Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১১৪ বছর পর ক্ষমা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

ওটা বেঙ্গাকে কেউ মনে রাখেনি সেভাবে। তবে ইতিহাসের চর্চাকারীদের কাছে নামটার অসীম গুরুত্ব। কেননা ওটা বেঙ্গা নিছক রক্তমাংসের এক মানুষই নন। বরং সভ্যতার বুকে তিনি নির্লজ্জ বৈষম্যের এক প্রতীক।
১৮৮৩ সালে মধ্য আফ্রিকার কঙ্গোতে জন্ম ওটা বেঙ্গার। বেলজিয়ামের সেনার আক্রমণে তার গ্রাম ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তিনি ধরা পড়েছিলেন ত্রীতদাস ব্যবসায়ীদের হাতে। ১৯০৪ সালে মার্কিন নাগরিক স্যামুয়েল ফিলিপস ভার্নার তাকে কিনে পাঠিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯০৬ সালে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানায় বানরের সাথে একই খাঁচায় ওটা বেঙ্গাকে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছিলো। সে ছিলো দেখতে ছোটখাটো। গায়ের রং মিশমিশে কালো। তার উপরে দাঁতগুলো অদ্ভুত তীক্ষ্ন। ঠিক যেন ছুরির ফলা। ওই দাঁতের আলাদা আকর্ষণ ছিল দর্শকদের কাছে। এমনও শোনা যায়, কোনও কোনও দিন ওটা বেঙ্গার খাঁচার সামনে জড়ো হয়ে যেতেন শ’পাঁচেক লোক! কেবল তার জন্যই রাতারাতি দর্শকসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।

পরে মুক্তি পেলেও আর আফ্রিকায় ফিরতে পারেননি বেঙ্গা। ক্রমে বিষন্নতা গ্রাস করে তাকে। একদিন লুকিয়ে রাখা একটা বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করে বসেন অসহায় মানুষটি। তিনি মারা গেলেও তার প্রতি করা অন্যায় মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসাবে রয়ে গেছে। বারবার চেষ্টা হয়েছে, ‘ওসব বানানো কথা’ বলে উড়িয়ে দেয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের আগস্ট মাসে ক্ষমা চেয়েছে ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানা। জানিয়েছে, ওভাবে একটা মানুষকে পশুদের মধ্যে রেখে দিয়ে ভাল কাজ করেনি তারা। তবে এই ক্ষমা চাওয়ার জন্য তারা সময় নিয়েছে মাত্র ১১৪ বছর! এই না হলে সভ্যতা! সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ