Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথম দিনেই স্থবির সিলেট

পাথর কোয়ারী খোলার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট জনজীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ উবার ও পাঠাওয়ের বিরুদ্ধে যাত্রীদের জিম্মির অভিযোগ

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

পাথর কোয়ারী খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেট বিভাগজুড়ে বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’র ডাকা ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার স্থবির হয়ে পড়ে সিলেটের রাস্তাঘাট। গতকাল ভোর থেকে ধর্মঘট সফলের লক্ষে রাস্তায় নেমে পড়েন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে এম্বুলেন্স, বিদেশ যাত্রী, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্র ও জরুরি ঔষধ বহনকারী গাড়ি ধর্মঘটের আওতায় থাকবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনের আহবায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল।

অপরদিকে, সিলেট জেলায় একই সাথে পালিত হয় সি এন জি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন ও সিলেট জেলা অটোরিকশা/ অটোটেম্পু শ্রমিক জোট ঐক্য পরিষদের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি। তবে ধর্মঘটের সুযোগে রিকশাগুলোও যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছে অতিরিক্ত। একই অবস্থায় ছিল রাইড শেয়ারভিত্তিক অ্যাপস কোম্পানি পাঠাও-উবারেরও।

যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, রাইট শেয়ারিংয়েও জিম্মি আচরণ শুরু হয়েছে। অ্যাপস ভিত্তিক ভাড়ায় যাত্রী না নিয়ে কন্ট্রাকে যাতায়াত করছে তারা। ফলে বাড়তি পয়সা গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাছাড় একজনের বদলে দু-তিনজন যাত্রীও বহন করছে রাইডাররা। সেই সঙ্গে নেই যাত্রীদের মাথার হেলমেট। চালকরা বলছেন, অ্যাপসভিত্তিক চললে অনেক সময় যাত্রী দূরে দূরে থাকে। এতে সময় বেশি লাগে। কিন্তু হাতের কাছে যাত্রী নিলে সে সময় লাগে না। এছাড়া কন্ট্রাক্টে লাভও বেশি হচ্ছে। ভাড়াও দ্বিগুণেরও বেশি আসছে। ধর্মঘটের কারণে যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে রাইড শেয়ারিংয়ের বাইক কিংবা প্রাইভেটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছে। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে ধর্মঘটের প্রথমদিন অতিবাহিত করে সিলেটবাসী।

এদিকে, গতকাল ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট হলেও এর আগ থেকেই সিলেটের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নেন পরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। তারা কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের রাস্তায় চলতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখি, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চন্ডিপুল ও তেলিবাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও রাস্তায় পিকেটিং করেন শ্রমিকরা। তবে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ধর্মঘট আহবানকারী সংগঠন দাবি করেছে, ধর্মঘটের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। সেখানকার বাস, ট্রাক, ট্যাংকলরি, মাইক্রোবাস, লেগুনা ও সিএনজিসহ সকল প্রকার পরিবহনের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে মিছিল, সমাবেশ করেছেন।

গতকাল সকাল থেকে দিনভর সিলেট জেলার সকল উপজেলায় মিছিল-সমাবেশ করেন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আলহাজ¦ গোলাম হাদী ছয়ফুল, সদস্য সচিব শ্রী আবু সরকার। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও সিলেট জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ রিমাদ আহমদ রুবেল, সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি আব্দুস সালাম, সহ-সভাপতি জুবের আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মো. আমির উদ্দিন প্রমূখ।

মিছিল-সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১০ লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার্থে আমরা মানবতার জন্য শান্তিপূর্ণ ভাবে ৭২ ঘন্টার ধর্মঘট পালন করছি। আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালিক-শ্রমিকদের জীবন রক্ষা করবেন।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গত সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সমাধান না হওয়ায় সিলেট বিভাগে তিনদিনের এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন পাথর সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিলেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ