Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদমজী ইপিজেডে শ্রমিক অসন্তোষ

সড়ক অবরোধ পুলিশের লাঠিচার্জ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের ভেতর কুংতন এ্যাপারেলস লিমিটেডের (ফ্যাশন সিটি) সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে দ্বিতীয়বারের মতো গতকাল সকালে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। দুই দফা পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ার সেল নিক্ষেপের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসের সামনে একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে এবং কারের চালক নুর ইসলামকে মারধর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে বেলা ২টার পর যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

শ্রমিকরা জানায়, তাদের ৪ মাস ১০ দিনের বেতন বকেয়া পড়েছে। এছাড়া আরো অন্যান্য পাওয়া রয়েছে। কিন্তু মালিক তাদের কোন বকেয়াই পরিশোধ করছে না। তাদের বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে। বাসায় খাবার নেই। অত্যন্ত অমানবিক দিন কাটাচ্ছে তারা। ফলে নিরুপায় হয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে ফ্যাক্টরির সামনে অবস্থান নিয়ে আমরা বিক্ষোভ করি। কিন্তু শন্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে আকষ্মিকভাবে বেপজার আনসাররা শ্রমিকদের বেধড়ক লাঠি পেটা করে। এতে অনেক শ্রমিক আহত হয়। এ ঘটনার পর শ্রমিকরা আদমজী ইপিজেডের রেমি ফ্যাক্টরির সামনে সড়ক আবরোধ করে বিক্ষোভ করে। ওইদিন দুপুরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ এর এসপি আইনুল হক এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শরিফ শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, মালিকপক্ষের সাথে তাদের কথা হয়েছে। তারা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দিবে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আরও জানায়, গত বছরের ১০ আগস্ট হঠাৎ দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেয় মালিক। সেই বন্ধ পরবর্তীতে ক্রমশ বৃদ্ধি করতে করতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধ হওয়ার পরেও শ্রমিকদের ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে বেতন পরিশোধ করে আসছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার বেতন দেয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ দেয়নি।

কিন্তু মালিকপক্ষের কোন আশ্বাস না পেয়ে শ্রমিকরা দ্বিতীয়বারের মতো গতকাল সকালে পুনরায় আদমজী ইপিজেডের সামনে সড়ক অবরোধ করে বকেয়া পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে না পেরে নেতারা ফিরে যান। বেলা ১২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ যৌথভাবে অ্যাকশনে যায়। তারা লাঠিচার্জ ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়।
এদিকে ছত্রভঙ্গ হয়ে শ্রমিকরা রেমি ফ্যাক্টরির সামনে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে পুনরায় বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ সেখান থেকে শ্রমিকদের ধাওয়া দেয়। এরপর শ্রমিকরা সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসের সামনে একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর এবং চালক নুর ইসলামকে মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, বেপজা ও শিল্প পুলিশ কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলেছে ১৮ জানুয়ারি ১ মাসের বেতন পরিশোধ করবে। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানছেন না।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ এর সিনিয়র এএসপি আইনুল হক জানান, মালিকপক্ষ থেকে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আদায় করে দেয়ার চেষ্টা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ