বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজে প্রায় ৩০ কোটি টাকার সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র ব্যবহার না করেই নষ্ট হচ্ছে। মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত মালামাল কিনে একদিকে সরকারের অর্থ অপচয় অন্যদিকে কিছু ব্যক্তি বিশেষের ইন্ধনে এসব মালামাল কিনে উল্টো বিপাকে পড়েছেন সাবেক প্রিন্সিপাল ডা. রেজাউল করিমসহ আরও অনেকে। এনিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলাও করেছে। তবে বর্তমানে এসব মালামাল ব্যবহার না করেই নষ্ট করার চেয়ে সরকারের কাছে ফেরত দেয়া ভালো হবে বলে দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
সরজমিনে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের বেশ কয়েকটি রুমে অসংখ্য চেয়ার টেবিল, রেক, সোফাসহ অনেক আসবাবপত্র এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। বেশির ভাগ আসবাবপত্রে ধুলোময়লা জমে আছে এবং ইতোমধ্যে অনেক আসবাবপত্র ব্যবহার না করায় নষ্ট হওয়ার পথে।
এছাড়া ভবনের অন্য রুমে গিয়ে দেখা গেছে অনেক যন্ত্রাংশও পড়ে আছে ব্যবহার না করে ফলে এগুলো আর ব্যবহার করার উপযোগী থাকবে না বলে মনে করেন অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজের এক কর্মকর্তা জানান, এখানে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকার মালামাল আছে এর মধ্যে এখানে কিছু আছে আর কিছু কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আছে।
সাবেক প্রিন্সিপাল হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন ডা. রেজাউল করিম তিনি মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মালামাল কিনেছিল যার কোন প্রয়োজন ছিলনা। কারণ এখানে শিক্ষার্থী আছে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন করে সে হিসাবে ৪ ব্যাচে ২০০ জন শিক্ষার্থী থাকে এর জন্য ১ হাজার শিক্ষার্থীর মালামাল কেনার কোন দরকার ছিলনা। আর কিছু সরঞ্জাম কেনা হয়েছে যেগুলো এখানে বর্তমানেও ব্যবহারের সময় আসেনি মোট কথা অপ্রয়োজনীয় মালামাল কিনে সরকারের বিপুল টাকা অপচায় এবং দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
হিসাব রক্ষক হুররমা আক্তার খুকি জানান, কতিপয় ব্যক্তির লোভের কারণে আজকে আমরা সবাই বদনামের ভাগিদার। আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে মনে করে মেডিকেল কলেজে হওয়া দুর্নীতিতে আমরা অংশিদার কারণ আমরা এখানে চাকরি করি। তবে সত্যি কথা হচ্ছে এখানে আগের একজন কর্মকর্তা ঢাকা- চট্টগ্রামের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা এবং ভেতরে-বাইরের কিছু অসৎ লোকের কারণে পুরো মেডিকেল কলেজ আজ সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে।
এটা সত্যি এখানে অনেক মালামাল আছে যেগুলো কোন দিন ব্যবহার হয়নি আর সামনে হওয়ার সম্ভবনা নেই। আর আমাদের জানামতে প্রত্যেকটি মালামাল কেনা হয়েছে বাজার মূল্যের চেয়ে বহুগুণ বেশি দামে।
তবে এই ঘটনার কারণে এখন দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সম্মুখিন হবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ। কারণ বর্তমানে আর কেউ কোন অর্থনৈতিক দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছেনা কেউ কোন কমিটিতে থাকতে চাচ্ছে না। ফলে বর্তমানে সরকার বাজেট দিলেও সেটা ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। এতে চলতি অর্থবছরেও বিপুল টাকা ফেরত গেছে।
তবে আমাদের মতে এখানে যে বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম বা আসবাবপত্র আছে সেগুলো ব্যবহার হওয়ার যেহেতু সম্ভবনা নেই তাই অযথা নষ্ট না করে সরকারের কাছে ফেরত দেওয়া অথবা যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয়। এব্যাপারে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের বর্তমান প্রিন্সিপাল ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, আমি এখনো নতুন যোগদান করেছি মাত্র। তাই এসব বিষয়ে তেমন কিছুই এখনো জানিনা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা সহ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। উক্ত মামলায় এজাহার নামীয় আসামি ছিল বহুল আলোচিত আবজাল হোসেন এবং তার স্ত্রী রুবীনা খানম।অন্য আট আসামি হলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর আবদুর রশীদ, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল সুবাস চন্দ্র সাহা, সাবেক প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কলেজের হিসাব রক্ষক হুররমা আক্তার খুকী, কক্সবাজার জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সুকোমল বড়ুয়া, একই দপ্তরের সাবেক এসএএস সুপার সুরজিত রায় দাশ, পংকজ কুমার বৈদ্য এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক উচ্চমান সহকারী খায়রুল আলম। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের প্রধান সহকারী নুরে আলম ছিলেন, সাবেক প্রিন্সিপাল সুবাস চন্দ্র সাহা, সাবেক প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ রেজাউল করিমের কাছের লোক। অনিয়ম-দুর্নীতির ভাগ তিনিও পেয়েছেন । সকলেই মামলার আসামি হল্ওে তিনি রহস্যজনক কারনে রক্ষা পেয়ে যান ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।