বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও পৌরসভার নির্বাচনে কে কে প্রার্থী হচ্ছেন এই নিয়ে চলছে নেতাদের দৌড়ঝাঁপ। দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চলছে পুরোদমে। অলিখিত ভাবেই শুরু হয়ে গেছে বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা। অন্য দলের তুলনায় আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠছে নেতাকর্মীরা। মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে অনেকেই সম্ভাব্য প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করেছেন পৌর এলাকায় গণসংযোগ। চলমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে।
তফসিল ঘোষণার আগেই বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে, তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ জনমনে প্রশ্ন কে হচ্ছেন এবার নৌকার মাঝি?
নির্বাচন কমিশন থেকে যেসব পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ জানতে চাওয়া হয়েছে এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভাও একটি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন । শুরু করেছেন নির্বাচনের তৎপরতা। ইতিমধ্যে মেয়র ও কাউন্সিলর পদের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। অনেকে গণসংযোগ শুরু করেছেন বিভিন্ন কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে।
নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা বেশি তৎপর হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে মেয়র পদে দলের মনোনয়ন নিতে জেলা ও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের আশীর্বাদ পেতে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন তারা। অনেকে ঢাকায় অবস্থান করে দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন পেতে ঘরোয়া বৈঠকসহ সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন। ফলে দলের মধ্যে নানামুখী গ্রুপিং-লবিং দেখা যাচ্ছে।
রামগতি পৌরসভায় সরকারি দল আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যারা আলোচনায় রয়েছেন, তারা হলেন, বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এম মেজবাহ উদ্দিন মেজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাছের, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহ মো. রাকিব, সোয়াইব হোসেন খন্দকার, পৌর আওয়ালীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়ারেছ মোল্লা।তবে রামগতিতে আওয়ামী পরিবারের একজন নিবেদিত প্রাণ হিসেবে নৌকার মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান মেয়র এম.মেজবাহ উদ্দীন মেজু।
এছাড়া গত পৌরসভা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে লাঙ্গল মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন এক সময়ের জাতীয়পার্টির বিতর্কিত নেতা সাবেক মেয়র আজাদ উদ্দিন চৌধুরী। আওয়ামীলীগের কোন ইউনিটে তার পদ-পদবী না থাকলেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন, পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র সাহেদ আলী পটু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবি আবদুল্যাহ। রামগতিতে বিএনপির একজন ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতা হিসেবে সাবেক মেয়র সাহেদ আলী পটু এবার ধানের শীষের মনোনয়ন পাবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন পৌর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের তৃনমুল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে এ পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণসংযোগ শুরু করেছেন। প্রার্থীদের তালিকায় বর্তমান কাউন্সিলরের পাশাপাশি সাবেক কাউন্সিলর ও অন্যান্য নতুন মুখও রয়েছেন। ঐসব প্রার্থী আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সমর্থন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, পৌরসভার মেয়র প্রার্থী চুড়ান্ত করতে সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীর অতীত কর্মকান্ড বিবেচনায় নেওয়া হবে। জেলা-উপজেলা এবং সংশ্লিষ্ট পৌরসভার আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মিলিয়ে ৬ সদস্যে স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী ঠিক করে মনোনয়নের সুপারিশ পাঠাবে কেন্দ্রে। আর প্রার্থী বাচাইয়ের এই প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটিও নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ওয়ার্ড, পৌরসভা ও উপজেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের অংশগ্রহণে জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতার বিচারে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে। পরে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চুড়ান্ত করা হবে। আওয়ামী লীগের কোন ইউনিটে পদ-পদবী নাই এমন ব্যক্তিকে মনোনয়নের জন্য সুপারিশ পাঠানোর সুযোগ নাই বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অঞ্চল মেঘনা নদীর তীরবর্তী এ উপজেলা সদর আলেকজান্ডার, চর আলগী ইউনিয়নের চর হাসান হোসেন এবং চর বাদাম ইউনিয়নের চরসীতা এলাকা নিয়ে ২০০০ সালে রামগতি পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। ২০১৮ সালে এই পৌরসভাকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়।বর্তমানে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৯ হাজার ২৮জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৮৬০জন এবং মহিলা ভোটার ৯ হাজার ১৬৮জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।