Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষি বিলের প্রতিবাদেই বরোদায় বিজেপির হার?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ৮:০৫ পিএম

কংগ্রেস বরোদা উপনির্বাচনে তাদের বিজয়ের সাথে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকারের আনা কৃষি বিলের বিরুদ্ধে রাজ্যের কৃষকদের বিক্ষোভের যোগসূত্র আছে বলে মনে করছে। তবে, ভারতীয় জনতা পার্টির হরিয়ানা প্রধান ওপি ধনকর বলেন, ‘কংগ্রেস নেতারা মিথ্যাবাদী, কৃষি বিল বরোদা নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলেনি।’

কংগ্রেসের স্থায়ী বিধায়ক শ্রী কৃষ্ণ হুদা যিনি ২০০৯ সাল থেকে তিনবার এই আসনে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তার মৃত্যুর পরেও সেখানে বিজেপির হারে ‘কৃষি বিল’ এর প্রশ্নটি উঠে এসেছে। ধনকর বলেন, ‘কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে এই নির্বাচনকেন্দ্রটিতে জিতে এসেছে। এবারও তারা কেবল এটি ধরে রেখেছে। এটি কোন বিজয় নয়।’ অন্যদিকে কংগ্রেস তাদের জয়ের সাথে কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি সংস্কারকে কেন্দ্র করে রাজ্যের কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান অশান্তির যোগ রয়েছে বলে মনে করছে। পাঞ্জাবের মতো, হরিয়ানায় কৃষকরাও এই বিলের বিরুদ্ধে দুই মাস ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন। তাদের আশঙ্কা, এই বিল এমএসপি ভিত্তিক ক্রয় মডেলকে দুর্বল করবে এবং কৃষি উত্পাদন বাজার কমিটিগুলো (এপিএমসি) বাতিল করবে।

এই প্রতিবাদের মাঝামাঝি সময়েই হরিয়ানার বরোদায় উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাতে বিজেপি এবং জননায়ক জনতা পার্টির (জেজেপি) জোট দশ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেসের প্রার্থী ইন্দু রাজ নারওয়ালের হেরেছে। বিজেপি জোটের প্রার্থী ছিলেন যোগেশ্বর দত্ত একজন বিখ্যাত অলিম্পিয়ান কুস্তিগীর এবং জেজেপি’কে এখন যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই দুশায়ন্ত চৌতলাও বিশিষ্ট কৃষক নেতা চৌধুরী দেবী লালের পরিবারের সদস্য।

কংগ্রেস বিধায়ক শ্রী কৃষণ হুডার মৃত্যুর পর গত ৩ নভেম্বর এই আসনে উপনির্বাচন হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ভুপিন্দর সিং হুডার গড় বলে পরিচিত বরোদা কেন্দ্রে পদ্মফুল ফোটানো সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু বিজেপি সাবেক অলিম্পিয়ান যোগেশ্বর দত্তকে টিকিট দিয়ে এই কেন্দ্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। যোগেশ্বরের জন্য ববিতা ফোগাট থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার পর্যন্ত নির্বাচনী সভা-মিছিল করেন। তবে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি ওম প্রকাশ ধানকর টুইট করে জানিয়েছেন, ‘আগেও বরোদা আসন কংগ্রেসের ছিল। আমরা সুযোগ পেয়েও জিততে ব্যর্থ। কংগ্রেসের হাতেই থাকল এই আসন। আমরা জনমত মেনে নিচ্ছি।’

হরিয়ানা কংগ্রেসের প্রধান কুমারী সেলজা গণমাধ্যমে দেয়া বিবৃতিতে ঘোষণা করেছিলেন, ‘জনগণের এই রায় কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’ তিনি বলেন, ‘ফলাফল প্রমাণ করেছে যে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় ক্ষেত্রেই বিজেপি সরকারের কৃষিক্ষেত্র বিরোধী নীতিতে মানুষ বিরক্ত ‘কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার দাবি যারা করেছে তারাও আপস করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিজেপি নেতারা বলেছেন যে, এই আইনগুলি কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান করবে কিন্তু কেউ কীভাবে তা ঘটবে তা ব্যাখ্যা করছে না। তারা যদি কৃষকদের উন্নয়নে এত আগ্রহী হয় তবে তারা এমএসপি সিস্টেমকে বাধ্যতামূলক করতে পারে না কেন?’

এ বিষয়ে চন্ডীগড় ভিত্তিক পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় রাজনীতির একজন অধ্যাপক আশুতোষ কুমার বলেন, ‘আগে যেই আসনটি দখল করুক না কেন, ক্ষমতায় থাকা দলটির সবসময়ই উপনির্বাচনে অতিরিক্ত সুবিধা রয়েছে। ভোটাররা রায় প্রদানের দিকে ঝুঁকছেন কারণ তারা বিশ্বাস করে বিজেপি’র বিধায়ক তাদের এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ নিশ্চিত করতে পারবেন না।’ তিনি বলেন, ‘তবে বরোদা আসনের লোকেরা ক্ষমতাসীন সরকার দ্বারা লম্বা প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও যদি কংগ্রেসকে এই আসনটিতে ধরে রাখে, তবে বার্তাটি পরিষ্কার যে, কেন্দ্রের খামার বিলের পরিপ্রেক্ষিতে হরিয়ানায় গ্রামাঞ্চলে অবশ্যই অশান্তি রয়েছে।’ সূত্র: দ্য ওয়্যার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ