পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী সরকারকে আলেমদের সাথে সংঘাতে জড়াতে ভুল প্ররোচণা দিচ্ছে। সেইসাথে সরকারদলীয় সংগঠনগুলোর কতিপয় নেতাও ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। কোন ষড়যন্ত্রকারী মহল যেন উস্কানি দিয়ে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে সরকারকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অবিলম্বে তিন আলেমের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ওয়াজ-মাহফিলে বাধাদান এবং আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিবৃতি ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ মামলা দায়ের করায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব বলেন, ইসলামের আক্বিদা-বিশ্বাস ও বিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে পৌত্তলিকতা প্রসারের রাষ্ট্রীয় গোমরাহির পথ পরিহার করার আহ্বান জানানোয় ইসলামবিদ্বেষী একটি অশুভ শক্তি আলেম-উলামা ও তাওহিদী জনতার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, কট‚ক্তি ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশব্যাপী ওয়াজ-মাহফিলে প্রশাসনিক বাধাদানের ঘটনাও ঘটছে। এর ধারাবাহিকতায় হেফাজত আমীর’সহ দেশবরেণ্য তিন জন আলেমের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি ভ‚ঁইফোড় সংগঠন রাষ্ট্রদ্রোহিতার মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমরা অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ওয়াজ-মাহফিলে বাধাদান এবং আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচার বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সুতরাং ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যাদান ও গোমরাহীর পথ পরিহারের আহ্বান জানানো আলেম সমাজের সাংবিধানিক অধিকার এবং ধর্মীয় কর্তব্য। কোন ব্যক্তি বিশেষ, সংগঠন বা সরকার আলেমদের এই কর্তব্য পালনে হস্তক্ষেপ করার বৈধতা রাখে না।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, কিছু দিন ধরে ইসলাম ও দেশবিরোধী একটি অশুভ শক্তি শান্তিপ্রিয় আলেম সমাজ ও তাওহিদী জনতার সাথে গায়ে পড়ে ঝগড়া বাঁধানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তাদের তৎপরতায় মনে হচ্ছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা বাংলাদেশ থেকে ইসলামী চেতনাবোধ উৎখাত ও দেশবিরোধীদের ফায়দা লুটার পথ সুগম করে দিতে চায়। এ বিষয়ে দেশবাসীকে পূর্ণ সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের সাথে কোনরূপ বৈরিতা সৃষ্টি হেফাজতের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী সরকারকে আলেমদের সাথে সংঘাতে জড়াতে ভুল প্ররোচণা দিচ্ছে এবং সেইসাথে সরকারদলীয় সংগঠনগুলোর কতিপয় নেতাও ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ভাস্কর্য ইস্যুতে আলেম সমাজ ইসলামের বিধান ব্যাখ্যা করে ভুল পদক্ষেপ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে শরীয়তের ফতোয়া প্রচার করেছেন। বাংলাদেশের স্থপতি মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের রূহের মাগফিরাত, শান্তি এবং তাঁর স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখতে ইসলামসম্মত উত্তম উপায় খুঁজে বের করতে পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যাতে কবরে কষ্ট না পান, সে জন্য উলামায়ে কেরাম ভাস্কর্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, ইসলামে ভাস্কর্যের কোন স্থান নেই। মনে রাখতে হবে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অবকাশ নেই। এদেশের আলেম ওলামা কোন কিছু ভাঙচুর করতে বলেননি, তারা ইসলামের আলোকে ভাস্কর্য বৈধ না অবৈধ তা সরকারসহ জাতিকে জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভাস্কর্য ইস্যুকে কেন্দ্র করে আলেম ওলামাদের উপর জুলুম করার চেষ্টা করা হলে তা দেশের তাওহিদী জনতা বরদাস্ত করবে না। আলেমদের উপর জুলুমের পরিনাম সরকারের জন্য শুভ হবে না।
সভায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ বিশিষ্ট আলেমদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার দায়েরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়। খেলাফত মজলিসের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ডাক্তার রিফাত হোসেন মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নায়েবে আমীল অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, মনসুরুল আলম মনসুর ও শ্রমিক মজলিসের সভাপতি হাজী নূর হোসেন।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন : ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ডক্টর মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান চলমান ভাষ্কর্য ইস্যুতে দেশের তিনজন সম্মানিত আলেমের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা’ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, সাম্প্রতিক ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন মত পথের আলেম সমাজ একই মতামত দিয়েছেন যে, কুরআন ও হাদীসের দৃষ্টিতে মানুষ বা কোনো প্রাণীর মূর্তি বা ভাষ্কর্য হারাম। কুরআন মজীদে সৎকাজের আদেশ দান ও অসৎকাজে নিষেধের যে দায়িত্ব প্রতিটি মুসলমানের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। তারই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আলেম সমাজ বিষয়টি নিয়ে জাতিকে সতর্ক করে বক্তব্য রাখছেন এবং সর্বস্তরের জনগণ তাদের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
একটি মহল হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যের ইস্যু সামনে এনে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারা আলেম সমাজের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে বিষোদ্গার করে বক্তব্য রাখছেন। তদুপরি দেশের শীর্ষস্থানীয় তিনজন আলেমকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।