বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গত এক সপ্তাহে নরসিংদীসহ দেশের বাজারে চালের দাম আরো একদফা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নিয়ে নবান্নের ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়েছে তিন দফা। তিন দফায় চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৭ টাকা।
নবান্নের এই তিন দফাসহ গত ইরি-বোরো মৌসুম থেকে এই পর্যন্ত চালের মূল্য বেড়েছে ১৭ দফা। বাজারে ২৯ টাকা কেজি চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। ২৮ ও ২৯ ভ্যারাইটির চাল ৪৮ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট ৫৪ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল ৫৬ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাজল লতা ৪৬ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাংলামতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি বেড়েছে ৩০ থেকে ৩১ টাকা।
চাল নিয়ে চাল সিন্ডিকেটের চালবাজি সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। মিলারদের মধ্যে সিন্ডিকেট, আড়তে সিন্ডিকেট, পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেট, খুচরা বাজারেও মুনাফাখোরী সিন্ডিকেট ব্যবসার কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র, দরিদ্র, বিত্তহীন ও নিম্নবিত্তের ক্রেতারা। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কোনো কার্যকরী ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারছে না। চালের মূল্য বৃদ্ধি শুরু হয় গত ইরি-বোরো মৌসুম থেকে। বোরো ধান কাটার মৌসুম থেকে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
গত ১১ মাসে চালের মূল্য ১৭ দফা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবারই কেজিপ্রতি ২/৩ টাকা করে বেড়েছে।
এভাবে বাড়তে বাড়তে ২৯ টাকা কেজির চাল এখন ৬০ টাকা কেজিতে দাঁড়িয়েছে। সরকার চাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারেনি। বর্তমানে প্রতি কেজি চাল ৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। চালের এই মূল্য অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন ক্রেতাগণ। এই অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে যে, উৎপাদনের ভরা মৌসুমেই যদি চালের মূল্য বাড়তে থাকে, তবে সরকার সারাবছর চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করবে কিভাবে? চালের বাজার ওঠানামা করার ঘটনা দীর্ঘদিনের।
ব্রিটিশ বাংলা, পাক বাংলা ও বাংলাদেশ চালের মূল্য বৃদ্ধির বহু ঘটনা রয়েছে। কিন্তু উৎপাদনের ভরা মৌসুমে চালের মূল্য বৃদ্ধি ঘটনা খুব একটা জানা যায় না। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে তৎকালীন সের প্রতি দুই আনা বৃদ্ধি পেলে দেশে হইচই পড়ে যেত।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় নেমে মিছিল করত। চালের দাম বাড়লে শাক- সবজি, মাছ-গোশত, মসলা ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যেতো।
বর্তমান বাজারে শাক সবজি মাছ গোশত মসলার দাম সবসময়ই তুলনামূলকভাবে বাড়তি থাকে। যার ফলে চালের দাম বাড়লেও এর প্রতিক্রিয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বাজারে খুব একটা প্রভাব পড়েছে না। চালের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলেও রাজনৈতিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যার ফলে, নিম্নআয়ের মানুষদেরকে নীরবেই উচ্চমূল্যে চাল কিনে খেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে চাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে। একই কথা বলছে আড়তদাররাও।
তারা বলছে মিলাররা বাজারে চাল সরবরাহ করছে কম। চালের সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম বেড়েছে। সচেতন চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। কোন ভ্যারাইটির ধানেরই কাঙ্খিত উৎপাদন হয়নি। উৎপাদন মৌসুমে তিন দফা চালের মূল্য বৃদ্ধি একটি অশনি সংকেত। সরকার সঠিক সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে এবছর চালের দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা ঠাহর করা সম্ভব নাও হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।