পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামে মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি করার কোন বৈধতা নেই। দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের মতামতের তোয়াক্কা না করে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য স্থাপনের নামে এ দেশকে মূর্তির রাজ্যে পরিণত করতে চায়। কিন্তু মুসলিম দেশকে ভাস্কর্যের দেশ বানানোর চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না। বিভিন্ন ইসলামী দলের সভা সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, বর্তমান ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগ ইসলামের বিরুদ্ধে কিছুই করবেনা নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিলেও ক্ষমতার জোরে ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামে মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি করার কোন বৈধতা না থাকলেও এ দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের মতামতের তোয়াক্কা না করে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য স্থাপনের নামে এ দেশকে মূর্তির রাজ্যে পরিণত করতে চায়। কিন্তু মুসলিম দেশকে ভাস্কর্যের দেশ বানানোর চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না।
গতকাল রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে খেলাফত আন্দোলনের এক পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী ও মাওলানা রুহুল আমীন।
মাওলানা আতাউল্লাহ আরো বলেন, কোন মুসলিম দেশে ভাষ্কর্য থাকলেও ইসলামে সেটা হালাল হওয়ার দলিল নয়। ইসলামে ভাষ্কর্যের বৈধতা থাকলে দুনিয়াতে নবী-রাসুলদের ভাষ্কর্য থাকতো। রাষ্ট্রের টাকা অপচয় করে জনগণও ইসলামের স্বার্থবিরোধী কোন কাজ করতে দিবে না।
ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া মুহাম্মদপুর : ইসলাম বিদ্বেষী একটি মহল দেশের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের সর্বজনশ্রদ্ধেয় দুই ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব মরহুম শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক ও মরহুম সৈয়দ ফজলুল করিম পীর সাহেব চরমোনাই এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও জঘন্য কটূক্তি করে যাচ্ছে। অথচ এ দুই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। দেশ ও ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় তাদের অবদান চির স্মরণীয়। যারা এই দুই ব্যক্তির নামে কুৎসা রটনা করে দেশে সা¤প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে যাচ্ছে তাদের বিষয়ে সরকারকে দ্রæত প্রদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় যে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। গতকাল সকালে মুহাম্মদপুরে জামিয়া মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল আল্লামা আবুল কালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া মুহাম্মদপুরের এর বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফারুক আহমাদ, জামিয়া ইসলামিয়া বায়তুল ফালাহ-এর প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ তালহা, জামিআ ইসলামীয়া আশরাফুল মাদারিস এর মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল, জামিয়া ওয়াহিদিয়া এর প্রিন্সিপাল মাওলানা যোবায়ের, জামিআ রাহমানিয়ার শিক্ষা সচিব মাওলানা আশরাফুজ্জামান, জমিআ ইসলামীয়া বায়তুল ফালাহ এর ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, জামিয়া মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মাদ ফয়সাল, বাইতুল আমান আদাবরহ এর প্রিন্সিপাল মুফতি মাহমুদুর রহমান, আদাবর আহসানুল উলূম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আমির হোসেন, বায়তুল জান্নাতের মুহতামিম মুফতি ফারুক হোসাইন, আন নূর নৈশ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা জুবায়ের মাজাহিরি, মাওলানা অলিউল্লাহ, মাওলানা মোবারক হোসেন ও মুফতি মাসিহুর রহমান।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক। প্রত্যেক নবী ও রাসুল ভাষ্কর্য ও মূর্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমরাও ভাস্কর্য বা মূর্তির বিষয়ে কথা বলছি। সরকারের কল্যাণকামী হিসেবে ভাস্কর্য বা মূর্তির বিষয়ে আলেম উলামারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। কিন্তু এ ঈমানী দায়িত্বকে একটি গোষ্ঠী অন্যখাতে প্রবাহিত করতে আল্লামা মামুনুল হকসহ ইসলামী ব্যক্তিদের ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার দলীয় অংগ সংগঠনরে নেতৃবৃন্দ আলেম উলামা বিশেষ করে আল্লামা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে লাগামহীন, অসন্মাজনক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। যা দেশের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। এধরণের বক্তব্য ও অপতৎপরতা বন্ধে সরকারকে দ্রুত প্রদক্ষেপ নিতে হবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলেই যাবে। এটা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানরে বিরোধী নই। তিনি বাংলাদেশের স্থপতি ও একজন মুসলিম নেতা হিসেবে আমরা তার রূহের মাগফিরাত কামনা করি। একে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পরিণত ভালো বয়ে আনবে না।
এনডিপি: গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) মানবন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে এনডিপি চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের বলেন, বিএসএফ সীমান্তে পাখির মতো বাংলাদেশীদের হত্যা করে যাচ্ছে, অথচ সরকার কোন প্রতিবাদ করছে না। ইসলামী চেতনাবোধ ও সংস্কৃতির উপর একের পর এক আঘাত হানা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ভাষ্কর্যের নামে নারীদের নগ্ন মূর্তি স্থাপন করে মুসলিম সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সার্বিকভাবে দেশে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আমীন, বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের চেয়ারম্যান ডা. মুহাম্মদ মাসুদ হোসেন, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি‘র চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো, সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা ওবায়দুল হক, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিডিপি’র চেয়ারম্যান ডাঃ মনির হোসেন চৌধুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।