Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যাতায়াতে ভরসা নৌকা

মাদারীপুরের উত্তর মহিষের চর লঞ্চঘাট

আবুল হাসান সোহেল, মাদারীপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

মাদারীপুর জেলার উত্তর মহিষের চর লঞ্চঘাট এলাকায় নদীতে সেতু না থাকায় নৌকাই তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। নদীর ওপারে ছয়টি গ্রামে রয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। বিভিন্ন প্রয়োজনে তারা প্রতিনিয়ত নদীটি পারাপার হন। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় নৌকাই তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। নৌকা ডুবির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে। জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে গ্রামবাসীসহ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করে। তাই শিক্ষার্থীদের যেতে ও বাড়ি ফিরতে হয় নৌকায় করে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য নদীটি পাড়ি দিয়ে মাদারীপুর আসতে হয়। এসব এলাকার মানুষ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রভৃতি যানবাহনে যাতায়াত করে। কিন্তু সেতু না থাকায় নদী পার হওয়ার সময় তাদেরকে বিপাকে পড়তে হয়। এছাড়া কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নেয়ার ক্ষেত্রে দুর্ভোগের মুখে পড়েন।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আড়িয়াল খাঁ নদীতে কোনো সেতু না থাকায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শিশু, নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৫-৬ হাজার মানুষ চলাচল করছে। স্বাধীনতার কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে মহিষেরচর, জাফ্রাবাদ, বাহেরচর কাতলা, জাজিরা, তালুøক (মোল্লা কান্দি), আংগুুল কাটা, ছিলারচরসহ আশপাশের প্রায় ৬ থেকে ৭টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। উত্তর মহিষেরচর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লঞ্চঘাট এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মিত হলে দুই পাড়ের মানুষের কষ্ট যেমন শেষ হতো তেমনই হাজারো মানুষের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হতো।
পাঁচখোলা ইউনিয়নের সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ পেদা বলেন, মাদারীপুর লঞ্চঘাট এলাকা দিয়ে নদী পারাপারে সারা বছর জুড়ে নৌকাই একমাত্র ভরসা। প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ ৫ টাকার বিনিময়ে নদী পারাপার হয়। সেতু না থাকায় মালামাল নিয়ে বাজারে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে খুবই কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। এতে করে যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে তাছাড়াও সময় ও ব্যয় হচ্ছে। এই ব্রিজটা হলে আমাদের সময় অনেকটা বেচে যাবে। কোনো সেতু না থাকায় পাঁচখোলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজনকে সকল মৌসুমেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই ব্রিজটা কাঙ্খিত সপ্ন সবার, আমরা এর বাস্তবায়ন চাই।
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম আক্তার হাওলাদার বলেন, পাঁচখোলা ইউনিয়নের মধ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ড লঞ্চঘাটের এপার এবং ওপার। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজনের একাধিকবার চাহিদা ছিল উত্তর মহিষেরচর লঞ্চঘাট সোজা একটা ব্রিজ। বর্তমানে খেয়া দিয়ে ৫-৭টি ইউনিয়নের লোকজন যাতায়াত করে। ব্যস্ততম একটি রাস্তা এটা। কিন্তু এখানে খেয়ার বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে বর্ষায় নদীতে প্রবল স্রোত থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয়। এখানে সেতু নির্মিত হলে এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তির শেষ হবে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান বলেন, মাদারীপুর লঞ্চঘাট হতে ওপারে উত্তর মহিষের চর পর্যন্ত আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাবনা পাঠানোর পর তা অনুমোদন হয়েছে। মাটির গুনাগুন পরীক্ষা করার কাজ শিগগিরই শুরু হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভরসা-নৌকা

৭ ডিসেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ