Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধুমতীতে বিলীন ৩০ বসতভিটা ঝুঁকির মুখে শতাধিক বাড়ি

প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুস ছালাম খান, লোহাগড়া (নড়াইল) থেকে

নড়াইলের লোহাগড়া মধুমতী নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গত দুই সপ্তাহের টানা বর্ষণে মধুমতী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৩০টি বসতবাড়ি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে আরো শতাধিক ঘরবাড়ি। নদী ভাঙন কবলিত পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে মধুমতীতে বিলীন হয়েছে লোহাগড়া ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া, কামঠানা নতুনপাড়া, কামঠানা সিকদারপাড়া, চরবগজুড়ি, করফা গ্রামের ৩০ বসতভিটা। এর মধ্যে আলতাফ মোল্লা, লুৎফর মোল্লা, খায়ের মোল্লা, আনোয়ার মোল্লা, তোরাফ মোল্লা, হামিদ মোল্লা, কুদ্দুস মোল্লা, মনি মিয়া, আলী মিয়া, আজগর মোল্লা, ইউনুছ ফকির, পারভীন, সাইফুল মোল্লা, আলেক মোল্লা ও ইলিয়াছ ফকিরের বাড়ি রয়েছে। এছাড়া ফসলি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত শতাধিক বসতবাড়ি। তেঁতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন গত বছর বর্ষা মৌসুমে নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীর তীরে ছাপড়া ঘর তোলে কোনোমতে চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। গত দুই যুগ ধরে এ দুই গ্রামের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে অন্তত ৫০০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩-৪ বারও ভাঙনের শিকার হয়েছে গ্রামের অনেক পরিবার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের মুখে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন তাদের ঘরবাড়ি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এসব গ্রামের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে কেউ প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে, আবার কেউবা রাস্তার পাশে ছাপড়া তোলে আশ্রয় নিয়েছেন। নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে। তাঁরা মানবেতর দিনযাপন করছেন। তেঁতুলিয়া গ্রামের জয়তুন বেগমের বাড়ি ভাঙনের মুখে। তিনি বলেন, ১৫ বছর বয়সে বউ হয়ে এ গ্রামে আসি। জমিজমাসহ শ্বশুর বাড়িতে সুখের সংসার ছিল। নদীর ভাঙনে সব হারিয়েছি। এ গ্রামের হামিদ মোল্লা জানান, তাদের প্রায় ৩০ একর ফসলি জমি ছিল সব এখন নদীতে। এ বছরসহ তিনবার বসতবাড়ি নদীতে গেছে। এখন তারা নিঃস্ব। পথের ফকির। স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. চান মিয়া মোল্লা জানান, সরকারি কোনো সাহায্য ক্ষতিগ্রস্তরা পাননি। গত বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দেয়া হয়েছে। লোহাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল শিকদার বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে এভাবে দিন দিন এসব জনপদ বিলীন হয়ে যাবে। এব্যাপারে আর্থিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা জানান, সাহায্যের জন্য আবেদন করতে বলেছি। আর ভাঙন প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের নজরে আনা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধুমতীতে বিলীন ৩০ বসতভিটা ঝুঁকির মুখে শতাধিক বাড়ি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ