নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
৪ জুলাই ১৯৯৩। স্রেফ একটি দিনক্ষণ নয়। আস্ত একটি ইতিহাস। কোপা আমেরিকার ফাইনালে গ্রাব্রিয়েল বাতিস্তুতার জোড়া গোলে মেক্সিকোকে ২-১ ব্যবধানে হারায় আর্জেন্টিনা। সেই সঙ্গে আসরের সর্বোচ্চ ১৪তম শিরোপা পকেটে পুরে নেয় দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম সফল দলটি। কিন্তু সময়ের বিবর্তণে আজ আমরা ১৯৯৩ থেকে ২৭ বছর পাড়ি দিয়ে অবস্থান করছি ২০২০ সালে। অথচ ভাবতেই অবাক লাগে, এই দীর্ঘ সময়ে একবারও শিরোপার দেখা পায়নি এই প্রবল পরাক্রমশালী দলটি। দিনের হিসেবে দলটির আজ পূর্ণ হলো শিরোপাবিহীন ১০ হাজারতম দিন।
১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকা জয়ের পর কেটে গেছে ২৭ বছর। এ সময়ে হওয়া ১৭টি টুর্নামেন্টের একটিতেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি ম্যারাডোনা-মেসির আর্জেন্টিনা। যে দেশটার ঝুলিতে রয়েছে ১৪টি কোপা আমেরিকার শিরোপা দুটি বিশ্বকাপ শিরোপা সেই দেশটাই কি-না এখন শিরোপা খরায় ভুগছে। কবে। গত বিশ্বকাপে ট্রফি জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা কিন্তু অধরা ট্রফি জয়ের স্বপ্ন মরীচিকার মতো মিইয়ে গেছে। গত ২৭ বছরে ম্যারাডোনার উত্তরসূরীদের ব্যর্থতার ইতিহাসে চোখ বুলিয়ে নিন।
১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ
১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলার পর এই বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার পতাকা ছিল ম্যারাডোনার হাতে। কিন্তু গ্রুপ পর্বে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার হতে হয় তাকে। আর্জেন্টিনাও তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করে দ্বিতীয় রাউন্ডে রোমানিয়ার কাছে ৩-২ ব্যবধানে হেরে। সে বছর ১১তম হয়েছিল তারা।
১৯৯৫ সালের কনফেডারেশনস কাপ
ড্যানিয়েল পাসারেল্লার দলে তখন জেনেত্তি, রবার্তো আয়ালা, মার্সেলো গালার্দোর মোট তারকা থাকলেও সৌদি আরবে হওয়া সেই টুর্নামেন্টে ডেনমার্কের কাছে ২-০ ব্যবধানে ফাইনালে হারে আর্জেন্টিনা।
১৯৯৫ কোপা আমেরিকা
উরুগুয়েতে হওয়া সেই টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের সঙ্গে ২-২ ব্যবধানে ড্র করে পেনাল্টি শুটআউটে ৪-২ ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে ব্রাজিলের তুলিওর হাত দিয়ে ডি বক্সে বল রিসিভ করার ঘটনা এখনো ফুটবল বিশ্বে অনেক আলোচিত।
১৯৯৭ কোপা আমেরিকা
বলিভিয়াতে হওয়া এই টুর্নামেন্টেও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা। পেরুর সঙ্গে তারা ২-১ ব্যবধানে হেরে স্বপ্ন জলাঞ্জলি দেয়।
১৯৯৮ ফুটবল বিশ্বকাপ
ফ্রান্সে হওয়া এই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের কাছে ১১৯ মিনিটে গোল খেয়ে ২-১ ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাতিস্তুতাদের আর্জেন্টিনা।
২০০১ কোপা আমেরিকা
কলম্বিয়াতে হওয়া এই টুর্নামেন্টে নিরাপত্তার কারণে অংশ নেয়নি আর্জেন্টিনা। মূলত কলম্বিয়ায় আর্জেন্টিনার দূতাবাসকে চিঠি দিয়ে মৃত্যুর হুমকি দেওয়ার কারণে খেলতে যায়নি আর্জেন্টিনা।
২০০২ ফুটবল বিশ্বকাপ
প্রথমবারের মতো এশিয়াতে হওয়া এই বিশ্বকাপে ফর্মে তুঙ্গে থাকা আর্জেন্টিনা দল এসেছিল শিরোপা জয় করতে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে মার্সেলো বিয়েলসার আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়, যা এখন পর্যন্ত এই শতাব্দীতে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স।
২০০৪ কোপা আমেরিকা
পেরুতে হওয়া এই টুর্নামেন্টের প্রতিটা ম্যাচেই দাপট দেখিয়ে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে এক পর্যায়ে ২-১ ব্যবধানে এগিয়েও ছিল তারা। কিন্তু আদ্রিয়ানো সমতায় ফেরায় ব্রাজিলকে এবং শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুটআউটে ব্রাজিল জয়লাভ করে।
২০০৫ কনফেডারেশন্স কাপ
জার্মানির মাটিতে হওয়া টুর্নামেন্টে মেক্সিকোকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে হোসে পেকারম্যানের আর্জেন্টিনা। কিন্তু সেলেসাওদের বিপক্ষে আর পেরে ওঠেনি তারা। ৪-১ গোলের লজ্জার হার নিয়ে শিরোপা শূন্যই থাকতে হয় তাদের।
২০০৬ ফুটবল বিশ্বকাপ
সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার ৬-০ গোলের জয় অনেক আশা জাগালেও স্বাগতিক জার্মানির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ফর্মে থাকা মেসিকে বসিয়ে রেখে পেনাল্টি শুটআউটে হারের মুখ দেখতে হয় হোসে পেকারম্যানের আর্জেন্টিনাকে।
২০০৭ কোপা আমেরিকা
ভেনেজুয়েলায় হওয়া এই টুর্নামেন্টে রিকুয়েলমে, ভেরন, মেসি, তেভেজ, ক্রেসপোকে নিয়ে গড়া আর্জেন্টিনা ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে বিদায় নেয়।
২০১০ ফুটবল বিশ্বকাপ
প্রথমবারের মতো আফ্রিকায় হওয়া এই বিশ্বকাপে ডিয়েগো ম্যারাডোনার অধীনে অদম্য মানসিকতা নিয়ে খেলতে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু আবারো কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪-০ ব্যবধানে হেরে টুর্নামেণ্ট থেকে বিদায় নেয়।
২০১১ কোপা আমেরিকা
নিজ দেশে হওয়া এই টুর্নামেন্টে সুযোগ ছিল আর্জেন্টিনার সামনে ট্রফি জয়ের। কিন্তু মেসির আর্জেন্টিনাকে কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ট্রফিই জিতে নেয় উরুগুয়ে।
২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপ
গেল কয়েক দশকের ভেতর এবারই সবচেয়ে ভালো খেলে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু শেষ সময়ে মারিও গোতসের গোলে জার্মানির কাছে ১-০ ব্যবধানে হারলে আবারো বিশ্বকাপ ব্যর্থতা ফুটে ওঠে আলেহান্দ্রো সাবেলার আর্জেন্টিনা দলের।
২০১৫ কোপা আমেরিকা
চিলিতে হওয়া এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। সেখানে ক্লদিও ব্রাভোর চিলির কাছে পেনাল্টি শুটআউটে হেরে বিদায় নিতে হয় টাটা মার্টিনোর আর্জেন্টিনাকে।
২০১৬ কোপা আমেরিকা
শতবর্ষী কোপা আমেরিকাতেও ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। এবারও প্রতিপক্ষ সেই চিলি। আবারো সেই পেনাল্টি শুট আউটে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় আর্জেন্টাইনদের। পেনাল্টি মিস করেছিলেন মেসি নিজেই।
২০১৮ ফুটবল বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফেবারিট তকমা পেয়ে আসর শুরু করে দলটি। গ্রুপ পর্ব কোনরকম পার করে শেষ ষোলর দৌড়ে ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে আসর থেকে যথারীতি বিদায় নেয় মেসির দল।
২০১৯ কোপা আমেরিকা
গত বছর ব্রাজিলের মাঠে অনুষ্ঠিত আসরে সেমিফািইনাল পর্যন্ত দিয়ে দম ফুরিয়ে যায় মেসির দলের। স্বাগতিকদের বিপক্ষে হেরে আবারও শিরোপা অধরাই থেকে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।