পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
কয়েক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় চলতে থাকা দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৮ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। একই সঙ্গে দরপতন হয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হলো।
টানা বড় দরপতন দেখা দিলেও এটাকে স্বাভাবিক বলছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত, কয়েকদিন ধরে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম টানা বেড়েছে। এতে একাধিক কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়ে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। যে কারণে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। তাই কিছুটা দরপতন হয়েছে।
তারা বলছেন, এখন বাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হচ্ছে। এই মূল্য সংশোধনের পর শিগগিরই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। তবে বাজার এখন যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, তাতে বিভিন্ন গ্রুপ সুবিধা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে। কেউ কেউ বাজারে বিভিন্ন গুঞ্জন ছড়ানোর চেষ্টা করবে। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সার্বিক তথ্য পর্যালোচনা করতে হবে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত লোভে পড়ে কোনো অবস্থাতেই জাঙ্ক শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার লেনদনের শুরু থেকেই ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতের একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হতে থাকে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের ধারা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ৬২টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২২২টির। আর ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮০১ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা দুই দিনের পতনে ১০৭ পয়েন্ট কমে গেছে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি টানা পতন হয়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্য সূচকের এই পতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, কয়েকদিনের টানা উত্থানে কিছু কোম্পানির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। একই সঙ্গে কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দামও বেড়েছে। এখন সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতন হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে সার্বিক শেয়ারবাজারে। তবে বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয় বলা যায়, এ দরপতনের ধারা বেশিদিন থাকবে না। শিগগিরই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দাম কমায় বিনিয়োগকারীর একটি অংশ শেয়ার কিনে নিয়েছেন। এটাকে পতন বলা যায় না। কয়েকদিন ধরে বাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ছিল। এ কারণে কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। অপরদিকে দাম কমায় কিছু বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার কিনে নিয়েছেন। এটাই শেয়ারবাজারের নিয়ম। এই বাজারে তো কোনো জাঙ্ক শেয়ারের দাম বাড়ছে না। ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ছে। এতে তো আমি খারাপ কিছু দেখছি না।
এদিকে সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও মোটা অঙ্কে কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২ হাজার ৩৮৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৮৭৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ২২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো ফার্মা, সামিট পাওয়ার, সিটি ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো এবং গ্রামীণফোন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬২টির এবং ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।