Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বশেমুরবিপ্রবিতে ২৬ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:৫২ এএম

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকাশিত অডিট আপত্তি থেকে এ তথ্য জানাগেছে। অধিদপ্তর আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ আপত্তির আলোকে উপযুক্ত জবাব দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূইয়াকে চিঠি দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডকে কার্যাদেশ ও ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা অগ্রীম প্রদান করা হয়। মৌখিক নির্দেশে এটি করা হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের নামে অগ্রণী বাংক বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ১ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ৪৬ টাকা মূল হিসাব থেকে সরিয়ে নেন। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তিনি ওই টাকা ১৪ নভেম্বর আবার আগের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৮ জন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তিত হয়েছে। আমি ৯ম প্রকল্প পরিচালক হিসেবে গত ২০১৯-২০ বছরের ১৭ জুলাই প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহন করি। অডিট অধিদপ্তর আমার দায়িত্ব গ্রহনের আগের বিষয়ে আপত্তি দিয়ে জাবাব চেয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আমি জবাব প্রস্তুত করছি। গত ২০১৯ সালের ৩০ জুন অফিস নোটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডকে কার্যাদেশ ও অগ্রিম চেক প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন তৎকালিন ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন ও প্রকল্প পরিচালক এম.এ সাত্তার। এটি কোনভাবেই মৌখিকভাবে করা হয়নি। এরপর প্রকল্প পরিচালকের পদ থেকে এমএ সাত্তার পদত্যাগ করেন। ভিসি জোর করে আমাকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেন। ভিসির চাপে বাধ্য হয়েই ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই শিপইয়ার্ডকে অগ্রিম প্রদানের ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেকে পিডি হিসেবে আমি স্বাক্ষর করেছি। তারপর ভিসি বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন পদত্যাগ করেন। এসব কারণে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আমি তেমন কোন কাজ করতে পারিনি।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয় প্রকল্পের নামে নতুন এ্যাকাউন্ট করে ১ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ৪৬ টাকা স্থানান্তরের কথা স্বীকার করে বলেন, মূল এ্যাকাউন্ট থেকে সুদের টাকা আলাদা করে সরকারি কোষাগারে সরাসরি জমা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের একাউন্টে টাকা স্থানাস্তর করা হয়। এ এ্যাকাউন্টটি আমার ও ডিডি প্লানিং এর যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হত। আমি আমার নামে এ্যাকাউন্ট খুলে কোন টাকা স্থানাস্তর করিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক প্লানিং তুহিন মাহমুদ বলেছেন,বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকে অগ্রিম দেয়ার বিধান রয়েছে। সে কারণে খুলনা শিপইয়ার্ডকে অগ্রিম চেক দেয়া হয়েছে। এখানে প্রকল্প পরিচালক অশিকুজ্জামন ভূইয়া শুধু চেকে স্বাক্ষর করেছেন মাত্র। নতুন একাউন্টে টাকা স্থানাস্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি কোষাগারে সরাসরি মূল এ্যাকাউন্টের সুদের টাকা জমা দিতে এটি করা হয়েছিলো। এর আগেও প্রকল্প পরিচালকরা এ ধরণের এ্যাকাউন্ট খুলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এ.কিউ.এম মাহবুব বলেন, বিষয়টি সরকার, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ইউজিসি অবগত আছে। তাই উর্ধতন মহলকে এটি আমার আবগত করার প্রয়োজনীতা নেই।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ