পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পুরো সিলেট জেলা এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ২০ লাখের মতো গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন। আগুনের ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-এর সোবহানীঘাট ও কালীঘাটের ১১ কেভি ফিডারের জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণকাজের জন্য আজ শনিবার সিলেট শহরের ২০টি এলাকায় ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে পিডিবির ৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বেলা ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সিলেট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা যিশু তালুকদার ইনকিলাবকে বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, গতকাল সকাল ১১টা ২ মিনিটে ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ ট্রান্সফরমারে আগুন লেগে যায়। এই ট্রান্সফরমারটি দিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। সেখান থেকে আমাদের উপকেন্দ্রের ১৩২/৩৩ কেভি একটি ট্রান্সফরমারে আগুন লেগে যায়। বড় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ওই উপকেন্দ্রের চারটি ট্রন্সফরমারে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে প্রধান প্রকৌশলী ইকবাল আজমের নেতৃত্বে চার সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবে।
পিজিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের কুমারগাও উপকেন্দ্র থেকে ছাতক, সুনামগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে কুমারগাও বন্ধ করে দেওয়ার কারণে ছাতক, সুনামগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার এলাকার সাবস্টেশনগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কুমারগাও উপকেন্দ্রে চারটি ১৩২/৩৩ কেভি একটি ট্রান্সফরমার রয়েছে। এরমধ্যে একটি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেলেও বাকি তিনটি ভালো আছে বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। এখন উপকেন্দ্রের অন্য তিনটি ট্রান্সফরমার পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সেগুলো ঠিক থাকলে বিকাল নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।
এদিকে উপকেন্দ্রটিতে আগুন লাগার পর প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিস জানায়, মোট ৫টি ইউনিট কাজ করছে। উপকেন্দ্রে থাকা ট্রান্সফরমারের তেলের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে বলেও তারা জানায়। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) পরিচালক জনসংযোগ সাইফুল হাসান চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, উপকেন্দ্রের মাধ্যমে পিডিবি দুইটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। একটি ২২৫ মেগাওয়াট, আরেকটি ২০ মেগাওয়াট। উপকেন্দ্রের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এলেও ট্রান্সফরমার, সঞ্চালন লাইনসহ উপকেন্দ্রের অনেক কিছু পুড়ে যাওয়ায় সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না আপাতত। হয়তো আজ শনিবার সমধান হতে পারে।
সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোকাম্মেল হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, ইতোমধ্যে দুটি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ সরহরাহ বন্ধ রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও আমাদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এটি মূলত জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইন। আগুন লাগার কারণে জাতীয় গ্রিডেও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হবে। এই মুহূর্তে ২০ লাখের মত গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন। মোকাম্মেল হোসেন বলেন, সাব স্টেশনে অনেকগুলো প্যানেল আছে। কী কারণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ একটি দল। বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন। তবে বিকালের আগে কোনও ক্রমেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে পিজিসিবির সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। পাশাপাশি ঢাকা থেকেও টিম সিলেটে আসছে। এছাড়া জনসাধারণ যাতে বিক্ষুব্ধ না হয়ে মাঠে নামেন, এজন্য মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন মহানগর এলাকার লোকজন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও হাসপাতালে রোগীরাও পড়েছেন বিপাকে। সেসঙ্গে বিদ্যুৎ না থাকায় অফিস আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিলেট নগরের মীরের ময়দান এলাকার সুমন আহমদ বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয়ের কারণে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছি। কখন বিদ্যুৎ আসবে, সে আশায় প্রহর গুনছি,বলেন তিনি। নগেরের জিন্দাবাজার এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় অফিসিয়াল কাজে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কম্পিউটার বন্ধ। মোবাইল মোফানেরও চার্জ চলে যাচ্ছে। ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট পাঠানো যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।