Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাকিস্তানের তেহরিক-ই-লাব্বায়িক নেতা খাদিম রিজভীর ইন্তেকাল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২০, ৯:১৮ পিএম

পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতা তেহরিক-ই-লাব্বায়িক পাকিস্তান (টিএলপি)এর প্রতিষ্ঠাতা খাদিম হুসেইন রিজভী আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। টিএলপি’র সিনিয়র নেতা পীর ইজাজ আশরাফি জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ থাকা ৫৪ বছর বয়সী রিজভীর মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে প্রাকৃতিক কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্ম অবমাননা ইস্যুতে আন্দোলনের জন্য দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে পরিচিত ছিলেন এই কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া খাদিম হুসেইন রিজভীর প্রতিষ্ঠিত ইসলামি দল তেহরিক-ই-লাব্বায়িক পাকিস্তান (টিএলপি) দেশটির ব্লাসফেমি আইনের কট্টর সমর্থক। মহানবী (সা) কার্টুন প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে সাম্প্রতিক ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিলো দলটি। ওই কার্টুন প্রকাশ করায় ফরাসি পণ্য বর্জন ও দেশটির রাষ্ট্রদূতকে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বেশ কিছু দিন ইসলামাবাদের সড়ক অবরোধ করে রাখে টিএলপি’র নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংর্ঘষের পর ফরাসি পণ্য বর্জনে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে গত সপ্তাহে ওই অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় টিএলপি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ওই চুক্তির কথা স্বীকার করেনি পাকিস্তান সরকার।
গত সপ্তাহে ইসলামাবাদের ওই বিক্ষোভে বেশ কয়েকবারই ভাষণ দিয়েছেন খাদিম রিজভী। তবে অবরোধ চলার পুরো সময় জুড়ে তিনি সেখানে থাকেননি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাহোরে থাকা অবস্থায় তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হতে থাকে বলে জানান টিএলপি নেতা আশরাফি। ২০০৬ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতেন টিএলপি প্রতিষ্ঠাতা রিজভী। শনিবার লাহোরের একটি জাতীয় স্মৃতিসৌধে রিজভীর জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে তার হাজার হাজার অনুসারী যোগ দেবেন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সুন্নি মতালম্বী মুসলমান হলেও এই সংক্রান্ত ইস্যুতে খাদিম আহমেদ রিজভীর বেশি সক্রিয়তা কখনওই দেখা যায়নি। বরং ইসলাম ধর্ম অবমাননা ইস্যুতে বড় বড় বিক্ষোভের আয়োজন করে রাজপথে শক্তি প্রদর্শনে আগ্রহী থেকেছে তার প্রতিষ্ঠিত দল টিএলপি। ২০১১ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মুমতাজ কাদরির ফাঁসির প্রতিবাদে বড় বিক্ষোভ গড়ে তুলে দেশজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি পায় দলটি। ধর্ম অবমাননা আইনের বিরুদ্ধে কথা বলায় পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসিরকে হত্যার দায়ে ওই কর্মকর্তাকে ফাঁসির দণ্ড দেয় আদালত। এছাড়া ২০১৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কেন্দ্রীয় রাজধানী কয়েক সপ্তাহ ধরে অচল করে দিয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করে দলটি। তবে গত বছর ইসলাম ধর্ম অবমাননায় অভিযুক্ত খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবির মুক্তির পর সহিংস বিক্ষোভে জড়িত থাকার দায়ে টিএলপি’র বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা গ্রেফতার হয়। সূত্র : আল জাজিরা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ