প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
শেষ পর্যন্ত পৃথিবীকে বিদায় জানাতে হলো বিশিষ্ট অভিনেতা আব্দুল কাদেরকে। তবে বিদায় নিলেও তার অভিনয় এবং কর্ম দর্শকের মনে চিরজাগুরুক হয়ে থাকবে। অসাধারণ অভিনয় দিয়ে তিনি যুগের পর যুগ দর্শকের মনিকোঠায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’-এর ‘বদি’ চরিত্র থেকে হানিফ সংকেতের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি’র ‘মামা’ চরিত্রে ‘বিবেক’ হয়ে তিনি দর্শকের মনে চিরদিনের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন। তার অসাধারণ ও স্বাভাবিকি অভিনয়শৈলী দর্শককে ভাবিয়েছে এবং আনন্দ দিয়েছে। আব্দুল কাদের ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই তার অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল। স্কুলে নাটক করতেন। তখন থেকেই তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। সারাজীবন অভিনয় করবেন, এমন করবেন এমন চিন্তা ছিল না। তবে যার ভেতর অভিনয়ের বীজ বপিত হয়েছে তা বৃক্ষে পরিণত হবে না, তা ভাবা যায় না। হয়েছেও তাই। একদিকে পড়াশোনা অন্যদিকে অভিনয়- দুই ক্ষেত্রেই সমান পারদর্শীতা প্রদর্শন করেন। মুন্সিগঞ্জের সোনারং হাইস্কুলে পড়ার পর বন্দর হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও এমএ করেন তিনি। অর্থনীতিতে সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনা এবং বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরির পর ১৯৭৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাটাতে যোগদান করেন। আমৃত্যু সেখানেই কর্মরত ছিলেন।১৯৭২-৭৪ পর পর তিন বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুহসীন হল ছাত্র সংসদের নাট্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে আন্ত:হল নাট্য প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন মুহসীন হলের নাটক সেলিম আল দীন রচিত ও নাসির উদ্দিন ইউসুফ নির্দেশিত ‘জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন’-এ অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রযোজিত বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ জ্ঞানের অনুষ্ঠান ‘বলুন দেখি’তে চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে পুরস্কারও লাভ করেন আবদুল কাদের। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সাল থেকে থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য এবং চার বছর যুগ্ম-সম্পাদকের ও ছয় বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থিয়েটারের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকায় আমেরিকান কলেজ থিয়েটার ট্রুপ কর্তৃক আয়োজিত অভিনয় কর্মশালায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭২ সাল থেকে টেলিভিশন ও ১৯৭৩ সাল থেকে রেডিও নাটকে অভিনয় শুরু করেন।। টেলিভিশনে তার অভিনীত প্রথম কিশোর ধারাবাহিক নাটক এসো গল্পের দেশে। আবদুল কাদের বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকারদের একমাত্র সংগঠন টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ টেনাশিনাস-এর সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। থিয়েটারের প্রায় ৩০টি প্রযোজনায় প্রতিটিতে অভিনয় এবং ১০০০টিরও বেশি প্রদর্শনীতে অভিনয় করেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটকের মধ্যে রয়েছে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, এখনও ক্রীতদাস, তোমরাই, স্পর্ধা, দুই বোন, মেরাজ ফকিরের মা ইত্যাদি। ১৯৮২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবে বাংলাদেশের নাটক থিয়েটারের পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়-এ অভিনয় করেন তিনি। এছাড়া দেশের বাইরে জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, দুবাই এবং দেশের প্রায় সবকটি জেলায় আমন্ত্রিত হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেছেন। এছাড়া টেলিভিশনে দুই হাজারের বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্র ‘রং নাম্বারসহ অসংখ্য বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন এই অভিনেতা। তবে নিয়মিত ছিলেন হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইত্যাদির মামা চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন। আব্দুল কাদেরের বর্নাঢ্য অভিনয় জীবন দর্শকের মনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে তার সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।