পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানবপাচারকারী চক্রের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুরোধে এ রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে তারা হলেন- মিন্টু মিয়া, স্বপন, শাহাদাত হোসেন, নজরুল ইসলাম মোল্লা, ইকবাল জাফর ও তানজিরুল। গতকাল সোমবার সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. জিসানুল হক এ তথ্য জানান।
সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের মধ্যে নজরুলের বাড়ি মাদারীপুরে, শাহাদাতের ঠিকানা ঢাকায়। বাকি চারজনই কিশোরগঞ্জে। ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচার, আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় এবং হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের সবার বিরুদ্ধে। যে ছয়জনের নামে রেড নোটিশ জারি হয়েছে, তারা সবাই ওই মামলার আসামি এবং তারা বিদেশে আছেন বলে সিআইডি এ কর্মকর্তারা জানান। গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে একদল মানবপাচারকারী ও তাদের স্বজনরা। ওই ঘটনায় চার আফ্রিকান অভিবাসীও নিহত হন। ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজনের বরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে সময় জানিয়েছিল, উন্নত জীবিকার সন্ধানে ইউরোপ যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় দুর্গম পথ পাড়ি দিচ্ছিলেন ৩৮ বাংলাদেশি। বেনগাজি থেকে মরুভ‚মি পাড়ি দিয়ে মানবপাচারকারীরা তাদের ত্রিপোলি নিয়ে যাচ্ছিল। লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনীর সাথে যোগসাজশে পাচারকারীরা মিজদাহ শহরে ওই দলটিকে জিম্মি করে এবং আরও টাকা দাবি করে। এ নিয়ে বচসার মধ্যে আফ্রিকার মূল পাচারকারীকে মেরে ফেলা হলে তার পরিবার এবং বাকি পাচারকারীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ৩০ জনকে হত্যা করে, আরও ১১ জন আহত হন। ওই ঘটনার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি মামলা হয়, মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েক ডজন লোককে পুলিশ গ্রেফতারও করে।
সিআইডির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আকাশ মিয়া নামে এক ভুক্তভোগীর ভাই জানিয়েছেন, রেড নোটিশ দেয়া মিন্টু মিয়া লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার পল্টনে দুটি মামলা হয়েছে। মিন্টু মিয়া কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বোছামারা গ্রামের বাসিন্দা। সে ২০১৮ সালে দুবাই হয়ে লিবিয়ায় গেছেন। এখন তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে লিবিয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮১ জন মানব পাচারকারীকে চিহ্নিত করেছে সিআইডি। এর মধ্যে ৩১ জন গ্রেফতার হয়েছে। আর বিদেশে অবস্থান করছে ২৭ জন। বিদেশে অবস্থানকারীদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওই সূত্র আরো জানায়, লিবিয়ার গোলাগুলির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোর মধ্যে চারটির চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে লিবিয়ার বাইরের ৩৮৭ মানব পাচারকারীর।
পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থার (ইন্টারপোল) রেড নোটিশে বাংলাদেশের ৮১ জনের নাম ঝুলছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের নাম রয়েছে। তালিকাভুক্তদের মধ্যে অনেকের ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে তথ্য পাওয়া গেলেও ইন্টারপোলের সদস্যভুক্ত ১৯০ দেশ থেকে কোনো খবর মিলছে না ফ্রান্সের লিয়নের সদর দপ্তর বা ঢাকার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ইন্টারপোল ডেস্কে। আসামিদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ মানে তারা শীর্ষ অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত। ইন্টারপোলের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিচার-দন্ড ঘোষণার জন্য বাংলাদেশের বিচার কর্তৃপক্ষের কাছে ওয়ান্টেড ব্যক্তিরা পলাতক। রেড নোটিশের মাধ্যমে তাদের অবস্থান জানা এবং গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয়। আর এর লক্ষ্য থাকে ওই ব্যক্তিরা যে দেশে দোষী সাব্যস্ত হয় সেই দেশে প্রত্যর্পণ করা বা এ ধরনের আইনি ব্যবস্থা নিয়ে আসছে ইন্টারপোল। সারা পৃথিবীতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা ইন্টারপোলের ১৯০ সদস্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য।
পিকে হালদারকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকে চিঠি : জালিয়াতির মাধ্যমে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার হাইকোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জজ আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কপিটি সংযুক্ত করেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলে চিঠি পাঠানো হয়।
দুদকের হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম বলেন, পরশু এ মামলায় দিনধার্য রয়েছে। দুদক সূত্র জানায়, পিকে হালদারকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতে গত মাসে দুদকের মানিলন্ডারিং শাখা থেকে একটি চিঠি ইন্টারপোলে পাঠানো হয়। এরপর তারা কিছু বিষয়ে জানতে চিঠিটি ফেরত পাঠায়। পিকে হালদার সপরিবার কানাডায় আছেন।
ইন্টারপোলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দুদককে জানান, পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ সংযুক্ত করে দিতে হবে। এরপর দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন, পিকে হালদারকে দেশে ফেরত আনা এবং তার পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনতেই আমরা ইন্টারপোলে চিঠি পাঠিয়েছিলাম।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রাথমিক অনুসন্ধানে কানাডা, সিঙ্গাপুর ও ভারতের বিভিন্ন শহরে পিকে হালদারের পাচার করা ৬৫০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে। শুধু কানাডার টরন্টোতেই মার্কেট, বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ির শোরুম, চেইন শপসহ প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে ১০০ কোটি, ভারতে ১৫০ কোটি ও আমিরাতে ১০০ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় জালিয়াতি করে চারটি লিজিং কোম্পানি থেকে হাতিয়ে নেয়া পিকে হালদারের হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য-প্রমাণও পেয়েছে দুদক। অবৈধ ক্যাসিনোকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান করতে গিয়ে নাম আসে পিকে হালদারের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।