Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিয়ে করে বিপাকে প্রেমিকযুগল

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার : | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

যেন সিনেমাকেও হার মানিয়েছে রাজীব-প্রেমা যুগলের প্রেম কাহিনী। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় রাজীবকে মনে ধরে প্রেমার। ভালোলাগা থেকে ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে প্রেমা ও রাজীব। দু’জন-দু’জনকে একান্ত করে পেতে হয়ে ওঠে মরিয়া। কিন্তু তাদের মধুর সম্পর্কে বাধ সাধে প্রেমার পুলিশ অফিসার বাবা। প্রেমা-রাজীব সবার কাছে গোপন রাখে তাদের সম্পর্কের কথা। তবে বাবার ভয়ে গোপনেই রাজীবের সাথে বিয়েটা সেরে নেয় প্রেমা। পরে বাবা মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের কথা বুঝতে পারে। কিন্তু বিয়ের বিষয়টি অজানাই থাকে সবার কাছে।

মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছেলেকে পছন্দ করে জেনেই রক্ত সঞ্চালন যেন বেড়ে যায় প্রেমার বাবার। মেয়েকে বাসায় নজরবন্দি করে রাখেন মাসের পর মাস। ভেঙে ফেলেন প্রেমার মুঠোফোন। এমনকি বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সাথেও প্রেমার যোগাযোগ বন্ধ করে দেন প্রেমার বাবা। এভাবে রাজীবকে ছাড়াই ঘরে নজরবন্দি অবস্থায় প্রেমার কেটে যায় ৭-৮ মাস। বরং শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন সইতে হয়েছে তাকে। অবশেষে বাসা থেকে পালিয়ে স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই নেয় প্রেমা। পরদিনই মিথ্যা অপহরণ মামলা ঠুঁকে দেন রাজীব ও তার পুরো পরিবারের নামে। এতেও ক্ষান্ত হননি বিভিন্ন সময় মেয়ে প্রেমার শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রেমা-রাজীবের সিনেমার মতো এমন প্রেমকাহিনী বাস্তবে ঘটেছে ঢাকার সাভারে। পাশের উপজেলা ধামরাইয়ের নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রেমা উঠেছে আশুলিয়ার গকুলনগর স্বামীর বাড়িতে। তবে বাবা পুলিশ কর্মকর্তা মীর শাহীন শাহ পারভেজের ভয়ে তারা আপাতত ভাড়া বাসায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে এই দম্পতি। রাজীবের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওসি শাহীন পারভেজের জন্য তারা অনেকটা বন্দিদশায় চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন।

অভিযুক্ত মীর শাহীন শাহ পারভেজ ঢাকা জেলা উত্তর (সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই থানা) এর ডিবি পুলিশের ওসি হিসেবে দায়িত্বপালন শেষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন। পরে সেখান থেকে বর্তমানে তিনি মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে কর্মরত।

সামিয়া প্রেমা বলেন, দেড় বছর আগে আমরা বিয়ে করেছি। আমার নিজের ইচ্ছায়। বাবাকে আমাদের সম্পর্কের কথা জানাইছিলাম। বাবা তারপর থেকে নানাভাবে ওদের ফ্যামিলিতে প্রেসার দিয়েছে। আমাকেও নানাভাবে টর্চার করা হয়েছে। অনার্স কমপ্লিট হওয়ার পরে আমাকে প্রায় এক বছর বাসায় আটকিয়ে রেখেছিলো। তারপরে গত ৩ নভেম্বর নিজ ইচ্ছায় আমার হাসবেন্ডের কাছে পালিয়ে আসি। কিন্তু তারপর আমার মা বাদী হয়ে হাসবেন্ড, ভাসুর, শ্বশুড়-শাশুড়ির নামে ধামরাই থানায় মামলা দেয়। আমার ভাসুরকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। মামলার পর কোর্টে গিয়ে আমি নিজে আমার হাসবেন্ডের কাছে চলে আসি। আমার ভাসুরকেও জামিন দেয়া আদালত।

অপহরণ মামলার ব্যাপারে এই তরুণী বলেন, আমি বাসা থেকে চলে আসার পর মামলা করা হয়েছে। কিন্তু আমি নিজের ইচ্ছায় আসছি। আমাকে অপহরণ করা হয়নি। কোর্ট থেকে আসার পরে আমি আর বাবার সাথে কনট্যাক্ট করিনি। ফ্যামিলির কারো সাথেও যোগাযোগ নেই।

অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধামরাই থানার এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, অপরহণ মামলায় রাজীবসহ তার পরিবারের আরো ৪ সদস্য আসামি। তবে মামলার পরদিন রাজীবের ভাই ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। তবে আসামিরা সবাই জামিনে আছেন। আদালতে ওসি শাহীন পারভেজের মেয়ে হাজির হয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সে ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টা সম্পূর্ণ আদালতের। তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেমিকযুগল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ