Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে পাথর উত্তোলনের পথে বাধা সরিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট : সর্বত্র স্বস্তি

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৩ পিএম

সিলেটে পাথর উত্তোলনের পথে বাধা সরিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে পাথর উত্তোলনে স্থগিতাদেশের কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য করা হয়েছে স্থগিত। এর ফলে ওই অঞ্চলের পাথর উত্তোলনে আর কোনো বাধা নেই বলে অভিমত দিয়েছেন আইনজীবীরা। পাথর উত্তোলনের নির্দেশনায় স্বস্তি ফিরে এসেছে পাথর সংশ্লিষ্ট সহ সেই এলাকার মানুষের জনজীবনে। নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন আপামন স্থানীয় মানুষ। দীর্ঘ মানবিক বিপর্যয়ে তার দিকভ্রান্ত হয়ে উঠেছিলেন।

অভাবের আগুনে তপ্ত হয়ে উঠেছিল লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-মজুর। এদিকে, পাথর উত্তোলন সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হা’ই’কো’র্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আ’দালতে রিট’কারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাবিব উন নবী। পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছানাকান্দি ও লো’ভাছড়ার পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর দায়ের করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন উচ্চ আ’দা’লত। সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আ’ন্দোলন করে আসছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। পরে আ’ন্দোলনে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন পরিবহন ব্যবসায়ীরাও। কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের দাবিতে গত মাসে টানা তিনদিন ধর্মঘটও করে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা। সিলেটের কোয়ারিগুলো থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর আহর’ণের অনুমতি প্রদানের দাবিতে প্রায় ৪ মাস ধরে আ’ন্দোলন করছেন তারা। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী, খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সিলেটের জে’লা প্রশাসকসহ সব পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের কাছে একাধিকবার স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। যদিও পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে পরিবেশকর্মীরা পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে পরিবেশ আন্দোলন সংশ্লিষ্ট একাধিক জনের অভিমত, পাথর উত্তোলনের কারনে পরিবেশ বিপর্যয় যে পরিমান হচ্ছে বলে দাবী করা হচ্ছে, তার চেয়ে বিশাল পরিমান পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখায়। কারন প্রতিবছর অব্যাহত পাথর ঢলে ভরে গেছে নদীর তলদেশে সহ উপরিভাগ। নৌ চলাচল বন্ধ কেবল নয়, নদীর উৎসপথ এখন স্থবির। স্থানীয় ধলাই নদী গতিপথ পাল্টে ফেলেছে। কিন্তু বাস্তবিক এ অবস্থা রহস্যজনকভাবে দেখছে না কথিত পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়। এছাড়া তারা বলেন, সিলেটের পরিবেশ বিপর্যয়ে একমাত্র স্থান যেন পাথর কোয়ারী, কিন্তু সর্বত্র পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। সেদিকে কোন লক্ষ্য নেই। পাশর্^বর্তী দেশে থেকে পাথর আমদানী করা হচ্ছে, তারা কেন সেই পরিবেশ বিপর্যয় আমলে নেয় না। পরিবেশ বান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পাথর উত্তোলনের পদক্ষেপ না নিয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের জু-জু তুলে সিলেটের পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখার নৈপথ্যে ব্যক্তি বা গোষ্টির হীন স্বার্থ রয়েছে বলে মনে করেন তারা। এদিকে, পাথর উত্তোলন আন্দোলনের নেতা নুরুল আমীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখার রহস্য উদ্ঘাটন জরুরী। এছাড়া যে আইনের বলে, দ্রুত পরিবেশ পরিস্থিতি সহ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন জীবিকার কথা চিন্তা না করে দ্রুত পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখা হয়েছিল, সেই আইন ও আদালতের নির্দেশনায় পাথর কোয়ারী পুনরায় সচলে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ আশা করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ