পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাড়ার বন্ধুদের মাধ্যমে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে আমার একমাত্র সন্তান। ছেলেকে রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আত্মীয় স্বজনদের পরামর্শে সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে এমন প্রত্যাশায় বিয়েও করিয়েছি। ছেলের ঘরে তার সন্তানও জন্ম নিল। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। নেশার কারণে শরীরের মূল যন্ত্রগুলি অকেজো হয়ে ধীরে ধীরে প্রাণ হারায় আমার মানিক। অশুসিক্ত চোখে এক অসহায় এডভোকেট বাবার এমন আর্তনাদই প্রমাণ করে দিনাজপুরে মাদকে ভয়াবহতা। এসএসসি ও এইচএসসিতে বোর্ডের সেরা ছাত্রটির মত কোন মেধাবী তরুণ যেন এমন ধ্বংসের মুখে না যায় সে আঁকুতিই জানিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, রংপুর বিভাগের সর্ব পশ্চিমের জেলা দিনাজপুর উত্তরে পঞ্চগড় দক্ষিণ পূর্বে লালমনিরহাট জেলা সীমান্ত বেষ্টিত। এসব এলাকার সবদিক থেকেই বানের পানির মত ফেন্সিডিল ঢুকছে। ব্যাপক চাহিদা এবং লাভজনক হওয়ায় নিম্ন থেকে বিত্ত সকল শ্রেণির এমনকি সকল পেশার মানুষ জড়িত হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর আগেও পায়ে হেটে, সাইকেল, ভ্যানে মাদক পাচার হতো এখন তা বিলাসবহুল কোটি টাকার গাড়িতে পাচার হচ্ছে। মাদকের জন্য চুরি, ডাকাতি ছিনতাই হত্যার মত ঘটনা নিত্য-নৈমিক্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
দিনাজপুর জেলার মাদকের ব্যবহারে নিয়ে বলতেই প্রথমেই এসে যাবে ঐতিহ্যবাহী রামসাগর ও তার আশপাশ এলাকার কথা। শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে এই ঐতিহাসিক এলাকার দিকে বিকেল গড়ালেই শত শত মোটরসাইকেল ছুটে যেতে দেখা যায়। মোটর সাইকেল আরোহীদের মধ্যে অধিকাংশ যুবক-যুবতি। গন্তব্যে পৌঁছানো মাত্র চলে আসে সরবরাহকারী। এক কিলোমিটার দীর্ঘ ঐতিহাসিক রামসাগরের সৌন্দর্যময় গাছ আর দীঘির পাড়ে বসে ফেন্সিডিল সেবনের দৃশ্য ওপেন সিক্রেট। শুধু রামসাগর নয় শহরের রাজবাটি, বটতলি হাসপাতাল মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা লাল চা খাওয়ার জন্য যুবকদের ভীড়। আসলে এখানে লাল চায়ের অন্তরালে গøাস ভর্তি ফেন্সিডিল খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। এ অবস্থা বিরলের ধর্মপুর, নাড়াবাড়ী, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া, বোদা, নীলফামারীর নীলসাগর, তিস্তা ব্যারেজ, সৈয়দপুরসহ লালমনিরহাট, গাইবান্ধা কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা ও বিনোদন কেন্দ্রগুলি। সবাই জানে কিন্তু কিছুই করার নেই কারো।
এ বিষয়ে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন মাদকের ব্যাপারে আমি জিরো টরালেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। জেলায় যোগদানের পর থেকেই আমি সকল থানার ওসিসহ সকল কর্মকর্তাদের বলে দিয়েছি মাদক নিয়ে কোন অভিযোগ আসলে কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি জানান, মাদক সেবনকারী ও সরবরাহকারী কাউকেই ছাড় দেয়া হচেছ না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাজিউর রহমানের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, মাদকের ব্যাপারে আমরা সোচ্চার। বিভিন্ন এলাকায় চেক পয়েন্ট বসিয়ে মাদক আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মাদক সর্ম্পকে সচেতনা সৃষ্টির লক্ষে অধিদপ্তর কর্তৃক নেয়া পদক্ষেপ হিসাবে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে, জ্যামিতি বক্স তুলে দেয়া হচ্ছে। যাতে মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন করোনার কিছুটা এই পদক্ষেপে কিছুটা ভাটা পড়েছে। তবে স্কুল কলেজ খুললে আবারও তা জোরদার করা হবে।
তবে আইন শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা ও সীমান্ত এলাকার সচেতন নাগরিকদের সূত্র মতে বাংলাদেশের যুব সমাজের ধ্বংসের অন্যতম ফেন্সিডিল মূলত ভারত থেকেই আসছে। সূত্রটির মতে ২০১১ সালে ভারতের সাথে মাদক সংক্রান্ত আলোচনায় ভারতের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠা ফেন্সিডিল তৈরির কারখানা’র তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেই কারাখানাগুলি বন্ধ করতে পেরেছে কিনা ভারত কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচেছ না। তবে সীমান্তে হাত বাড়ালেই ফেন্সিডিল পাওয়া যাচ্ছে তা এখনও আগের মতই রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।