Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেবাবঞ্চিত নান্দাইলের কৃষক

পরিত্যক্ত বিএস কোয়ার্টার

শংকর চন্দ্র বনিক, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কৃষি বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিত বিএস কোয়ার্টারগুলোর করুণ অবস্থায়। এ উপজেলায় প্রতি ইউনিয়নে ১টি করে মোট ১২টি বিএস কোয়ার্টার রয়েছে। এই কোয়ার্টারগুলোর বেশির ভাগই এখন পরিত্যাক্ত। তাই এগুলোতে বসছে না কোন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। যার ফলে কৃষি সেবা গ্রহণ থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকগণ, ঠিক তেমনি পরিত্যক্ত ভবনগুলো মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। 

এরই মধ্যে বীর বেতাগৈর ইউনিয়ন পরিষদের দখলে রয়েছে বেতাগৈর বিএস কোয়ার্টার, শেরপুরের বিএস কোয়ার্টারের ৫০% চলে গেছে নদীর গর্ভে, খারুয়ার বিএস কোয়ার্টারের ৫০% চলে গেছে ব্যক্তি দখলে। এ যেন দেখার কেউ নেই। যদিও কৃষি নির্ভরশীল দেশ বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড দৃশ্যমান হলেও এ উপজেলায় বিএস কোয়ার্টারগুলোতে তেমন উন্নয়নের ছোয়াঁ লাগেনি।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬২ সনের দিকে তৎকালিন সরকার এই ভবনগুলো প্রথমে সিড গোডাউন (বীজাগার) হিসেবে নির্মাণ করে। পরবর্তীতে এই কর্মসূচি বাতিল করা হলে সরকার সিড গোডাউনগুলো ১৯৮০ সালের দিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মী-বøক সুপার ভাইজারদের (বর্তমানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) বসবাসের জন্য সংস্কার করে কোয়ার্টারে পরিনত করা হয়। মাত্র ৫০ টাকা ভাড়ায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এসব কোয়ার্টারে থাকতেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব ব্যয়বহুল কোয়ার্টারগুলো মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি বিভাগের ব্লক সুপার ভাইজারদের (বিএস) আবাসিক এবং অফিস হিসেবে ব্যবহারের কথা থাকলেও বর্তমানে বেশির ভাগ কোয়ার্টারেই বিএসরা বসবাস করছেন না। তাই কোয়ার্টারগুলোতে বসবাস না করায় সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে এগুলো এখন অনেকটাই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেকটাই ফাঁকা ও নির্জন হওয়ায় তা বিভিন্ন জীবজন্তুর আশ্রয়স্থল, অপরাধীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।
দীর্ঘদিন নজরদারী না রাখায় চুরি হয়ে গেছে কোয়ার্টারগুলোর দরজা-জানালা। এমনকি এসব ভবন থেকে ইট খুলে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কোন কোন কোয়ার্টার এলাকার মাটিও কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীপুর ও রাজগাতী ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আধুনিক প্রযুক্তি ও ভাল বীজ সরবরাহের লক্ষে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের থাকার কথা থাকলেও এসব কোয়ার্টারগুলোতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা না থাকায় তাদের কৃষি বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে উপজেলা সদরে যেতে হয়।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, কোয়ার্টারগুলো বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আনিছুজ্জামান জানান, এসব পরিত্যক্ত কোয়ার্টারগুলো ভেঙে ওই স্থানে ইউনিয়নের কৃষকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কর্মচারী কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএস-কোয়ার্টার
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ