Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাজবাড়ীর গড়াই ও চত্রা নদীর তীব্র ভাঙন

মো. নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

পানি কমে যাওয়ায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার গড়াই ও চত্রা নদীতে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি ও বসতবাড়িসহ বহু স্থাপনা। এছাড়াও ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে দুটি পাকা সড়ক। যার কারণে উপজেলার সাথে অন্তত দশটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অসময়ের এই ভাঙনকে অপরিকল্পিত নদী খননকেই দুশছেন জনপ্রতিনিধিরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া সমাধীনগর পাকা সড়কে গত এক সপ্তাহের ভাঙনে অন্তত ৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে ও পার্শ্ববর্তী জামসাপুর-কোনাগ্রাম পাকা সড়কের আরো অন্তত ৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। যে কারণে এই সড়ক দুটি দিয়ে চলাচলকারী দশটি গ্রামের বাসিন্দারা পরেছেন চরম বিপাকে। এদিকে পানি কমার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা গ্রামেও।
বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা গ্রামের কৃষক মো. বেলাল হোসেন বলেন, সর্বনাশা নদীর ভাঙনে আমার বসতবাড়ি চার বার সরিয়ে আনতে হয়েছে। এখন আর সরানোর জায়গা নেই। এরই মধ্যে আমার ঘরের ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় নদীগর্ভে চলে যাবে বসবাসের শেষ সম্বল টিনের ঘর ও ভিটেমাটি।একই এলাকার বাসিন্দা আছিয়া বেগম বলেন, নদী ভাঙন আমাদের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সব সময় আতঙ্কে কাটছে আমাদের দিন। কখন জানি ঘরবাড়ি সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় সেই চিন্তায় এখন সময় পার করতে হচ্ছে। নারুয়া এলাকার বাসিন্দা শেখ মহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দিনের পর দিন সংশ্লিষ্ট দফতরকে অনুরোধ করেই যাচ্ছি তারা কারো কোনো কথা শুনছেন না। শুধু পরিদর্শন ছাড়া দৃশ্যমান কোনো কাজ হয় না এই এলাকায়। বর্ষা মৌসুমে যখন ভাঙন তীব্র হয় তখন কয়েকটি বালুর বস্তা ফেলেই কাজ সমাপ্ত করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, গত বছরের অপরিকল্পিত নদী খননের কারণেই ভাঙন তীব্র হয়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এই এলাকার হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে। এখনও ভাঙন ঝুঁকিতে আছে বসতবাড়ি, স্কুল, মসজিদ, মন্দিরসহ শত শত স্থাপনা। বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার নদী ভাঙনের বিষয়টি নিয়ে এমপিসহ আমরা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত ছোটাছুটি করেছি। কোনো কাজ হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা বলেন, আমি নতুন যোগদান করার পরই এলাকা পরিদর্শন করে দেখেছি ভাঙনের অবস্থা ভয়াবহ। যে কারণে গুরুত্ব বিবেচনা করে জেলা প্রশাসণসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করেছি। মন্ত্রণালয় কর্তৃক দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাসও পাওয়া গিয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ও চত্রা নদীর ভাঙনের বিষয়ে ব্যাবস্থা নিতে আমরা একটি প্রকল্পের জন্য অনুমোদন চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। যার প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ফরিদপুরের তত্ত্বাবধায়কের নেতৃত্বে একটি দল ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারাও একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে বলে আমরা জানতে পেরেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গড়াই-চত্রা-নদী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ