Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘পাগলের মতো’ ভ্যাকসিন কিনছে ধনী দেশগুলো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:১৩ পিএম

ধনী দেশগুলো বিগত কয়েক মাস ধরেই পাগলের মতো করে ভ্যাকসিন কিনছে। ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী সম্ভাবনায় ভ্যাকসিন কিনতে বেশ কিছু দেশ শত শত কোটি ডলারের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আরও বেশ কিছু দেশ এবং আঞ্চলিক জোট তাদের মোট জনসংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি ডোজ ভ্যাকসিনের আগাম অর্ডার দিয়ে রেখেছে। আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন তদারকি সংস্থা পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গত সপ্তাহে জানিয়েছে ধনী দেশগুলো তাদের সব মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে প্রয়োজনের চেয়ে তিন গুণ বেশি ডোজ ভ্যাকসিন কিনে নিয়েছে। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
কানাডার সরকার একাই তাদের মোট জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি ভ্যাকসিন কিনে নিয়েছে। এমনকি তাদের আগাম আদেশ দেওয়া সব ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি নাও পেতে পারে।
পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’র তথ্য অনুযায়ী ধনী দেশগুলো বেশি পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনে নেওয়ায় প্রায় ৭০টি দরিদ্র দেশ ২০২১ সাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রতি দশ জনের এক জনকে ভ্যাকসিন দিতে পারবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গ্রেগরি হাসি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সমতার প্রতিশ্রুতি থাকার পরও ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদকে সর্বাত্মক হয়ে উঠতে দেখা হতাশাজনক।’
আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর প্রধান জন নাকেনগাসং বলেন, দরিদ্র দেশগুলোর ভ্যাকসিন না পাওয়ার অক্ষমতা বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা যে বৈশ্বিক সংহতি এবং সহযোগিতার কথা বলে এসেছি তার লিটমাস টেস্টের (এসিড শনাক্তের বিশেষ পরীক্ষা) সময় এখন।’
নাকেনগাসং বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু দেশ অতিরিক্ত ডোজ ভ্যাকসিন কিনে নেবে আর বিশ্বের অন্য এলাকার মানুষ মোটেই ভ্যাকসিন পাবে না- এটা কোনও নৈতিক আচরণ হতে পারে না।’
এইচআইভি/এইডস- এর জীবন রক্ষাকারী ওষুধ পাওয়া নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করছেন আফ্রিকার জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা। পশ্চিমা দুনিয়ায় ওষুধটি বাজারে পাওয়া গেলেও তা পেতে তাদের কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অতি সম্প্রতি একই ধরনের সংহতির কথা বলার পরও এইচ১এন১ ফ্লু ভ্যাকসিনও মহাদেশটিতে পৌঁছায় মহামারি চূড়ান্ত অবস্থায় যাওয়ার বেশ কয়েক মাস পর।
অধ্যাপক গ্রেগরি হাসি মনে করেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিতর্ক ওইসব তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাই মনে করিয়ে দেবে। তিনি বলেন, ‘এটা নতুন কোনও অবস্থা নয়। অতীতেও বহুবার একই ঘটনা ঘটেছে।’
আফ্রিকার কর্মকর্তাদের আশা, সংহতির বার্তা যদি নৈতিক যুক্তির ওপরে উঠতে না পারে তাহলে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত যুক্তি হয়তো সেটা পারবে। কোভিড-১৯ মহামারির অবসান ঘটাতে হলে সব জায়গা থেকে এটি নির্মূল করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আফ্রিকা অঞ্চলের ভ্যাকসিন উন্নয়ন সমন্বয়ক ড. রিচার্ড মিশিনগো বলেন, ‘যতক্ষণ না সবাই সুরক্ষিত হচ্ছে ততক্ষণ কেউই সুরক্ষিত থাকতে পারবে না। আমরা একটি সমন্বিত দুনিয়ায় বসবাস করছি, যদি ওইসব দেশ নিজেদের সুরক্ষিত করে ফেলেও তাহলে তাদের বিচ্ছিন্ন হয়ে বাস করতে হবে। আমাদের এমন একটি দুনিয়ার দরকার যেখানে আমরা সবাই মিথস্ক্রিয়া করতে পারি। কেবল সামাজিকভাবে নয়, বরং অর্থনৈতিকভাবেও।’ সূত্র : সিএনএন



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ