Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রবল বর্ষণে আলু চাষির সর্বনাশ

মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

চলতি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় আলু বপনে ঝুঁকিয়ে পড়লেও এখন থমকে পড়ছে চাষিরা। এ বছর চড়া দামে বীজ, লাঙ্গল চাষ, শ্রমিক মজুরি থাকা সত্বেও আলু চাষ ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে চাষিদের মধ্যে। গত এক সপ্তাহে উপজেলায় শতকরা পঞ্চাশ ভাগ জমিতে আলু বপন করা হয়। এর মধ্যে গত শুক্রবার দিনে-রাতে প্রবল বৃষ্টি হয়। এতে জমিতে বৃষ্টির পানি আটকিয়ে যায়। 

উপজেলার বাউসিয়া গ্রামের আলী দেওয়ান ও রুহুল আমিন জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টির দরুণ রোপনকৃত জমিগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। হাতে নতুন কোন বীজ নাই যে আবার বপন করব। বীজ কিনে আবার বপন করতে অতিরিক্ত খরচ পড়বে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা। তারা আরো জানান, গত দশ বছরে আলু চাষে আমাদের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বছর ৩/৪ গুণ লাভ হয়েছে। মূলধন ফিরে পেয়েছি। ফলে আমরা নতুন উদ্যমে আলু চাষে নেমে গেছি আরো প্রত্যশা নিয়ে। কিন্তু অকাল বৃষ্টি আমাদের সর্বনাশ করে দিয়েছে। তবে উপজেলায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। কুমারিয়া গ্রামের জালাল মিয়া বলেন- এ বছর প্রতি বিঘায় ৪০ হতে ৪৫ হাজার টাকা খরচ পড়বে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় দুই হাজার তিনশ’ পঞ্চাশ হেক্টর জমি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর ছিল দুই হাজার পচানব্বই হেক্টর জমি। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নাহিদ হাসান বলেন- এ বছর আলুর দাম বেশী পাওয়ায় চাষিদের মাঝে আবাদী জমির পরিমান বেড়েছে। এ দিকে আলু চাষের জন্য চাষিদের মধ্যে টিএসপি সারের সংকট দেখা দিয়েছে। টিএসপির পরিবর্তে ডাই - এ্যমোনিয়াম ফসফেট (ড্যাপ) সার বাজারে সরবরাহ থাকলেও চাষিরা নিতে নারাজ। চাষিদের ফসল উৎপাদন আশানুরুপ হবে বলে আশ্বাস দিয়ে সামান্য পরিমান বিতরণ করছে। বাউসিয়া ইউনিয়নে নিয়যুক্ত বিসিআিইসি ও বিএডিসি ডিলার মেসার্স হিমাকনস্ট্রাকশন জানান, টিএসপির বরাদ্ধ কম। কারণ সরকার ডাই-এ্যামোনিয়া ফসফেট (ড্যাপ) সার কৃষক বা চাষিদের মধ্যে সরবরাহ বেশি করতে চাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর। সূত্র আরো জানা যায়, এ বছর রবিশস্য মৌসুমে উপজেলায় ইউরিয়া ৪০১৫ মে. টন, টিএসপি ২৭৯৩ মে. টন, ড্যাপ ২৭৯৩ মে. টন, ও মটারেট অব পটাশ ২৪৬৮ মে. টন এর চাহিদা রয়ছে। কিন্তু প্রথম বরাদ্ধ পেয়েছে অর্ধেকের কম।
উপজেলা কৃষি অফিস বাকি সারের জন্য জেলা বীজ ও সার মনিটর্নিং কমিটির বরাবর আবেদন করেন। কৃষকদের দাড়গোড়ায় সার সরবরাহের জন্য উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৮টি মূল ডিলার এবং ইউনিয়নে আরো ৯টি সাবডিলার থাকার নিয়ম থাকলেও অনেক ইউনিয়নে তা নাই। ফলে কৃষকরা সার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।
এ দিকে সরকার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে জন্য দুই হাজার তিনশ চল্লিশ জন কৃষককে পূর্ণবাসন এবং সাতশত সত্তর জন কৃষককে প্রনোদনা প্রদান করেন। পূর্ণবাসনের মধ্যে রয়েছে- মসুর, খেসারী, সরিষা, চীনাবাদাম, টমেটো, মরিচ ও সূর্যমুখীর বীজ। আর প্রনোদনার মধ্যে রয়েছে- বোরো, সরিষা, ভূটা, চীনাবাদাম, পেয়াজ মুগ ও গম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রবল-বর্ষণ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ