Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ব্রাহ্মণপাড়ায় আমন ধান কাটার ধুম

মো. আবদুল আলীম খান, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় নবান্নের আমেজে ধান কাটার ধুম লেগেছে। রোপা আমন ধান কাটা আর মাড়াই-ঝাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। মাঠে ফলানো সোনালী আমন ধান তোলতে ক’দিন ধরে ব্যস্ত সময় পার করছে এ উপজেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নির্বিঘ্নে ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই আর ধান শুকানোর কাজে কৃষক-কৃষাণিরা নেমেছেন মাঠে। ধান কাটাকে কেন্দ্র করে কৃষক-কৃষাণিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে এখানের বিল ও গ্রামীণ জনপথ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫ হাজার ৩শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ দফতরের দাবি, ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এবার ছাড়িয়ে যাবে।
উপজেলার বিভিন্ন বিল ও গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে মন মাতানো মৌ মৌ গন্ধ ছড়ানো বিলের ধারের পাকা সোনালী আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। হেমন্তে শীতের সকালে সোনালী ধানের মিষ্টি গন্ধে মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে কৃষক-কৃষাণিরা ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই আর খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। মাড়াই-ঝাড়াই শেষ হলে ধান শুকিয়ে গোলায় তোলতে কৃষাণিরা ওই ধান খলায় আর বাড়ির উঠানে ছড়িয়ে রেখে শুকানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এখানকার কন্যা-জায়া-জননীর ব্যস্ততা এখন দিনরাত। কিষাণ-কিষাণিদের কর্মব্যস্ততায় এখন বিলে বিলে আর ধানি জমিতে বইছে বাংলার সেই চিরাচরিত রূপ। কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর কাঙ্খিত ফসল ঘরে উঠবে।
উপজেলার দীর্ঘভ‚মি গ্রামের কৃষক সরাফত আলী জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৫৫ শতক জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ করেছেন। জমির ধান কাটার উপযোগী হওয়ায় ধান কাটা শুরু করেছেন। সপ্তাহ-দশদিনের মধ্যে সব ধান ঘরে তোলতে পারবেন বলে জানান। বেজুরা গ্রামের আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ধার-দেনা করে এ মৌসুমে ৭২ শতক জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। ফলনও ভাল হয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে এবং চাহিদার বেশি ধান পাওয়া যাবে। ধান তোলা শেষ হলে ধান বিক্রি করে ধার-দেনা মিটিয়ে যা থাকবে তা দিয়েই সংসার চালাবেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর ধান তোলার সময় দাম কমে যায়। ধানের দাম স্বাভাবিক থাকলে এবার কোনো কৃষকেরই ধার-দেনার ঘানি টানতে হবে না। ফয়জুল ইসলাম নামের হরিমঙ্গল এলাকার এক কৃষক বলেন, ক’দিন ধরে মাঠে মাঠে ধান কাটা উৎসব শুরু হয়েছে। এপর্যন্ত তিনি ৪৫ শতক জমির ধান কেটে ঘরে তোলেছেন। এভাবে অনেকেই তাদের জমির ধান কেটে ঘরে তোলেছেন। এবার কৃষকের ঘরে ঘরে নতুন ধানের চালের গুড়ায় নবান্ন উৎসব শুরু হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাসান বলেন, আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান ঘরে তোলতে পারবে। এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, চলিত মৌসুমে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেরার বিভিন্ন কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০টি প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। ধান বিক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, কৃষকরা বাহিরে ধান বিক্রি না করে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষের নিকট তাদের ধান বিক্রি করলে তারা তাদের উৎপাদিত ধানের সঠিক মূল্য পাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমন-ধান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ