পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গাড়ি কেনা, বিদেশ ভ্রমণ ও কনসালটেন্সিতে ব্যয় অর্ধেকের বেশি
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শহরগুলোর মধ্যে রাজধানী ঢাকা প্রায়ই শীর্ষে থাকছে। অথচ ঢাকার নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশের জন্য ৮০২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১৮২ কোটি টাকা কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ, আর মিডিয়া ক্যাম্পেইনে ৩৪ কোটি টাকা, কানসালটেন্সিতে গেছে ৩৩ কোটি, বিদেশ ভ্রমণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের টাকায় গত ১০ বছরে ৩১টি নতুন গাড়ি কেনা হয়েছে। অথচ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে না হতেই ৯টি গাড়ি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মোট গাড়ির মধ্যে ১৪টি ব্যবহার করছে দুই সিটি করপোরেশন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ করা হয়েছে তা কোনও ভাবেই বায়ুর মান উন্নয়নে সহায়ক ভ‚মিরা রাখতে পারে না। অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা লুটেপুটে শেষ করা হয়েছে।
২০০৯ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকার পরিবেশ উন্নয়নের জন্য নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পরিবেশ অধিদফতর ও ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ধরা হলেও পরে তা বাড়িয়ে করা হয় জুন ২০১৯ পর্যন্ত। এরইমধ্যে পুরো টাকাই খরচ হয়েছে।
এই প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে অদক্ষতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে মনে করে সংসদীয় কমিটি পুর্নমূল্যায়নের জন্য এরইমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) কাছে পাঠিয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি মনে করছে বায়ুদ‚ষণ কমানো কেইস প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলেও তা হয়নি। প্রকল্পের টাকা অন্য খাতে ব্যয় করা হয়েছে, এতে ঢাকায় বায়ুদ‚ষণ আরও বেড়েছে। কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, কেইস প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বায়ুর মান উন্নত করা বা দূষণ কমানো। কিন্তু আমরা কতটুকু কমালাম? এই সময়ে দ‚ষণ তো বেড়ে গেছে, কমেনি। তিনি বলেন, প্রকল্পটি পুর্নমূল্যায়নের জন্য আমরা এরইমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) কাছে পাঠিয়েছি। এ থেকে আমরা একটা শিক্ষা নিতে চাই, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, আসলে আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি প্রকল্পটি ঢাকা শহরের বায়ুদ‚ষণ কমানোর জন্য গ্রহণ করা হলেও এখন আরও বেড়েছে। যে কারণে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। কমিটির সদস্য ও বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবুল সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বলেন, যে উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে তা ডাইভার্ট হয়ে অন্যদিকে চলে গেছে। বায়ুদূষণ রোধে করণীয় তেমন কিছুই হয়নি।
সংসদীয় কমিটিতে দেওয়া পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১৮২ কোটি টাকাই দেখানো হয়েছে কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ। আর মিডিয়া ক্যাম্পেইনে গেছে ৩৪ কোটি টাকা। বিদেশ ভ্রমণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা, কানসালটেন্সিতে গেছে ৩৩ কোটি, মেলা বাবদ খরচ ১০ লাখ টাকা, কালচারাল প্রোগ্রামে গেছে ৯ লাখ আর কর্মকর্তাদের কাপড় ধোয়ায় গেছে ১ লাখ।
কেইস প্রকল্পের মোট বরাদ্দ থেকে গত ১০ বছরে ৩১টি নতুন গাড়ি কেনা হয়েছে। অথচ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে না হতেই এরইমধ্যে ৯টি গাড়ি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মোট গাড়ির মধ্যে ১৪টি ব্যবহার করছে দুই সিটি করপোরেশন।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ প্রকল্পের ৮০২ কোটি টাকার মধ্যে ৪৬০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) অংশে। এ টাকায় ৮৩ দশমিক ৯১ কিলোমিটার রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাতের উন্নয়ন, ২৩টি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ, ১৮ কিলোমিটার মিডিয়ান-ফুটপাতে গার্ড রেইল স্থাপন, ২০টি যাত্রী ছাউনি ও রোড মার্কিং, জেব্রা ক্রসিং, রোড সাইনের কাজ, ৯৯টি রিমোট কন্ট্রোল ট্রাফিক সিগন্যাল, ডিএসসিসির হাজারীবাগে দোতলা ওয়্যারহাউস-কাম অফিস ভবন নির্মাণ, ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগে ২৫ ধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।
পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ করা হয়েছে তা কোনও ভাবেই বায়ুর মান উন্নয়নে সহায়ক ভ‚মিরা রাখতে পারে না।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাক শরিফ জামিল বলেন, নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল বায়ুর মান উন্নয়নের জন্য। কিন্তু আমরা দেখলাম প্রকল্পের টাকা লুটেপুটে শেষ করা হয়েছে। এর টাকা দিয়ে ফুটওভার ব্রিজ ও ট্রাফিক সিগন্যাল করা হয়েছে। গাড়ি কেনা হয়েছে। এটা তো পরিবেশের কাজ না। এটা করবে সিটি করপোরেশন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।