রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে
কোনো প্রকার আইন-কানুন না মেনেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই, সীতাকুন্ড উপজেলা থেকে শুরু করে ফেনী-চৌদ্দগ্রাম অবধি গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ জ্বালানি তেলের দোকান। এছাড়া বিভিন্ন হাটবাজারেও এইসব দোকান দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও প্রশাসন রয়েছে নীরব। ফলে একদিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে চোরাই তেল বিক্রি, অন্যদিকে নাশকতাকারীদের জ্বালানি দ্রব্য ব্যবহারের সুযোগ। এছাড়া মহাসড়কের নানা স্থানে অবৈধ জ্বালানি তেলের দোকান বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈধ ব্যবসায়ীরাও নানামুখী সমস্যায় পড়ার কথা ও জানা যায়। চট্টগ্রামের সিটিগেটের পর থেকে মীরসরাই উপজেলার ধূমঘাট পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ জ্বালানি তেলের দোকান। এসব দোকানে অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল, কোরোসিনসহ বিক্রি হয় সকল প্রকার জ্বালানি দ্রব্য। আবার এসব দোকানের সাথে রয়েছে তেল চোরাইকারবারীদের যোগসাজশ। ফলে রাত নামতেই পার্কিং করা গাড়ি থেকে চলে তেল চুরি। গাড়িগুলো থেকে এভাবে জ্বালানি দ্রব্য চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের চেয়ে লোকসানের ঘানি টানছে গাড়ির মালিকরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই উপজেলা এলাকার ছোটকমলদহ, সোনাপাহাড়, ধূমঘাট, ফেনীর ফাজিলপুর, মুহুরী গঞ্জ ও চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশেই রয়েছে এসব অবৈধ তেলের দোকান। ঝুপড়ি মতো ছোট্ট একটি দোকান থাকে কিন্তু পেছনে অনেক প্রকার ড্রাম থাকে। তেল চুরির পাইপসহ নানান সরঞ্জামই এই ব্যবসার পুঁজি। রাস্তার পাশে ওদের চোরাই সিগন্যাল হিসেবে একটি ড্রাম থাকে শুধুমাত্র। যারা চুরি করে তেল বিক্রি করবে ওরাই ওদের চেনে। গাড়ি থামাতেই ইশারায় কথা সেরে দ্রুত তেল চুরি সেরে, লেনদেন করে সরে যায়। দুরপাল্লার ট্রাক ও পেট্রোলিয়াম ট্যাংকারগুলোই ওদের টার্গেট। এছাড়া তেল চুরির কারণে তেল সরবরাহকারী পদ্মা, মেঘনা, যমুনা অয়েল কোম্পানিসহ জ্বালানি খাতে ব্যাপক খরচ গুণতে হচ্ছে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। আবার একই সাথে অবৈধ দোকানের ভেজাল মিশ্রিত তেল-মবিল ব্যবহারের ফলে ইঞ্জিনে নানা ত্রুটি দেখা দেয় বলে জানান গাড়ির মালিকরা। চট্টগ্রাম-উত্তর এর আন্তঃজেলা মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক একরামুল হক ভূঞা জানান এসব তেল বিক্রির দোকান বাড়তে থাকলে দেশে নানারকম নাশকতামূলক তৎপরতা বৃদ্ধি এবং বাস ট্রাক মালিকদের যানবাহনের নিরাপত্তা ও অনিশ্চয়তার দিকে যাবে দিনে দিনে। মীরসরাইয়ের জনৈক পিকআপ ভ্যানের মালিক আবছার উদ্দিন জানান, ‘চালকরা কম দামের ভেজাল তেল ক্রয় করে গাড়িতে ব্যবহার করায় প্রায় সময় ইঞ্জিনে কাজ করাতে হয়। এছাড়া চুরি করে তেল বিক্রি করায় গাড়ি ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে বলে তিনি জানান।’ অবৈধভাবে গড়ে উঠা তেল ব্যবসার দ্বারা অপরাধ বৃদ্ধি পেলেও প্রশাসনের কোনো ভূমিকা নেই। ফলে অবৈধ ব্যবসায়ীরাও ব্যবসা পরিচালনায় কোনা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করছে না। বরং প্রসারিত হচ্ছে তাদের কর্মকা-। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই থেকে শুরু করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক স্থানে গড়ে উঠা চোরাই তেলের অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মহাসড়ক এলাকার নিরাপত্তার জন্য ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে অনেক বিজ্ঞমহল মনে করেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এসব চোরাই তেলের অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করছে স্ব স্ব এলাকার কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। এই বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের জোরারগঞ্জ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই ফরিদ উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহাসড়কে ট্রাফিক বিভাগের সকল দায়দায়িত্ব শুধু আমাদের। অপরাধ বিষয়ক দায়িত্ব থানার তবুও আমরা এমন অপরাধগুলো থানার সহযোগিতা নিয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিব। আবার মীরসরাই থানার ওসি ইমতিয়াজ এমকে ভূঞা এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মীরসরাই থানা এলাকায় পূর্বে এমন প্রবণতা ছিল। আমাদের টহল পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপে আমরা এমন সকল অপরাধ রোধ করেছি। ইতোমধ্যেও আবার কেউ এমন অপরাধ করার চেষ্টা করলে আবারো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।