Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এক বছর ধরে অবরুদ্ধ উহানের সেই সি ফুড মার্কেট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:৪৪ পিএম

এক বছর হতে চললো, হুয়ানান সি ফুড হোলসেল মার্কেটটি অবরুদ্ধ হয়ে আছে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাত থেকে জনশূন্য ওই মার্কেট অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিশ্বের অনেকেই এখন হুয়ানান সি ফুড হোলসেল মার্কেটকে চেনেন নতুন করোনাভাইরাসের উৎসস্থল হিসেবে, যদিও বিষয়টি এখনও প্রমাণিত নয়।
ওই বাজারে মুরগি, বাদুড়, খরগোশ, সাপ, সামুদ্রিক প্রাণীসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর বিকিকিনি হত। গতবছর ডিসেম্বরের শেষে উহানে চারজনের মধ্যে নতুন ধরনের এক নিউমোনিয়া ধরা পড়ে, যাদের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে ওই বাজারের যোগাযোগ ছিল।
এরপর হঠাৎ বদলে যায় সব। ওই রাতেই বন্ধ হয়ে যায় মার্কেট। পরের মাসের শেষ দিকে পুরো শহর চলে যায় ৭৬ দিনের কঠোর লকডাউনে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিসে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায় বাসিন্দাদের।
এরপর প্রায় এক বছরে বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেওয়া কোভিড-১৯ এ ১৬ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। চীন মাস তিনেকের মধ্যে এই ভয়ানক ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও পুরো বিশ্ব এখন ধুঁকছে।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর গত এপ্রিলে আবার প্রাণ ফিরতে শুরু করে উহানে। কিন্তু অনেক কিছুই আর আগের অবস্থায় ফেরেনি। অবরুদ্ধ অবস্থায় এখনও খালি পড়ে রয়েছে ওই সি ফুড মার্কেট।
‘নভেল’, মানে নতুন করোনাভাইরাস নাম পাওয়া এই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বেইজিংয়ের বাগযুদ্ধের প্রতীক হয়ে আছে এই মার্কেট।
ভাইরাসের উৎস অনুসন্ধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল উহান ও এই মার্কেট পরিদর্শন করবেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়নি।
চীন ও অন্যান্য দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ভাইরাসের উৎস অনুসন্ধানের এ কাজে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে, এবং শেষ পর্যন্ত কোনো মীমাংসায় পৌঁছানো সম্ভব নাও হতে পারে।
করোনাভাইরাসের উৎসস্থল হিসেবে উহানের নাম বলা হলেও সেখানকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ওই কথা তাদের বিশ্বাস হয় না।
স্থানীয় কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী চেন বলেন, “এটা কোনোভাবেই উহান থেকে হতে পারে না- কেউ এখানে নিয়ে এসেছে। অথবা বাইরে থেকে অন্য কোনো পণ্যের সঙ্গে এসেছে। এখানে শুধু দেখা দিয়েছে।”
সম্প্রতিক মাসগুলোতে চীনা কূটনীতিক ও রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমও বলছে, তাদের বিশ্বাস ওই মার্কেট থেকে ভাইরাসটি ছড়ায়নি, বরং রোগের ‘ভিকটিম’ হয়েছে সেটি। অন্য কোনো দেশেই এই ভাইরাসের উৎস, তা প্রমাণে নানা তত্ত্বও হাজির করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করোনাভাইরাসের উৎস অনুসন্ধানে এখনও সি ফুড মার্কেটটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি ধ্বংস করা ঠিক হবে না। যদিও এসব গবেষণার অধিকাংশই নির্ভর করবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সংগ্রহ করা নমুনার ওপর।
ওই এলাকায় মানুষের প্রবেশ এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকা ঘিরে বেষ্টনী দিয়ে রেখেছে। চীনা ঐতিহ্যবাহী পেইন্টিংয়ের পাশাপাশি গাছ লাগানো হয়েছে সেখানে।
সম্প্রতি চীনা কূটনীতিক ও রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমও বলছে, তাদের বিশ্বাস ওই মার্কেট থেকে করোনা ছড়ায়নি, বরং রোগের ‘ভিকটিম’ হয়েছে সেটি। অন্য কোনো দেশ এই ভাইরাসের উৎস, সেটি প্রমাণে নানা তত্ত্বও হাজির করা হচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ