বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোর থেকে রেবা রহমান : যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেশসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। পাসের হার হয়েছে ৮৩ দশমিক ৪২। গতবার বোর্ডে পাসের হার ছিল ৪৬ দশমিক ৫৯। গতবারের ফলাফল বিপর্যয়কে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করতে সক্ষম হয়েছে বোর্ডটির পরীক্ষার্থীরা।
বোর্ড সূত্র জানায়, যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেছে ১ লাখ ৮ হাজার ৯২৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৫৮৬ জন। গত বছর এই বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ২৭০ জন পাস করেছিল ৫৩ হাজার ২৩৪ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ হাজার ৯৪৫ জন। শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, গতবারের মত রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকা, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ামুখি হওয়া, শিক্ষকদের কড়া নজরদারি এবং নিয়মিত তদারকির কারণে এমন ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে।
এ বছর যশোর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৭ হাজার ২৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪ হাজার ৮৪৯ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ০৪। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৩৫২ জন। মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৮৩ হাজার ৫৯ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৬৮ হাজার ১৫৮ জন। পাসের হার ৮২ দশমিক ০। এই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০৩ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ৩০ হাজার ২২২ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ২৫ হাজার ৯২২ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ২৮। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৩১ জন ছাত্র ছাত্রী।
যশোর বোর্ড সার্বিক ফলাফলে এবছর দেশের অন্যান্য বোর্ডের মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। গতবছর ব্যাপক ফল বিপর্যয়ে পড়ে অন্যান্য বোর্ডের থেকেও অনেক পিছিয়ে ছিল যশোর। সিংহভাগ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণ হয়েছিল। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গতবারের ফল বিপর্যয়ের কারণে তারা বিষয়টি আমলে নিয়ে এবার কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সেইসাথে শিক্ষকদের সহযোগিতা ও অভিভাবকদের দেখভালের কারণে ভাল ফলাফল হয়েছে।
যশোর ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের অধ্যক্ষ জে এম ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন, গত বছর ফলাফল অনেক খারাপ হওয়ায় তারা নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ও পরিকল্পনামাফিক পাঠদান এবং তদারকি করেন। পাশাপাশি বোর্ড কর্মকর্তারাও নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ রেখে পরিদর্শন ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা ও পরীক্ষায় মনোযোগ দিতে পেরেছে।
ফল বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা ছাত্রদের মধ্যে ছিল না। এজন্য তারা লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পেরেছে। স্থিতিশীলতা থাকায় পরীক্ষায়ও কোনো বিঘœ ঘটেনি। আর গতবারের ফল বিপর্যয়ের কারণে শিক্ষার্থীরা এবার পড়াশোনার প্রতি কঠোর মনোযোগী ছিল। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের প্রতি কড়া নজরদারি রেখেছেন। এর পাশাপাশি বোর্ড কর্মকর্তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে তাদের সমস্যা সঙ্কট উত্তরণে কাজ করেছেন। শিক্ষার্থীদের মূল পাঠ্যবইয়ে ফিরিয়ে আনার কারণেও এবার ভাল ফলাফল হয়েছে।
যশোর বোর্ডের শীর্ষে খুলনা, তলানিতে কুষ্টিয়া
যশোর বোর্ডের এইচএসসি ফলাফল বিচারে বোর্ড শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে খুলনা জেলা। আর দশ জেলার মধ্যে তলানিতে রয়েছে কুষ্টিয়া জেলা। পাসের হারের ভিত্তিতে যশোর শিক্ষাবোর্ডের তালিকায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলা থেকে ৯৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২২ হাজার ৮৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৯ হাজার ৪১৫ জন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৯০। পাসের হারের দিক থেকে তারা শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। আর সবচেয়ে নিচে থাকা কুষ্টিয়া জেলার পাসের হার ৭৩ দশমিক ১৮। এই জেলার ৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪ হাজার ২৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১০ হাজার ৪১৬ জন।
এছাড়া সাতক্ষীরা জেলার ৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৪ হাজার ৯৪৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৩ হাজার ৬৪ জন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪০। যশোর জেলার ১১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৪ হাজার ১৩৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ২০ হাজার ৫২৫ জন, পাসের হার ৮৫ দশমিক ০৫। ঝিনাইদহ জেলার ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭ হাজার ৩২৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৪ হাজার ৬৫৫ জন, পাসের হার ৮৪ দশমিক ৫৭। মেহেরপুর জেলার ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪ হাজার ৪১৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩ হাজার ৬৫৪ জন, পাসের হার ৮২ দশমিক ৮০। মাগুরা জেলার ৩৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮ হাজার ৫০৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৭ হাজার ১১ জন, পাসের হার ৮২ দশমিক ৪৪। নড়াইল জেলার ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬ হাজার ৯৫৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫ হাজার ৬৮৪ জন, পাসের হার ৮১ দশমিক ৭৫। বাগেরহাট জেলার ৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৭ হাজার ৫৯৭ জন, পাসের হার ৮১ দশমিক ৪৯। চুয়াডাঙ্গা জেলার ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮ হাজার ৬৪৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৬ হাজার ৯০৮ জন, পাসের হার ৭৯ দশমিক ৮৭।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।