Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারও চালের দাম বৃদ্ধি

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

ধান কাটার মৌসুমকে সামনে রেখে বাজারে চালের দাম আবারো বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। গত ৪/৫ দিনে মোটা ও চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা। বর্তমান বাজারে ২৮ ও ২৯ ভ্যারাইটির চাল ৪৮ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট ৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাজল লতা ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল ৫৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাংলামতি ৫৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এই নিয়ে গত উৎপাদন মৌসুম থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চালের মূল্য বেড়েছে ১৪ দফা। গত উৎপাদন মৌসুমে ২৮ ও ২৯ ভ্যারাইটির চালের মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ২৯ টাকা। সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। ১০ মাসে চালের মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি ২১ টাকা। সরকার চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কোনই কার্যকরী ভ‚মিকা পালন করতে পারেনি। এই সুযোগে গত ১০ মাসে চাল সিন্ডিকেট চালের মূল্য বাড়িয়ে দেশের সাধারণ মানুষের পকেট থেকে অতিরিক্ত কমবেশি ৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
জানা গেছে, গত ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা সময় থেকেই চালের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তোলার সময় কেজিপ্রতি চালের মূল্য বৃদ্ধি পায় ৫ থেকে ৬ টাকা। তখন খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, চালের দাম বাড়িয়েছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, চালের দাম বাড়িয়েছে আড়তদাররা। আড়তদাররা জানায় তারা চালের দাম বাড়ায়নি বাড়িয়েছে মিলাররা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় সিন্ডিকেটের কারসাজিতে চালের দাম বেড়েছে। কিন্তু তখন সরকার চাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। এরপর ক্রমান্বয়ে চালের দাম থেকে থেকে বেড়ে বেড়ে ২৯ টাকা কেজির চাল ৫০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে দেশে আমন মৌসুমের অগ্রানী ধান কাটা শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে আবার চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। আমন ধান বা নবান্নের মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির কি কারণ তা সরকার খুঁজে বের করছে না। অব্যাহতভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বল্পআয়ের সাধারণ মানুষ ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ১ কেজি চাল কিনতে প্রতিদিন একজন রোজগেরে ব্যক্তি কে অতিরিক্ত ২২ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে। শাকসবজি, মাছ, গোশত ও মসলা কিনতে খরচ হচ্ছে ৪০ টাকা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী একজন মানুষের খাবার বাবদ দৈনিক ব্যয় হয় ৬০ টাকা।
চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দৈনন্দিন খাবার বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৮২ টাকা। এর ওপর শাক সবজির মূল্য বৃদ্ধির কারণে একজন মানুষের দৈনন্দিন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৯২ টাকায়। এই অবস্থায় সমাজের হতদরিদ্র দরিদ্র বিত্তহীন নিম্নবিত্ত মানুষের দৈনন্দিন খাওয়া পড়ায় ব্যাপক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্বল্পআয়ের মানুষেরা জীবিকা নির্বাহের হিমশিম খাচ্ছে। গত ১০ মাসে অব্যহত চালের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হলেও আমন মৌসুমে কৃষকের ঘরে নবান্ন এলে বাজারে চালের দাম কমে যাবে। কিন্তু ধান কাটার মৌসুম চালের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সচেতন ক্রেতারা নবান্নের মৌসুমে চালের মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের জন্য অশনিসঙ্কেত বলে বিবেচনা করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চালের-দাম-বৃদ্ধি

২৩ নভেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ