Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে আলেকজান্ডারের দেশ মেসিডোনিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০৬ পিএম

মুসলমানের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে আলেকজান্ডারের দেশ মেসিডোনিয়ায়। মেসিডোনিয়ার প্রাতিষ্ঠানিক নাম ‘রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া’। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটেনিকার মতে, মেসিডোনিয়ার জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ মুসলিম। তবে পিউ ফোরাম ডটঅর্গের তথ্য মতে, মুসলিমদের সংখ্যা এখন ৩৯.৩ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে ৫৬.২ শতাংশে উন্নীত হবে। দেশটিতে ৫৮০টি মসজিদ এবং একাধিক ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। উসমানীয় শাসনামলে গড়ে তোলা পাঁচ শতাধিক মসজিদ এখনো মেসিডোনিয়ায় টিকে আছে। সেন্টার জুপা, দেবার, স্ট্রুগা ও প্লাসনিকাসহ দেশটির উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিমের কিছু অঞ্চলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতাও রয়েছে। আল জাজিরাসহ বিভিন্ন তথ্যসূত্র অবলম্বনে ইনকিলাব পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন মোহাম্মদ আবদুল অদুদ। সূত্র : আল জাজিরা, মালুমাত

জানা যায়, স্পেনে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মুসলিম ধর্ম প্রচারক ও জ্ঞানান্বেষীরা ছড়িয়ে পড়েন। তাদের মাধ্যমে মেসিডোনিয়া সর্বপ্রথম ইসলামের প্রচার ও প্র্রসার হয়। মুসলিম ধর্ম প্রচারকরা সেখানে মসজিদ ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৩৮২ খ্রিস্টাব্দে উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়া বিজয় করেন এবং তাদের সহযোগিতায় সেখানে দ্রুত ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ'শ বছর তা তুর্কি শাসনাধীন ছিল। তা ইয়ালেত ও রুমেলিয়া প্রদেশের অংশ হিসেবে শাসিত হতো। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত প্রথম বলকান যুদ্ধ পর্যন্ত তুর্কিরাই কার্যত মেসিডোনিয়া শাসন করে। উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়ায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

১৯২১ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ৩১ শতাংশ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে আসে। ১৯৭১ সাল থেকে মুসলিম জনসংখ্যা আবারও বাড়তে থাকে। মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনগণের বেশির ভাগ আলবেনীয় ও তুর্কি বংশোদ্ভূত। বাকিরা বসনিক ও স্থানীয়। মেসিডোনিয়া ইউরোপিয়ান দেশ হলেও এখানকার মুসলিম জীবনে তুর্কি সংস্কৃতির প্রভাবই বেশি। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে ধর্মীয় উদযাপন পর্যন্ত সব কিছুতেই তারা তুর্কি সংস্কৃতির অনুসারী। দীর্ঘদিন তুর্কি শাসনাধীন থাকাই এর প্রধান কারণ। দেশটির মুসলিমদের এক-তৃতীয়াংশই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেন এবং তাদের প্রায় অর্ধেক গুরুত্বের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন। দেশটির মুসলিম জনগণের সর্বোচ্চ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুল ইফতা মেসিডোনিয়া। সরকার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-সংস্থায় দারুল ইফতা ই মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে।

উল্লেখ্য, ঋতু ও রূপবৈচিত্র্যের কারণে ইউরোপীয় পর্যটকদের কাছে মেসিডোনিয়া বেশ প্রিয়।প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলো দেশটিতে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। দেশটিতে আছে বিভিন্ন ধর্মের অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শন। বলা দরকার ইতিহাসখ্যাত ‘আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট কিং’-এর জন্ম এই মেসিডোনিয়াতেই। ২৫ হাজার ৭১৩ বর্গকিলোমিটারের দেশ মেসিডোনিয়ার জনসংখ্যা ২০ লাখ ৭৭ হাজার ১৩২ জন। রাজধানীর নাম স্কোপজে। ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করে দেশটি। বলকান অঞ্চলের মুসলিমদের মধ্যে মেসিডোনিয়ান মুসলিমরাই রমজানের আগমনে সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়। মেসিডোনিয়ার সর্বস্তরের মুসলিমরা, এমনকি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও পণ্ডিতরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলে রমজানকে স্বাগত জানায়। সাধারণ মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদে মসজিদে ধর্মীয় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথিদের উপস্থিত করা হয়। কখনও কখনও বলকান অঞ্চলের অন্যান্য মুসলিম দেশ থেকে ইসলামিক স্কলারদের আমন্ত্রণ করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমদের মতো রমজানে মেসিডোনিয়ান মুসলিমরাও ইবাদত-বন্দেগিতে গভীরভাবে মনোযোগী হন। দিন-রাতের দীর্ঘ সময় মসজিদে কাটায়। প্রতিটি মসজিদে ধীরস্থীরভাবে নিয়মমাফিক তারতিলের সঙ্গে কোরআন খতম করা হয়।



 

Show all comments
  • নোমান ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:৫৯ পিএম says : 0
    এই দুনিয়ায় ইসলাম কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ