পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে ইসলামী শিক্ষা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তকে গভীর চক্রান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষায় ধর্ম শিক্ষা না নেয়ার চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ ধরণের ইসলাম বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত জনগণ বরদাশত করবে না। মতবিনিময় সভা ও বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তকে গভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এসএসসির মত গুরুত্বপূর্ণ একটি পাবলিক পরীক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষা না থাকলে জাতীয়ভাবে তার গুরুত্ব থাকে না। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ধর্ম শিক্ষা পাবলিক পরীক্ষায় গুরুত্বের সাথে নেয়া হয়েছে। তবে কাদের পরামর্শে পাবলিক পরীক্ষা থেকে তা বাদ দেয়া হচ্ছে জাতি তা জানতে চায়। পীর সাহেব চরমোনাই জোর দিয়ে বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় ধর্ম শিক্ষা পূর্বেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। ষড়যন্ত্রকারীদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়া হবে। তিনি অবিলম্বে আগামী ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম শিক্ষা অন্তর্ভূক্তকরণের জোর দাবি জানান। উল্লেখ্য, যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষায় ধর্ম শিক্ষা না নেয়ার চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
গতকাল রোবাবর এক বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আমাদের দেশের মাত্র শতকরা ৮/১০ ভাগ ছেলে-মেয়ে মাদরাসায় পড়ে। বাকি ৯০/৯২ ভাগ পড়ে স্কুলে। শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী যদি মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দেয়া হয় তা হবে আমাদের শিক্ষিত যুব সমাজ ও নতুন প্রজন্মকে ইসলাম থেকে দূরে সরানো গভীর ষড়যন্ত্র। প্রবল ইসলাম বিরোধীতার পরও যখন সারাবিশ্বে ইসলামের জোয়ার শুরু হয়েছে তখন বাংলাদেশে ইসলামবিরোধী শক্তিগুলো দেশ থেকে কৌশলে ইসলামকে উৎখাত করার চক্রান্ত করছে। ঈমানী চেতনায় শাণিত, আল্লাহ ও রাসূলের ভালোবাসায় উজ্জীবিত এ দেশের জনগণ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলাম শিক্ষা বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র যেকোনো মূল্যে রুখে দিবে। তিনি এসব চিন্তা পরিহার করতে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মুসলমানদের বুক যখন ক্ষতবিক্ষত, যখন একটি মহল দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগারে নিয়োজিত। ঠিক তখন এধরণের ইসলামবিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকাই সকলের জন্য কল্যাণকর। তিনি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের সকল দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিন যুগ ধরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকরা কেউ বিনা বেতন আবার কেউ সামান্য বেতনে শিক্ষাসেবা অব্যাহত রেখেছে। বারবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু অসহায় শিক্ষকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি।
বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলন : শিক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যে মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেছেন, মুসলমানের বাংলাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষাকে থেকে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দেয়ার অর্থই হলো মুসলিম ছেলে মেয়েদেরকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে নাস্তিক মুরতাদ, মূর্তি ও ভাস্কর্য পূজারী বানানো। বাংলাদেশে বেশির ভাগ ছেলে মেয়ে স্কুল কলেজে পড়ালেখা করে। তাদেরকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ইসলাম ও কোরআনের শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। কিন্তু তা না করে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ ধরণের কোন ইসলামী বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, ইসলাম শিক্ষা থাকার কারণে ছেলে মেয়েরা কিছুটা হলেও ইসলাম ও নৈতিকতা শিক্ষা করতে পারছে। আল্লাহ রাসুল ও ইসলাম সম্পর্কে পরিচিত হচ্ছে। যদি ইসলাম শিক্ষাকে তুলে দেয়া হয় তাহলে মুসলিম ছেলে মেয়েরা নামে মুসলমান থাকলেও মননে মগজে নাস্তিক হিসেবে গড়ে উঠবে। এই অলি আউলিয়া গাউস কুতুবদের বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রী কেন মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দিতে চাইছেন দেশবাসি তা’ জানতে চায়। শিক্ষামন্ত্রী বক্তব্য মুসলিম জাতিসত্তার প্রতি হুমকি স্বরূপ। অবিলম্বে এ ধরণের ইসলাম বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। মুফতি ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, মুসলিম তৌহিদী জনতা বাংলাদেশের মাটিতে কাউকে ইসলাম বিদ্বেষী কর্ম কান্ড বাস্তবায়ন করতে দেবে না ইনশাআল্লাহ। শিক্ষা মন্ত্রী যদি তার এই ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য থেকে ফিরে না আসেন, প্রয়োজনে দেশের স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে মারকাজুল আজিজ মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় মুফতি ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি ওমর ফারুক,মুফতি রেজাউল করিম, মুফতি তরিকুল ইসলাম, মুফতি ইবরাহিম কাসেমী. মুফতি আব্দুল্লাহ. জনসেবা আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইয়ামিন হোসেন আজমী.মাওলানা আহমদ উল্লাহ ও মাওলানা দেলোয়র হোসেন।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন: বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের (একাংশ) প্রধান আমীরে শরীয়ত আল্লামা জাফরুল্লাহ খান সা¤প্রতিক শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দেয়াার উদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ৯০% মুসলমানের বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী মুখ থেকে এমন বক্তব্য বাংলাদেশের নাগরিকরা কখনো আশা করেনি। ইসলাম শিক্ষা মাধ্যমিক স্তর থেকে বাদ দিয়ে ছেলে মেয়েদেরকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র পরিহার করুন। মনে রাখবেন এটা ভারত. লন্ডন. আমেরিকা কিংবা রাশিয়া নয় এটা ওলি-আউলিয়াদের বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন ইসলামের জন্য। তার দলের নেতা শিক্ষা মন্ত্রী হয়ে কোন বিবেকে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দেয়ার বক্তব্য রাখতে পারেন। জাফরুল্লাহ খান শিক্ষামন্ত্রীকে অনতিবিলম্বে তার বক্তব্য থেকে ফিরে আসার দেশ ও জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। না হয় তৌহিদী জনতা শিক্ষা মন্ত্রীসহ সকল নাস্তিকদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গডড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।