Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তথ্যে অসংগতি, প্রশ্নের মুখে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:১১ পিএম

গত ৫ জুন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা অনেকটা গোপনেই তাদের করোনা ভ্যাকসিনের লেট স্টেজ পর্যায়ে ক্লিনিকাল পরীক্ষায় পরিবর্তন আনেন। ‘গোপনীয়’ চিহ্নিত একটি নথিতে উল্লিখিত একটি সংশোধনীতে তারা বলেছে যে, তারা অংশগ্রহণকারীদের একটি নতুন দল গবেষণায় যুক্ত করছে।

বড় আকারের গবেষণার ক্ষেত্রে বিষয়টি সামান্য মনে হতে পারে। তবে এটি এমন একটি ভুলকে নির্দেশ করছে যার ফলাফল সম্ভবত সুদূরপ্রসারী হবে। যুক্তরাজ্যের অনেক সেচ্ছাসেবীকেই পরীক্ষাকালীন সময়ে তাদের অজান্তেই ভ্যাকসিনের কেবলমাত্র অর্ধেক দেয়া হয়েছিল। নতুন স্বেচ্ছাসেবীরা এখন সঠিক ডোজ পাবেন। পরীক্ষাও চলতে থাকবে। অক্সফোর্ডে এই ভ্যাকসিনের সাথে অনেকেই জড়িত। যুক্তরাজ্যের একটি ওষুধ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনকাও তাদের তাদের প্রতিষেধকের অংশীদার। অ্যাস্ট্রাজেনেকার বক্তব্য, না বুঝেই ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেয়া হয়েছিল। অক্সফোর্ড বলছে, ভুল করে নয়, বিস্তারিত আলোচনার পরেই অর্ধেক ডোজ টিকা দেয়া হয়েছিল।

কোভিড ভ্যাক্সিনের অব্যর্থ ডোজ ঠিক করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরস্পরবিরোধী ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি আরও বেড়েছে। ভ্যাক্সিন ডোজ নির্ধারণের প্রক্রিয়া নিয়ে বয়ানের ফারাক প্রথম নজরে পড়ে সংবাদসংস্থা রয়টার্স-এর। বিতর্কের কেন্দ্রে শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী স্বল্প কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক, যাদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেয়ার পরে সম্পূর্ণ ডোজ দেয়া হয়। প্রথমে যদিও তাদের দুটি সম্পূর্ণ ডোজ দেয়ারই কথা ছিল। ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, অর্ধেক ডোজের টিকা ভাইরাস প্রতিরোধে ৯০ শতাংশ সফল এবং সম্পূর্ণ দুটি ডোজের টিকা সে ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ সফল।

১০ দিন অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান গবেষক রয়টার্স-কে জানান, না বুঝেই ট্রায়ালের প্রথম দফায় স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেয়া হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে সেই ডোজই মোক্ষম প্রতিষেধক হয়ে দেখা দিয়েছে বলে দাবি গবেষকদের। সেই দাবি কিন্তু খারিজ করে দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী। সোমবার তিনি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ভুল করে নয়, বিস্তারিত আলোচনার পরেই স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেয়া হয়েছিল।

এ দিকে দুই অংশীদারের দুই রকম ব্যাখ্যায় এই কোভিড ভ্যাক্সিনের সাফল্যের দাবি নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর জেরে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন পাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হল। একই সঙ্গে ওই টিকার প্রতি সাধারণের আস্থাতেও চিড় ধরল বলে তাদের ধারণা। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ প্রতিরোধ ও সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়েনর রিলির মতে, ‘পরস্পরবিরোধী এই বয়ান নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ভ্যাক্সিনের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমাদের এমন কিছু করা উচিত না যাতে সেই বিশ্বাসের ভিত নড়ে যায়।’ মতান্তরের জেরে শেয়ারবাজারেও খেসারত দিতে হচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে। সম্প্রতি তাদের শেয়ারের দর প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থার তুলনায় বেশ কিছুটা পড়েছে। সূত্র: ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ