পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারত সরকার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও আগে থেকেই চুক্তি হয়ে যাওয়ার কারণে সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। চুক্তি অনুযায়ী সেরামকে অগ্রিম অর্থ দেয়া হলে এবং দেশে ভ্যাকসিনটির নিবন্ধন দেয়া হলে সময়মতোই এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসবে।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে এক ব্রিফিংয়ে এমন আশাবাদ জানানো হয়েছে সেরামের ভ্যাকসিন দেশে আমদানির জন্য সরকার ও সেরামের সঙ্গে যুক্ত তৃতীয় পক্ষ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। বেক্সিমকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
এর আগে, রোববার (৩ জানুয়ারি) ভারত সরকার করোনা প্রতিরোধে দেশটির ওষুধ নির্মাতা সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন জরুরি প্রয়োগের জন্য অনুমোদন দেয়। একইসঙ্গে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের দেশের চাহিদা না মিটিয়ে যেন ভ্যাকসিন অন্য কোনো দেশে রফতানি না করা হয়।
এদিকে, দেশে করোনা ভ্যাকসিন আমদানির জন্য এর আগে এই সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গেই চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ সরকার ও দেশের পক্ষে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ওই চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকোর মাধ্যমে সেরাম বাংলাদেশকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে।
এর মধ্যে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে প্রশ্ন ওঠেÑ বাংলাদেশ সেরামের এই ভ্যাকসিন পাবে কি না। এর মধ্যে দুপুরে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান জানান, সেরামের সঙ্গে চুক্তিটি জি-টু-জি (দুই দেশের সরকার পর্যায়ের চুক্তি) হওয়ায় বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না।
ব্রিফিংয়ে নাজমুল হাসান পাপনও সেরামের ভ্যাকসিন পাওয়ার আশাবাদ জানান। তবে চুক্তিটি কোনোভাবেই জি-টু-জি নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পাপন বলেন, ভারত সরকার সেরামকে যেভাবে ভ্যাকসিন রফতানি করতে নিরুৎসাহিত করেছে, সেটি যৌক্তিক। তবে আমাদের সঙ্গে সেরামের যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এ ধরনের চুক্তি বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশ এই ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন দিলে একমাসের মধ্যে ভ্যাকসিন চলে আসবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশ পাবে, এটি নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখছি না।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য চুক্তি অনুযায়ী দুটি কাজ করতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথমত, ভ্যাকসিনের জন্য কিছু টাকা অ্যাডভান্স পরিশোধ করতে হবে। সেটির জন্য আরও কয়েকদিন বাকি আছে। এর সঙ্গে ভ্যাকসিন বাংলাদেশে প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি দিতে হবে। এই দু’টি কাজ যত দ্রæত করা সম্ভব হবে, তত দ্রæত বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আসবে। যদিও স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান সোমবার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ৬শ’ কোটি টাকা সেরাম ইনস্টিটিউটকে পাঠানো হয়েছে।
নাজমুল হাসান পাপন জানান, ইতোমধ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে সেরামের এই ভ্যাকসিন দেশে প্রয়োগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ওষুধ প্রশাসন অধিধফতর অনুমোদন দিলে সেটি সেরামকে জানিয়ে দিতে হবে। তাহলে আর এই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।
সেরামের সঙ্গে চুক্তি জি-টু-জি নয় উল্লেখ করে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমি জানি না উনি (স্বাস্থ্য সচিব) কিভাবে জি-টু-জি চুক্তির কথা বলেছেন। তবে আমাদের এই চুক্তি জি-টু-জি নয়। এই চুক্তিতে সেরাম একটি পক্ষ, বেক্সিমকো একটি পক্ষ, বাংলাদেশ সরকার একটি পক্ষ। এটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে, বাংলাদেশ সরকার ভ্যাকসিনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও টাকা দেবে। আর বেক্সিমকো সেরামের কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে নিয়ে আসবে।
ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ জানিয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক চুক্তি আমরা আরও অনেক করেছি। কোনোটিই বাতিল হয়নি। আরেকটি কথা আমি বলতে চাই। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে কিন্তু ভারত করোনা চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট ওষুধের কাঁচামাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। আমরা কিন্তু ওই সময়ও এসব কাঁচামাল এনেছি। কারণ আমাদের সঙ্গে তাদের চুক্তি ছিল আগে থেকেই। আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিতÑ আমাদের যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটি ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে না। আমরা যথানিয়মে ভ্যাকসিন পাব।
এসময় তিনি সরকারের পক্ষে করণীয় দুটি বিষয়Ñ অগ্রিম অর্থ পরিশোধ ও ভ্যাকসিনের অনুমোদন— দ্রæত শেষ করার আহŸান জানান।
এর আগে বাংলাদেশ যথাসময়েই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাবে বলে জানিয়েছেন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশি অংশীদার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা। তিনি বলেন, আমরা যা বুঝতে পারছি তা হলো, সেরামের ওই বিবৃতিটি সর্বজনীন। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছি এবং যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাব। বেক্সিমকোর সিওও রাব্বুর রেজা বলেন, বেক্সিমকো ও সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে করা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে, স্থানীয় অনুমোদনের পর (বাংলাদেশ অনুমোদন দিলে) সেরাম ইনস্টিটিউট এক মাসের মধ্যেই প্রথম ধাপের ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।
ভারতের ভালো প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাব বলে আশা করছি।
ভারত থেকে ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর বেক্সিমকো সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, জানতে চাইলে রাব্বুর রেজা বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সেরামের যাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তারা জানিয়েছেন, তারা এখনো সরকার কিংবা সেরামের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা পাননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।