নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
হার্ডিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটিং নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়ার কাছে কোনরকমে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ালো সফরকারী ভারত। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ১০৮ বলে তাদের দু’জনের অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের জুটিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ১৩ রানে হারিয়েছে হারতে থাকা কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারত।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জয়লাভ করায় হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর পাশাপাশি তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে শেষ করলো টিম ইন্ডিয়া। প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৬৬ ও ৫১ রানে জিতেছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে আগে ব্যাট করার সুযোগ না পেলেও শেষ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। শিখর ধাওয়ানের সাথে ইনিংস শুরু করেন সিরিজে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা শুভমান গিল। ধাওয়ান ১৬ রানে থামলেও ৩৯ বলে ৩৩ রান করেন তরুণ গিল।
মিডল-অর্ডারে শ্রেয়াস আইয়ার ১৯ ও লোকেশ রাহুল ৫ রান করে বিদায় নেন। এক পর্যায়ে ১২৩ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত। সতীর্থদের বিদায়ের মাঝেও এক প্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন অধিনায়ক কোহলি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৬০তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর বেশি দূর যেতে পারেননি, ৭৮ বলে ৫টি চারে ৬৩ রান করেন কোহলি। এ ইনিংস খেলার পথে ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভাঙেন কোহলি। দ্রুত ১২ হাজার রানের রেকর্ড গড়েন তিনি। টেন্ডুলকারের চেয়ে ৫৮ ইনিংস কম খেলে ১২হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। ১২ হাজার রান পূর্ণ করতে ২৪২ ইনিংস খেলেছেন কোহলি।
দলীয় ১৫২ রানে কোহলির বিদায়ে জুটি বাঁধেন হার্ডিক ও জাদেজা। পরিস্থিতি বুঝে উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেন হার্ডিক ও জাদেজা। উইকেটে সেট হয়ে ৪৫ ওভারে দলের স্কোর ২২৬ রানে নিয়ে যান এ জুটি। এরপর শেষ ওভারে ৫ ওভারে রানের গতি বাড়ান হার্ডিক-জাদেজা। ৭৬ রান তুলেন তারা। ৪৬ ও ৪৭তম ওভারে ১৭ রান করে, ৪৮তম ওভারে ১৯ রান তুলেন। আর শেষ দুই ওভারে ২৩ রান তুলেন হার্ডিক-জাদেজা জুটি। এতে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট ৩০২ রানের সংগ্রহ পায় ভারত।
জয়ের জন্য ৩০৩ রানের বড় টার্গেট অস্ট্রেলিয়ার জন্য সহজই ছিল। কারণ, প্রথম দুই ওয়ানডেতে যথাক্রমে ৩৭৪ ও ৩৮৯ রান করেছিল অসিরা। তবে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম বলে অস্ট্রেলিয়ার মেইক-শিপ্ট ওপেনার মার্নাস লাবুশেনকে বোল্ড করেন প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামা বাঁ-হাতি পেসার টি নটরাজন।
লাবুশেন করেন ৭ রান। মোহাম্মদ সামির পরিবর্তে খেলতে নামেন নটরাজন। আর নবদ্বীপ সাইনির পরিবর্তে একাদশে নামেন আরেক পেসার শারদুল ঠাকুর। সুযোগ পেয়ে চমক দেখিয়েছেন শারদুল। প্রথম দুই ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরি করা স্টিভেন স্মিথকে আজ ৭ রানে আউট করেন শারদুল।
স্মিথের বিদায়ের পর অস্ট্রেলিয়ার মিডল-অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে দেননি ভারতের বোলাররা। এক প্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রাখেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। হাফ-সেঞ্চুরি তুলে উইকেটে সেটও ছিলেন তিনি। তাতে জয়ের স্বপ্ন দেখছিলো অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্নে বাঁধা সৃষ্টি করেন জাদেজা। ৮২ বলে সাত বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারিতে ৭৫ রান করা ফিঞ্চকে বিদায় দেন জাদেজা।
ফিঞ্চের আউটের পর অস্ট্রেলিয়ার আশা ছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে। এবারও ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। হাফ-সেঞ্চুরি তুলে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন ম্যাক্সওয়েল। তবে অস্ট্রেলিয়ার শেষ আশাকে নিভিয়ে দেন ভারতের বুমরাহ। ৩৮ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা হাকিয়ে ৫৯ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে বোল্ড করেন বুমরাহ।
ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ের পর শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার লেজ কেটে দেন ভারতের তিন পেসার নটর জন-বুমরাহ-শারদুল। ৩ বল বাকি থাকতে ২৮৯ রান অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। শারদুল ৩টি, বুমরাহ-নটরাজন ২টি করে উইকেট নেন। সিরিজের শেষ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন হার্ডিক। আর সিরিজ সেরা হয়েছেন স্মিথ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ৩০২/৫ (ধাওয়ান ১৬, গিল ৩৩, কোহলি ৬৩, আইয়ার ১৯, রাহুল ৫, পান্ডিয়া ৯২*, জাদেজা ৬৬*; হেইজেলউড ১০-১-৬৬-১, ম্যাক্সওয়েল ৫-০-২৭-০, অ্যাবট ১০-০-৮৪-১, গ্রিন ৪-০-২৭-০, অ্যাগার ১০-০৪৪-২, জ্যাম্পা ১০-০-৪৫-১, হেনরিকস ১-০-৭-০)
অস্ট্রেলিয়া: ৪৯.৩ ওভারে ২৮৯ (লাবুশেন ৭, ফিঞ্চ ৭৫, স্মিথ ৭, হেনরিকস ২২, গ্রিন ২১, কেয়ারি ৩৮, ম্যাক্সওয়েল ৫৯, অ্যাগার ২৮, অ্যাবট ৪, জ্যাম্পা ৪, হেইজেলউড ৭*; বুমরাহ ৯.৩-০-৪৩-২, নটরাজন ১০-১-৭০-২, শার্দুল ১০-১-৫১-৩, কুলদীপ ১০-০-৫৭-১, জাদেজা ১০-০-৬২-১)
ফল: ভারত ১৩ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী অস্ট্রেলিয়া
ম্যাচসেরা: হার্দিক পান্ডিয়া
সিরিজসেরা: স্টিভেন স্মিথ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।