প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
মৃত্যুদন্ডের ভয়েও ধর্ষক সংযত হচ্ছে না। তাই শুধু আইনের শাসন নয়, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের মাধ্যমে ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্ভব। এ বিষয়ে সন্দেহ নাই, ধর্ষণ আজ মহামারি আকার ধারন করেছে। শিশু ধর্ষণ চলছে, ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। এর প্রতিরোধ দরকার। ধর্ষণ প্রতিরোধের মূল দায়িত্ব রাষ্ট্রের হলেও এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলের দায়িত্ব রয়েছে। গত রবিবার তেঁজগাওস্থ জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) ‘ধর্ষণ প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে’ ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, আইনের শাসনের চাইতে আমি জবাবদিহিতাকে বড় মনে করি। কারণ, জবাবদিহিতা থাকলে আইনও বদল হবে। আসল কথাটি হচ্ছে জনমত। ভরসা কিন্তু এই সংসদে নয়, ভরসা সরকারও নয়, ভরসা হচ্ছে সেই জনমত, যে জনমত সংসদ ও সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। যেখানে থাকতে হবে জবাবদিহিতা। গণতন্ত্রের মূল কথাটিই হলো জবাবদিহিতা। গণতন্ত্র কেবল ভোটের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়না। জনমত তৈরি হবে আন্দোলনের মধ্যেদিয়ে এবং সেক্ষেত্রে মিডিয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে পারে। আজ মিডিয়া যতো শক্তিশালী, অতীতে কখনো মিডিয়া এতো শক্তিশালী ছিলোনা। মিডিয়া যদি এই খবরগুলি তুলে ধরে, জনমত গঠনে সহায়তা করে, তাহলে মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হবে। তিনি আরো বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন কোন ছাত্র সংসদ নেই। সাংস্কৃতিক চর্চা নেই, কোন বিতর্ক নেই, খেলাধূলা নেই। সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা সহ মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে আমাদের ধর্ষণ নামক মহামারি প্রতিরোধ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। সর্বস্তরে ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থনৈতিক বৈষম্য, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার, যৌতুক, নারীর ক্ষমতার অপর্যাপ্ততা, মূল্যবোধের অভাব, ধর্মের ভুল ব্যাখা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের দায়িত্ববোধের অভাব- সর্বোপরি সমাজের সর্বস্তুরে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া ধর্ষণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তিনি বলেন, ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হলেও নানা কারনে ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হবে। সাক্ষ্য আইনের ত্রুটি বিচ্যুতি, ফরেনসিক রিপোর্টের দুর্বলতা, বাদীর আর্থিক সীমাবদ্ধতা, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ধর্ষণের শাস্তি প্রমাণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলে আসামী ধরা পড়ার ভয়ে ধর্ষণের শিকার ব্যাক্তিকে হত্যা করার প্রবণতা বাড়তে পারে। তাই নারীর প্রতি নিপীড়ন বন্ধে শুধু আইন প্রয়োগ করে সম্ভব হবে না। তা প্রতিরোধে আইনের বাস্তবায়নের পাশাপাশি গণজাগরণ তৈরি করতে হবে। প্রতিযোগিতায় তেজগাঁও কলেজকে পরাজিত করে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন, সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি এবং সাংবাদিক সাজেদা পারভিন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।