পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেই পুরনো খেলা। নাটক-সিনেমার মতোই পুরনো ডায়ালগ। হিন্দুত্ববাদী চেতনার একই পাত্র-পাত্রীর ইসলাম বিদ্বেষ। ইসলামের বিরুদ্ধে বিয়োদ্গার এবং দেশবরেণ্য আলেম, ওলামা-মাশায়েখের চরিত্র হননের অপপ্রয়াস। পশ্চিমাদের সন্ত্রাস দমনের নামে সারা বিশ্বে ফেরি করা ‘জঙ্গিবাদ’ শব্দকে পুঁজি করে ‘ইসলাম বিদ্বেষ মিশন’ নিয়ে মাঠে নেমেছেন ওরা। আর ওদের বিবেকের চালিকাশক্তি হয়ে গেছে যেন দিল্লির সাউথ ব্লক। মোদি সরকারের উদ্বেগ নিয়ে ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া ‘বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থা উত্থানে উদ্বিগ্ন ভারত’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সেই উদ্বেগ ‘মানদন্ড’ ধরে ইসলাম ও দেশের প্রখ্যাত আলেমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন কিছু বুদ্ধিজীবী ও সংগঠন। ‘সব শিয়ালের এক রব’ হুক্কাহহুয়া’র মতোই দেশের দ্বীনি আলেমদের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এরা এতোই একচোখা নীতিতে বিশ্বাসী যে, দিল্লির চেতনার বাইরে এদের মস্তিস্কে কিছু ঢোকে না। বাংলাদেশে ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের মৌলবাদী হিসেবে প্রচার করছেন; অথচ ভারতের বিজেপি নেতাদের ট্রেন থেকে জীবন্ত মানুষ টেনে হত্যা করে পুড়িয়ে ফেলার লোমহর্ষক দৃশ্য এবং আসামের ৬শ’ মাদরাসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত এদের বিবেকে নাড়া দেয় না। এ বছর সীমান্তে বাংলাদেশী ৪৫ জনকে হত্যা করেছে বিজেপি। এসব নৃশংস হত্যাকান্ড এদের হৃদয়ে নাড়া দেয় না। ভারতে কথায় কথায় মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন, অমিত শাহসহ বিজেপি নেতাদের ‘মুসলমানদের বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলা হবে’ হুমকি এদের আহত করে না।
টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত মোদি সরকারের তথাকথিত চরমপন্থা উদ্বেগ যেন এদেশের কিছু ইসলামবিদ্বেষী বুদ্ধিজীবীর কাছে মানবাধিকার-সংবিধান। দিল্লির পত্রিকায় বিজেপির যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে সে কারণে দেশের বরেণ্য আলেমদের চরিত্র হননে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মুখচেনা বুদ্ধিজীবীরা। এরা এখন দেশের সুপরিচিত আলেম-ওলামাদের গায়ে ‘জঙ্গি তকমা’ লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সরকারের কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তিকেও এরা প্ররোচিত করছেন। মরহুম শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক, চরমোনাই পীর মরহুম সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করিমের পরিবার এবং প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর মতো দেশবরেণ্য আলেমদের নামে ‘জঙ্গি তকমা’ জুড়ে দিয়ে প্রাণান্তকর প্রচারণায় নেমেছেন।
এটা ঠিক, দেশের আলেম-ওলামা ও ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সবাই সমান এটা নয়। আলেমদের কেউ ভুল করছেন না এটাও নয়। কোনো দল ও ব্যক্তি যদি কোনো বিষয়ে অপ্রীতিকর বক্তব্য দেয় বা অপরাধ করেন সে দায় তার। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সে অপরাধের বিচার হবে। হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা যে ৮০ মামলা সক্রিয় করা হয়েছে সেটা আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার। কিন্তু আলেমের বক্তব্য বা একটি ইসলামী দলের কর্মকান্ডের দায় দেশের সব ইসলামী দল বা আলেম সমাজের ওপর চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করছেন অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামসহ কিছু ইসলামী ধারার রাজনৈতিক দল। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বের সময় সংগঠনটির সঙ্গে সরকারের সুসম্পর্ক সবাই জানেন। কিন্তু ভাস্কর্য ইস্যুতে সংগঠনটির কিছু নেতার অতি বক্তব্য এবং কর্মসূচির বিরুদ্ধে সরকার সজাগ। ইতোমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে হেফাজত নেতাদের বৈঠক হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ‘আলোচনা শুরু হয়েছে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে’। এর মধ্যে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী চেতনার মিডিয়ার ইসলাম বিদ্বেষী অপপ্রচারকে পুঁজি করে দেশে এক শ্রেণির ব্যক্তি ও মিডিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে নতুন করে অপপ্রচারে তৎপর হয়ে উঠেছেন। এমনকি দেশবরেণ্য আলেম এবং ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক নেতা শায়খুল হাদিস মরহুম আল্লামা আজিজুল হককে কে না চেনেন? তার নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে ৬ দফা চুক্তি করেছিল। সেখানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ‘কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন করবে না’ অঙ্গীকার ছিল।
মরহুম আল্লামা আজিজুল হকের পরিবারে কোরআনের প্রায় শতাধিক হাফেজ জন্ম নিয়েছেন। তার একজন ছেলের (মাওলানা মামুনুল হক) বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দ্বীনি পরিবারটিসহ লাখ লাখ আলেমের নামে ‘জঙ্গি তকমা’ দেয়ার অপচেষ্টা কেন? মরহুম চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মুহম্মদ ফজলুল করীম এদেশের খ্যাতিমান দ্বীনি আলেম ছিলেন। সমাজের উপর তলা থেকে নীচতলায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে তার লাখ লাখ সুফীবাদী অনুসারী রয়েছেন। তার সব পুত্রই মোফাসসেরে কোরআন এবং দ্বীনের কাজ করছেন।
এই দুটি পরিবারের সদস্যরা বংশপরম্পরায় ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন। মরহুম ফজলুল করীমের ছেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের (চরমোনাই পীর) একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দ্বীনি পরিবারকে জঙ্গির তকমা দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। হেফাজতের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী একজন হক্কানী আলেম। ইসলামের খেদমতে তার ভুমিকা প্রশ্নাতীত। হেফাজতে ইসলামের আমীর নির্বাচিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ‘জঙ্গি তকমা’ লাগিয়ে সরকারকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। আর সরকারের ভিতরের কিছু ব্যক্তি এবং সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিরা ‘জঙ্গি বাজনা’ বাজিয়েই যাচ্ছেন।
সার্বিক চিত্র তথা বাস্তবতায় আমরা কী দেখি? বর্তমান সরকারের নীতি-নির্ধারকরা সত্যিই কি এ ইসলাম বিদ্বেষীদের অপপ্রচারে কর্ণপাত করছেন? নাকি এরা সরকারের কর্মকান্ডকে পাত্তা দিচ্ছেন না? বর্তমান সরকার প্রধানের চেয়ে কি ইসলামবিদ্বেষী এসব বুদ্ধিজীবীর ক্ষমতা বেশি? হিন্দুত্ববাদী চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে সরকারকে বাধ্য করতে চান? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মতৎপরতার দিকে তাকালে আমরা কী দেখি? ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন খাঁটি মুসলমান ছিলেন এবং ধর্মীয় আচারাদি নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিপালন করতেন। বঙ্গবন্ধু ইসলাম ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষা ও প্রসারে যা করেছেন, ইসলামের নামে মুখোশধারী সরকারগুলো তা করেনি। আইন করে মদ-জুয়া-ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ করা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা, মাদ্রাসা বোর্ড স্থাপন, ওআইসি’র সদস্যপদ অর্জনের মত কাজগুলো বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই বাস্তবায়িত হয়েছে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্বে এসে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদ এবং ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে যত কাজ করেছে, অন্য কোন সরকার তা করেনি। আমরা স্বতন্ত্র ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছি; ৮০টি মডেল মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করেছি। কওমী মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছি এবং দাওয়ারে হাদিস পর্যায়কে মাস্টার্স মান দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছি। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইমাম-মোয়াজ্জিনদের সহায়তার জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় সারাদেশে মসজিদ-ভিত্তিক পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। লক্ষাধিক ওলামায়ে কেরামের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই যখন ইসলামের জন্য এতোকিছু করেছেন; তখন ইসলাম বিদ্বেষীদের ইসলামের খেদমতগার হিসেবে পরিচিত আলেমদের বিরুদ্ধে নতুন করে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো ন্যাক্কারজনক বৈকি। দিল্লির হালুয়া-রুটি পাওয়াকে নিশ্চিত রাখতে অন্যের বিরুদ্ধে অনৈতিক কুৎসা রটনা বিবেকবানের কাজ নয়। প্রধানমন্ত্রী কি শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের পরিবার ও চরমোনাই পীরের পরিবারকে চেনেন না? কয়েক বছর আগেও তো হেফাজতের নেতারাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমী জননী’ উপাধি দিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে দিল্লিতে বৃষ্টি হলে ঢাকায় যারা ছাতা ধরে বিজেপির হিন্দুত্ববাদের পক্ষ নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছেন তারা কি সত্যিই সুশিক্ষিত বিবেকবান? পত্রিকায় খবর বের হয়েছে, ভারতের আসামের বিজেপি সরকার ৬শ’ মাদরাসা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওইসব মাদরাসায় লাখ লাখ মুসলিম ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করেন। ওরা সেখানে সংখ্যালঘু। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সামান্য আঘাতে এরা বিবেক জাগিয়ে তোলেন। বিজেপির মাদরাসা বন্ধের ওই অমানবিক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের বিবেকে নাড়া দেয় না? লালমনিরহাটে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে একজনকে হত্যা করে পুরিয়ে মারা হয়েছে। ওই অপরাধকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর স্থানীয় আলেমরাই প্রথম প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অপ্রীতিকর ওই ঘটনা নিয়ে মুখচেনা বুদ্ধিজীবীর বিবেক দংশনের শেষ নেই। একই কান্ডে শোকাতুর কিছু মুখচেনা মিডিয়াও। হায় হায় করে উঠছেন। অপরাধীর বিচারের দাবি যৌক্তিক, ঠিক আছে। কিন্তু ভারতে যখন ট্্েরন থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার পর নিরীহ মুসলমানদের পুড়িয়ে ফেলার লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে তখন এই বুদ্ধিজীবীদের বিবেক জাগ্রত হয় না? যখন গরুর গোশত খাওয়ার অপরাধে (!) ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে তখন এই বুদ্ধিজীবীদের বিবেক কেন ঘুমিয়ে থাকে? হিন্দু ছাড়া সব ধর্মের মানুষকে চেতিয়ে দিয়ে ভারতকে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র করার বিজেপি মন্ত্রীদের ঘোষণা এদের কাছে ‘হিন্দু মৌলবাদী চরমপন্থার উত্থান’ মনে হয় না?
এটা ঠিক, জঙ্গিবাদ বৈশ্বিক সমস্যা। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা করে জেএমবি। এছাড়াও ইসলামের দোহাই দিয়ে ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হলে, ২০০১ রমনা বটমূলে, ২০ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে এবং ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান হামলাসহ অসংখ্যা বোমাহামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পর সরকার জঙ্গি দমনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ওইসব জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আলেম সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছেন। মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছেন। দেশের লাখ লাখ মসজিদে জুম্মার খুৎবার ইমামরা জঙ্গিবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে মানুষকে সচেতন করেছেন। তারা প্রচার করেছেন ইসলাম সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেয় না।
তাছাড়া সব হামলাই যে মাদরাসা পড়–য়াদের মধ্য থেকে হয়েছে তা নয়। হলি আর্টিজানে যারা হামলা করেন তারা সবাই ইংরেজি মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন। প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি, আইন শৃংখলা বাহিনীর দায়িত্বশীলরা বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন এসব হামলায় শুধু মাদরাসা পড়–য়ারাই নয়; বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে পড়–য়া ছাত্ররাও রয়েছে। জঙ্গিনিধন কার্যক্রমে সরকার সাফল্য দেখিয়েছে। দেশের সব শ্রেণির মানুষ কার্যত জঙ্গি হামলাগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল এবং এখনো রয়েছে। কিন্তু ‘চরমপন্থায় ভারত উদ্বিগ্ন’ এমন খবর প্রচারের পর দেশের মুখচেনা বুদ্ধিজীবীর ইসলামবিদ্বেষী মিশন মানুষকে হতবাক করেছে। দাড়িটুপি যেন তাদের ছোঁড়া তীরের টার্গেট। ইসলাম ধর্মে চরমপন্থা বলে কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষ কখনোই কোনো চরমপন্থাকে প্রশ্রয় দেয়নি, দেয় না। বরং ভারতে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী চরমপন্থার উত্থানে সে দেশের নোবেল বিজয়ী ড. অমর্ত সেন, বুকারজয়ী অরুন্ধতী রায়ের মতো দেশবরেণ্য হাজার হাজার ব্যক্তিত্ব উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এমনকি ভারতের কংগ্রেস, বামপন্থী দল, তৃর্ণমূলসহ প্রভাবশালী দলগুলো হিন্দুত্ববাদী চরমপস্থার উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। দেশের আলেম সমাজের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো নয়; আসুন সবাই দেশকে ভালবাসি; দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখি। দিল্লির চেতনার বদলে বাংলাদেশের স্বার্থকে সবাগ্রে প্রাধান্য দেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।