Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঝুঁকিতে গ্রামীণ জনপদ

রূপগঞ্জে অবৈধ যানের বেপরোয়া চলাচল

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জের রাস্তাঘাট, মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে যত্রতত্র দেখা মেলে শিশু শ্রমিক চালকদের। আবার এসব যান রাস্তায় চলাচলে অবৈধ হলেও ইট ও মালবাহী হিসেবে নছিমন, ভটভটি, অটোরিকশা ও ইছার মাথা নামীয় যানবাহনগুলো দাবড়িয়ে বেড়াতে দেখা গেছে। পাশাপাশি ফিটনেস ও নম্বরবিহীন গাড়ি চালানো নিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবই এর মূল কারণ বলে দাবি স্থানীয়দের।

সূত্র জানায়, বয়সের দিক থেকে অযোগ্য ও অদক্ষ প্রশিক্ষণহীন চালক দিয়ে চালাতে দেখা যায় এসব যান। প্রতিদিন এসব ভারী যান চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট যেমন ধ্বংস হচ্ছে তেমনি কম মজুরিতে খেটে খাওয়া গরীব ঘরের নামে মাত্র ড্রাইভিং জানা শিশু সন্তানদের দিয়ে অনুমোদনহীনভাবেই চালাচ্ছে রূপগঞ্জের রাস্তা-ঘাটে। আবার প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পূর্বাচল উপশহর এলাকায় ইট বালি বহন করছে ইছার মাথা নামক অবৈধ যান। আর এ অবৈধ যান চালাতে দেখা গেছে শিশু শ্রমিকদের। পূর্বাচল উপশহর হাবিবনগর এলাকায় এক ইছার মাথা চালক দাউদপুরের হাবিবুরের সাথে কথা হলে সে জানায়, দেড় বছর যাবৎ ইছার মাথা চালিয়ে রূপগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে সাপ্লাই দিয়েছি। কেউ কোনদিন বাধা দেয়নি।
অপর চালক কেন্দুয়া এলাকার মহসিন জানায়, শীতলক্ষ্যা থেকে বালি ভরে গাউছিয়া এলাকায় সাপ্লাই দেই। মাঝে মধ্যে মুরুব্বিরা পোলাপান বলে বাধা দেয় তবে পুলিশ কোন বাধা দেয়নি। একইভাবে বিরাব এলাকার অটোবাইক চালক আক্তার জানায়, ঘরে কাজ করার মত লোক নেই তাই অটোবাইক শিখে মায়ার বাড়ি থেকে বিরাব, ডাঙ্গা এলাকা দিয়ে চালাচ্ছি। পৌরসভার চাঁদা ছাড়া কাউকে কিছু দিতে হয় না। কেউ কেউ পোলাপান বলে অবহেলা করলেও বাইক চালাতে নিষেধ করেনি।
সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দাউদপুরের রাস্তাঘাটে। একই ইউনিয়নের ৪০টি ইটভাটায় তৈরি ইট বহনের কাজে ব্যবহৃত হয় ইছার মাথা নামীয় ভারী যান। এতে ডেমরা কালীগঞ্জসহ ইউনিয়নের অভ্যন্তরের রাস্তা ঘাট ভেঙে খানা-খন্দে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি রাস্তা এখন প্রায় চলাচল অনুপযোগী। এসব বিষয়ে দাউদপুর এলাকার ইটভাটা মালিক ও যুবলীগ নেতা আবদুস সাত্তার বলেন, দাউদপুরের ইটভাটায় কমখরচে ইট বহনের কাজে ট্রাক্টরকে বিশেষভাবে মালবাহী যান তৈরি করে চালাতে বাধ্য হচ্ছে। অতিরিক্ত খরচ হয় বিধায় ফিটনেসযুক্ত মালবাহী ট্রাক পাওয়া কঠিন। তাছাড়া রাস্তাঘাট ভালো না থাকায় ওইসব গাড়ি এখানে চালাতে চায় না। তাছাড়া ইছার মাথায় খরচ কম থাকায় এ গাড়ি বেশি চলে। তবে বহু ভাটা থেকেই বৈধ ট্রাক দিয়ে ইট বহন শুরু হয়েছে।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, রূপগঞ্জের যত্রতত্র ইছার মাথা, ভটভটি চলার খবর পাই তবে ধরা পড়লে অবশ্যই ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ টিমকে সহযোগিতা করি।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জানান বলেন, রূপগঞ্জের আনাচে কানাচে ইট ভাটাগুলোতেই ইছার মাথার ব্যবহার হচ্ছে শুনেছি। এই অবৈধ যানটি রাস্তা ঘাটের ক্ষতি করে পাশাপাশি অদক্ষ চালক দিয়ে চালায় যা আইনত দন্ডনীয়। এ বছর সবে ইটভাটায় ইট প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছে ভাটা মালিকরা। ফলে পরে প্রয়োজনে আবারও ভ্রামমাণ আদালত পরিচালনা করবো। শিশু শ্রমবন্ধের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে অভিযোগ বা হাতেনাতে পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এসব অনিয়ম রোধে স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রামীণ-জনপদ

১ ডিসেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ