাদা, আর শীতে খানাখন্দে ধুলোবালিতে একাকার। শহরের বেশকিছু এলাকায় রয়েছে কাচা রাস্তা, কোথাও খালের ওপর বাঁশের সাঁকোই ভরসা। ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই। এ অবস্থায় আগামী ৩০ জানুয়ারি নলছিটি পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা শুরু করেছেন গণসংযোগ। লিফলেট বিতরণ, পথসভা, মতবিনিময় ও উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রæতি। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে আব্দুল ওয়াহেদ খান, ধানের শীষ প্রতীকে মো. মজিবুর রহমান ও হাতপাখা প্রতীকে মাওলানা মো. শাহ জালাল। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কে এম মাছুদ খানের প্রার্থীতা আটকে আছে আদালতে। এদিকে ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিল প্রার্থী ৪০ ও সংরক্ষিত ১৩ জন নারী প্রার্থী লড়ছেন এ নির্বাচনে। সময়মতো পৌর-কর পরিশোধ করেও নাগরিকরা পাচ্ছেনা কাঙ্খিত সেবা। উন্নয়ন বঞ্চিত এ পৌরসভায় নির্লোভ ও দক্ষ ব্যক্তিকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা। তাদের দাবি টেকসই উন্নয়নের। নলছিটি পৌরসভার ২৪ হাজার ১০১ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে ১২ হাজার ৫১ জন নারী ও ১২ হাজার ৫০ জন পুরুষ ভোটার। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন এখানকার ভোটাররা।
নলছিটি পৌরসভার সারদল এলাকার বাসিন্দা একরামুল কবির রাসেল বলেন, আমরা সবসময়ই মুখিয়ে থাকি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে। কারণ আমাদের হাতে একটিই ক্ষমতা আছে, সেটা ভোটাধিকার প্রয়োগ করার। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় আমাদের এলাকার উন্নয়নের বিষয়টি উঠে আসে। নলছিটি একটি প্রাচীনতম পৌরসভা হওয়া সত্তে¡ও এখানের বাসিন্দারা সবধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। বৃষ্টির সময় কাদায় প্রধান সড়ক দিয়ে হাটা যায় না। তাই নির্বাচনে যোগ্যপ্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে চাই, যিনি উন্নয়নের দিকে গুরুত্ব দিবেন।
শহরের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন পান্নু বলেন, ১৮৬৫ সালের পৌরসভায় যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা এখানে চোখে পড়বে না। আমরা একজন দক্ষ ও গুণী ব্যক্তিকে মেয়র হিবে দেখতে চাই। এ ধরনের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে এলাকার উন্নয়ন হবে।
সংস্কৃতিকর্মী শাহীন আহম্মেদ বলেন, পৌরসভায় টেকসই উন্নয়ন করতে হবে। যাতে শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, বিদ্যুত পৌঁছানো ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এলাকায় থাকবে না কোন মাদক ও সন্ত্রাসের বিচরণ। এগুলো যিনি করতে পারবেন তাকেই মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।
ভোটারদের এ কথাগুলো সঙ্গে একম পোষণ করে আওয়ামী লীগ মনোনিত মেয়র প্রার্থী আবদুল ওয়াহেদ খান বলেন, আমি নির্বাচিত হলে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে নলছিটি পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে। শহরের রাস্তাঘাটের চিত্র পাল্টে দেওয়া হবে। উন্নয়নে সমৃদ্ধ থাকে পৌর এলাকা। থাকবে না কোন মাদক ও সন্ত্রাস।
সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করে বিএনপি মনোনিত মেয়র প্রার্থী মো. মজিবুর রহমান বলেন, জনগণের একটাই চাওয়া সুষ্ঠু নির্বাচন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে আমার বিজয় শতভাগ। বিএনপি কখনো সন্ত্রাস ও মাদকের সঙ্গে আপষ করে না। এখানে টেকসই উন্নয়ন করে পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করা হবে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ১১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর শান্তিপূর্ণভাবে প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আশাকরি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।