Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৫ কিলোমিটারজুড়ে খানা-খন্দ

ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের মুশুরী থেকে কাঞ্চন ব্রিজ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের মুশুরী থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ ও গর্তের কারণে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গর্ত আবার কোথাও সড়ক পাশের খাদে হেলে পড়ায় চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অযুহাত ভারী যানবাহন চলাচল অন্যদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ টেকসই নির্মাণে ব্যর্থ ঠিকাদার।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শীতলক্ষ্যার পশ্চিমপার দিয়ে রাজধানী ডেমরা হতে রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া, রূপগঞ্জ সদর ও দাউদপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সড়ক রয়েছে। এ সড়কে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আসা যানবাহনসহ নির্মাণাধীন পূর্বাচল উপশহরের নির্মাণসামগ্রী বহন করা হচ্ছে। পাথর ও কয়লাবাহী ভারী যানবাহন বেপরোয়াভাবে চলাচল করায় ২ বছর যাবৎ বেহাল দশা সড়কটির। পাশেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকায় বাধ্য হয়ে রোগীরা এ সড়কে যাতায়াত করছেন। বেহাল দশা থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী যানবাহন ও সাধারণ লোকজন।

মুশুরী এলাকার বাসিন্দা রুবেল মাহমুদ প্রিন্স বলেন, মুশুরী থেকে থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তায় স্থানে স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়ে জন ভোগান্তি বেড়ে গেছে। এ পথে তিনগুণ ভাড়া দিয়েও যানবাহন নেয়া যায় না।

সরেজমিন ঘুরে আরো দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ের ২৪ ফুট প্রশস্ত সড়কটির মাত্র ১২ ফুট পিচ করা হয়েছে। সম্প্রতি উভয়পাশে ৩ ফুট করে প্রশস্তকরণ কাজ করার কথা থাকলেও এখনো কাজের কোন আলামত দেখা যায়নি। একই সড়কের ভিংরাব এলাকার প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ রাস্তায় পাশ ধ্বসে পুকুরে ও ধানী জমিতে পড়েছে। ফলে একপাশ দিয়ে চলছে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন।

অন্যদিকে স্থানে স্থানে এলজিইডির রাস্তা কেটে বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির জমি উন্নয়নের নামে শীতলক্ষ্যা থেকে বালি ফেলার জন্য বসানো হয়েছে ড্রেজার পাইপ। এতে গতি নিয়ে চলতে পারছে না যানবাহন। অতিরিক্ত সময় ব্যয় ও ঝাক্কিঝুঁকি মোকাবেলা করতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। একই সড়কের দাউদপুর এলাকায় থাকা অর্ধশত ইটভাটায় ইট বহনের কাজে অবাধে অবৈধ ইছারমাথার রয়েছে দৌড়াত্ম্য। এসব যানবাহনে ইট, বালি ও পাথর বহন করায় স্থানীয় এ সড়কটির স্থায়িত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না বলে জানান রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূইয়া রানু। তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে এ রাস্তা উন্নয়নের জন্য বরাদ্ধ না থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ চরম দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয় লোকজন। উপর মহলে বিষয়গুলো জানিয়েছি। শিগগিরই এ রাস্তা মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও এটা ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা নয়। আমরা স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে ভোগান্তি পোহাচ্ছি।

এদিকে এ সড়কের মেরামতের জন্য নিয়মিত বরাদ্ধ এলেও ৬ মাস না যেতেই ভেঙে যায় এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট। কারণ হিসেবে রূপগঞ্জ সদর ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল কাইউম বলেন, এই এলাকার রাস্তা ঘাট হালকা যান চলাচলের জন্য নির্মাণ করলেও স্থানীয় ইটভাটা মালিকদের ইছারমাথা ও ইটবহনকারী ট্রাক চলাচল করে রাস্তা ঘাট ভেঙে যায়। এতে এলজিইডির রাস্তাও খানা-খন্দে পরিণত হয়। এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এসব বিষয়ে এলজিইডি বিভাগের রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এনায়েত কবীর বলেন, রূপসী-কাঞ্চন সড়কটি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির অর্থায়নে ৪ লেনে উন্নীত করার জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ নিয়ে কাজ চলমান। এ সড়কটির কাজ শেষ হলে পশ্চিমপাড়ের ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে এ সড়কের দাউদপুর অংশের কাজ শুরু হয়েছে। আশাকরি পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যেই রূপগঞ্জের অংশে থাকা এলজিইডির অধীনে সড়কগুলোর সমস্যা দূর হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাঞ্চন-ব্রিজ

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ